ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

সময় বাড়ালেও যেতে পারছেন না ৯৯৩ হজযাত্রী

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২১ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৭
সময় বাড়ালেও যেতে পারছেন না ৯৯৩ হজযাত্রী হজক্যাম্প থেকে বিমানবন্দরে যাচ্ছেন হজযাত্রীরা- ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: হজযাত্রীদের ভিসা আবেদনের জন্য সৌদি দূতাবাসের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হয়েছে ১৭ আগস্ট। এরপর ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বিশেষ আবেদনের প্রেক্ষিতে সৌদি দূতাবাস থেকে আরও তিনদিন সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়। 

সেই হিসেবে ভিসা আবেদনের সময় শেষ হয়েছে রোববার (২০ আগস্ট)। আর ভিসা আবেদন শেষে দেখা গেছে, ৯৯৩ জন হজযাত্রী এবার হজের জন্য ভিসার আবেদনই করতে পারেনি।

কিন্তু তাদের ভিসা আবেদনের সুবর্ণ সুযোগ ছিলো।
 

হজ অফিসের তথ্য মতে, সোমবার (২১ আগস্ট) সকাল ৯টায় দেখা যায় রোববার আবেদন করেছে ১ লাখ ২৬ হাজার ২০৫ জন। অপরদিকে সৌদি সরকারের সঙ্গে এবার হজযাত্রীর কোটার সংখ্যা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় কোটার সংখ্যা ৪ হাজার ২শ জন আর বেসরকারিভাবে হজযাত্রীর সংখ্যা ১ লাখ ২২ হাজার ৯৯৮জন। সুতরাং কোটার হিসাব অনুযায়ী এবার ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ হন হজযাত্রী হজে যাওয়ার সুযোগ পেলেও  ৯৯৩ জন হজযাত্রী ভিসা না পাওয়ায় এবার হজ করতে পারবেন না।
 

এদিকে বিমানের তথ্য মতে, সোমবার পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমানে ৪৪ হাজার ৬৬৬ জন ও সৌদি এয়ারলাইন্সে ৪৬ হাজার ১৫৬ জন হজযাত্রী সৌদি আরব গমন করেছেন। অর্থাৎ ৯০ হাজার ৮২২ জন হজযাত্রী সৌদি পৌঁছেছেন। এছাড়া ভিসা নিয়ে ঢাকায় রয়েছেন আরও ৩৫ হাজার ৮৮৩ হজযাত্রী। তবে বাংলাদেশ বিমান ২৬ আগস্ট পর্যন্ত হজযাত্রী পরিবহন করবে। আর ২৬ আগস্ট পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন করলে প্রায় ২ হাজার যাত্রী বাংলাদেশ বিমান নিতে পারবে না। অপরদিকে সৌদি এয়ারলাইন্স ২৮ তারিখ পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন করলে তারাও প্রায় ২ হাজার যাত্রী নিতে পারবে বলে জানা গেছে। ফলে সময় না বাড়ালে প্রায় ৪ হাজার হজযাত্রী ভিসা ও পাসপোর্ট পাওয়ার পরও হজ করতে পারবে না।
 
আবার বাংলাদেশ বিমান বলছে, যদি আরও ২দিন সময় বাড়িয়ে দেয় তাহলে যে হজ যাত্রা নিয়ে যে শঙ্কায় আছে সেটা থাকবে না। কিন্তু ইতোমধ্যে বাংলাদেশ বিমানের পক্ষ থেকে সৌদি সরকারকে আরও দুই দিনের সময় চেয়ে আবেদন করা হলেও সেই আবেদনের কোনো বার্তা সোমবার পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। সুতরাং নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে যাত্রী পরিবহন নিয়ে বিপাকে পড়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।  

অপরদিকে বিমান ২৪ জুলাই থেকে হজযাত্রী পরিবহন শুরু করে। এরপর যাত্রী স্বল্পতার কারণে তাদের ২৪টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। যার কারণে ১৪ হাজার ৭৪২ হজযাত্রী যেতে পারেনি। আর এতে বিমানের লোকসান হয়েছে ১৮ কোটি ২৮ লাখ ৮ হাজার টাকা। কেননা একটি ফ্লাইট বাতিল হলে সৌদি সরকারকে ২৫ হাজার রিয়াল জরিমানা দিতে হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ বিমান ফ্লাইট গিয়েছে ১২৫টি আর সৌদি এয়ার লাইন্সের ফ্লাইট গিয়েছে ১২৯টি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিমানের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাকিল মেরাজ বাংলানিউজকে বলেন, হাব ও হজ এজেন্সিগুলো যাত্রী দিতে না পারায় তাদের ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে। এমনকি প্রতি ফ্লাইটে যাত্রীর ঘাটতি রয়েছে। এরপরও হাজীদের কথা বিবেচনা করে বিমান লোকসান দিচ্ছে। এখানে হাব ও হজ এজেন্সির গাফিলতার কারণে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।     
 
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অফিসের পরিচালক সা‌ইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এবার সুযোগ থাকার পরও ৯৯৩ জন হজ করতে পারবেন না। কেননা তারা ভিসা আবেদনের সুযোগ পাননি। যদিও হাজীরা বলছেন, হজ এজেন্সিগুলোর কাছে তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। যার কারণে তারা এবার হজ করা থেকে বঞ্চিত হবেন। তবে কোনো হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে যদি কোনো হজযাত্রী অভিযোগ করেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

অন্যদিকে নির্ধারিত ফ্লাইটে বিমানের আসন সংকটের কারণে প্রায় ৪ হাজার হজযাত্রী এবার যেতে পারবে না। যা নিয়েও উদ্বিগ্ন মন্ত্রণালয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০১১ ঘণ্টা, আগস্ট ২১,২০১৭
এসজে/বিএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।