সূত্র জানায়, ভারতের কেন্দ্রীয় রেল বোর্ডের প্রয়োজনীয় অনুমতি না পাওয়ার কারণেই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে কলকাতা-খুলনা যাত্রীবাহী মৈত্রী ট্রেন চলাচল।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, চলতি বছরের পয়লা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল) থেকে খুলনা-কলকাতার মধ্যে নতুন ওই ট্রেনটির চলাচল শুরু হওয়ার কথা ছিল।
সূত্রের খবর, নিরাপত্তার কারণেই মেলেনি সবুজ সংকেত। রেল বোর্ড সদস্যরা জানিয়েছেন, পরিপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা না করে ‘সোনার তরী’ এক্সপ্রেস চলাচলের অনুমতি দেবে না বোর্ড।
তাছাড়া পরিকাঠামোর সামান্য কিছু ত্রুটি এখনও রয়ে গেছে। যাত্রা শুরুর আগে সেটাও ঠিক করে নিতে চায় ভারতীয় রেল। যাত্রীবাহী ট্রেনই নয়, খুলনা থেকে কলকাতা পর্যন্ত কন্টেইনার সার্ভিস (মালগাড়ি) চালানোর যে পরিকল্পনা ছিল, তারও অনুমতি আসেনি।
কলকাতা পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে দু’দেশের মধ্যে নতুন ট্রেনটি চালানোর বিষয় নিয়ে ফাইল পাঠানো হয়েছিল নয়াদিল্লির রেল বোর্ডে। জুলাই মাসে সেই ফাইল ফেরত যায়। ফাইলে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ কোনো কিছুই লেখা না থাকায় হতাশ হন কলকাতার রেল কর্মকর্তারা।
সোমবার ( ২১ আগস্ট) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ রেলওয়ের এক’জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, এবার ‘সোনার তরী’ এক্সপ্রেস চলাচলের জট ছাড়াতে ভারত-বাংলাদেশের রেল কর্মকর্তাদের বৈঠক বসছে নয়াদিল্লিতে। এ বৈঠক চলবে ১২ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
ব্রিটিশ শাসনামলে শুরু হয়ে পাকিস্তান আমলেও পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে খুলনা-কলকাতা যাত্রী ট্রেন চলাচল করতো। বরিশাল থেকেই যাত্রীরা স্টিমার ও রেলের কেটে নিতে পারতেন। ইমিগ্রেশন-কাস্টমস সারা হতো রেলের মধ্যেই। সীমান্তে বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হতো না।
১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের কারণে খুলনা-কলকাতা যাত্রী ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শেষে পাকিস্তানের বন্দি সৈন্যদের বড় একটি অংশকে ভারতে নেওয়া হয়েছিল।
এরপর দু’বাংলার মানুষের দীর্ঘদিনের চাহিদার কথা মনে রেখে ২০০১ সালে দু’দেশের রেল মন্ত্রণালয় আলোচনার পরে পেট্রাপোল ও বেনাপোলের লাইনটি ফের সংযুক্ত করে। রেল চলাচলের পরীক্ষা দেখতে বেনাপোল-পেট্রাপোলে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও ভারতের রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তখন থেকেই এ পথে ট্রেন চলাচলের বিষয়ে আলোচনা চলেছে। গত বছর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরে ট্রেন চলাচল বিষয়ে দুই দেশ সম্মত হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি বছরের এপ্রিলে নয়াদিল্লি সফরকালে ‘সোনার তরী’ এক্সপ্রেস চলাচলের আর একপ্রস্ত কথা হয়। ঠিক হয়, এ বছরেই ট্রেন চলাচল শুরু হবে।
উভয় প্রান্ত থেকে পরীক্ষামূলকভাবে দু’টি ট্রেনও চলাচলও করে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৭
এসএস/এএ