ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

লঞ্চের টিকিট বিক্রির দ্বিতীয় দিনেও বিশৃঙ্খলা!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৭
লঞ্চের টিকিট বিক্রির দ্বিতীয় দিনেও বিশৃঙ্খলা! অগ্রিম টিকিট বিক্রির দ্বিতীয় দিনেও কাউন্টার ফাঁকা- ছবি- ডি এইচ বাদল

সরদরঘাট থেকে: ঈদুল আযহা উপলক্ষে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে লঞ্চের অগ্রিম টিকিট বিক্রির দ্বিতীয় দিনেও প্রায় একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। বরং টিকিট বিক্রির প্রথম দিন রোববারের (২০ আগস্ট) তুলনায় সোমবার (২১ আগষ্ট) দ্বিতীয় দিনে আরো বেশি বিশৃঙ্খলা চোখে পড়ে। 

বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতি ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ঘোষণা অনুযায়ী, অগ্রিম টিকিট বিক্রির দ্বিতীয় দিনেও কোনো ধরনের চাপ ছিলো না সদরঘাট নৌ-বন্দরে। তাই নির্মাণাধীন নতুন ভবনের ৩৫টি কাউন্টার থেকে দক্ষিণাঞ্চলের লঞ্চের অগ্রিম টিকিট বিক্রির দ্বিতীয় দিনেও কোনো ব্যস্ততা দেখা যায়নি কাউন্টারগুলোতে।

এদিনও খোলেনি সিংহভাগ টিকিট কাউন্টার।  

সরেজমিন দেখা যায়, লঞ্চের অগ্রিম টিকিট বিক্রির প্রথম দিনে গোটা ১৫ কাউন্টার খোলা থাকলেও দ্বিতীয় দিন তা নেমে আসে মাত্র ৫-৭টিতে! যে কয়টি টিকিট কাউন্টার খুলেছে সেখানেও কেউ আজ এসেই টিকিট পেয়েছেন এমন তথ্যও পাওয়া যায়নি। যে ক’জন আজ টিকিট নিয়েছেন তারা বেশিরভাগই মোবাইল ফোনে কনফার্ম করে রেখেছিলেন। কিংবা লঞ্চের কর্মচারীদের সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিনের সখ্যতার খাতিরেই টিকিট পেয়েছেন। ফলে যারা এ পথে মৌসুমি যাতায়াতকারী তাদের খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে।

এছাড়া রোববারের মতো এদিনও আগের মতোই কাউন্টারের সামনে নির্মাণযজ্ঞ কিংবা নির্মাণ সামগ্রীর স্তুপ ছিলো চোখে পড়ার মতো। টিকিট বিক্রি কিংবা কাউন্টারে লঞ্চের কর্মচারীরা এসেছেন কিনা এ নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ এর পক্ষ থেকে কোনো মনিটরিং ব্যবস্থাও দেখা যায়নি।

সোমবার (২১ আগস্ট) খোলা হাতেগোনা কয়েকটি কাউন্টারের মধ্যে ছিল রোববার (২০ আগস্ট) দুপুরে টিকিট শেষ বলে কাউন্টার ত্যাগ করা ফারহান নেভিগেশন। এসময় তাদের রোববার টিকিট শেষ হয়ে যাওয়ার পর আজ কাউন্টার খোলার কারণ জানতে চাইলে তারা জানান, তাদের কিছু টিকিট অবিক্রিত ছিল, সেটা আজ সকালে বিক্রির জন্য কাউন্টার খুলেছেন।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী বাংলানিউজকে বলেন, এখানে আসলে আজ কেউই টিকিট বিক্রির জন্য আসেনি। উপর থেকে কিছুটা চাপ থাকায় দু’একজন কাউন্টার খুলেছেন, তবে এখান থেকে এখন শুধুই আগে থেকে যারা ফোনে বুকিং দিয়ে রেখেছিলেন তারাই টিকিট বুঝে নিচ্ছেন।

কথার সত্যতা পাওয়া যায় দুপুর পৌনে ১টা নাগাদ টিকিট কেনার উদ্দেশ্যে সদরঘাটে আসা দুই ব্যাক্তির সঙ্গে কথা বলে।  

প্রথমজন, আনিসুর রহমান মিরপুর থেকে এসেছেন ৩১ আগস্টের বরিশালগামী লঞ্চের অগ্রিম টিকিট কিনতে। কিন্তু বিধিবাম, তিনি আসার আগেই এ রুটের সব কেবিন শেষ হয়ে গেছে বলে জেনেছেন কাউন্টার থেকে। ফলে টিকিট ছাড়াই ফিরতে হয়েছে তাকে।  

অপরদিকে মোহাম্মদপুর থেকে আসা মুস্তাফিজুর রহমান এসেছেন একই রুটের অগ্রিম টিকিট নিতে, তিনি তা পেয়েও গেছেন! কিভাবে পেলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নিয়মিত লঞ্চে যাতায়াত করি। ঈদের আগে টিকিট নিয়ে এমন হতে পারে বুঝেই গত ১৫ তারিখ আমার পূর্বপরিচিত এক বুকিং সহকারীকে বলে রেখেছিলাম। আজ এসে শুধু টিকিট নিয়ে যাচ্ছি।  

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সুরভী নেভিগেশনের এক কর্মচারী বাংলানিউজকে বলেন, সরকারি আদেশমতো চাইলেও লঞ্চের টিকিট বিক্রি করা যায়না। কারণ আমাদের অনেক যাত্রী আছেন যারা নিয়মিত আমাদের লঞ্চে যাতায়াত করেন। তারা আগেই বলে রাখেন টিকিটের জন্য। সেই অনুপাতে আগে তাদের টিকিট রেখে বাকি যে কয়টা থাকে তা এখানে নিয়ে বসি। এবং সেটাও বিক্রি হয়ে গেছে।  

তবে আজকেও চাঁদপুর, বগা, হুলারহাট, ভোলা রুটের লঞ্চের কিছু কেবিক অবিক্রিত রয়েছে বলে জানা যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার প্রধান উপদেষ্টা গোলাম কিবরিয়া টিপু বলেন, কাউন্টারে টিকিট বিক্রি এক ধরনের ধান্ধাবাজি। কাউন্টারে কেউ টিকিট কাটেন না। সবাই লঞ্চে এবং বাইরে টিকিট কেনেন, আবার অনেকে এমনিই যায়। তাই হয়তো সবাই কাউন্টার খোলেনি।

এ বিষয়ে কথা বলতে বিআইডব্লিউটিএ সদরঘাটের নৌ-নিরাপত্তা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদিনকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৭ 
ডিআর/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ