রোববার (২০ আগস্ট) সকালে এ হতাশা ও ক্ষোভের কথাগুলো বাংলানিউজকে বলছিলেন গাবতলীতে সোহাগ পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার মো. দুলাল।
এরকম ক্ষোভ শুধু মো. দুলালেরই নয়, গাবতলীতে অবস্থিত প্রায় প্রতিটি পরিবহনের কাউন্টারের কর্মকর্তারা একই সুরে কথা বলছেন।
তবে অগ্রিম টিকিট বিক্রির খড়া সব থেকে বেশি পোহাতে হচ্ছে দেশের দক্ষিণঞ্চলে যাতায়াত করা পরিবহনগুলোর। সেই তুলনায় উত্তরাঞ্চলে টিকিটের বিক্রি কিছুটা ভালো রয়েছে।
রোববার (২০ আগস্ট) গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলে যাতায়াত করা বিভিন্ন পরিবহনের কর্তৃপক্ষদের সঙ্গে কথা বলে এ সব তথ্য জানা যায়।
অন্যদিকে গাবতলী টার্মিনালে সরেজমিনে দেখা যায়, সারা টার্মিনাল জুড়ে অগ্রিম টিকিট কিনতে আসা যাত্রীদের কোনো উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। যে জায়গায় প্রতি বছর ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হলে গাবতলীতে পা রাখার জায়গা পাওয়া যেতো না।
অগ্রিম টিকিট বিক্রির বেহাল দশার বিষয়ে পরিবহন কর্তৃপক্ষরা বলছেন, উত্তরাঞ্চলের টিকিট কিছু বিক্রি হলেও একদম বিক্রি কম দক্ষিণাঞ্চলের পরিবহনগুলোতে। এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, পাটুরিয়া ফেরিঘাটের বেহাল দশা ও মহাসড়কের খারাপ অবস্থার কারণে যাত্রীরা অগ্রিম টিকিট কাটতে আগ্রহ পাচ্ছে না। ফলে অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় এবার অগ্রিম টিকিট বিক্রির সংখ্যা কমছে।
অন্যদিকে উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি কারণেও অগ্রিম টিকিট বিক্রি ব্যাহত হচ্ছে। যাত্রীরা বন্যা ও নানা কারণে রাস্তার বেহাল দশা দেখে গিয়ে ট্রেনের অগ্রিম টিকিটের জন্য কমলাপুরে দাঁড়াচ্ছেন। ফলে সড়কপথের চাপ এখন গিয়ে পড়ছে রেলপথে।
এ বিষয়ে ঈগল পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার মো.আনোয়ার বাংলানিউজকে বলেন, মাত্র ৩১ আগস্টের অগ্রিম টিকিট গত দুই দিনে বিক্রি করতে পেরেছি। কিন্তু ঈদ যাত্রা শুরু হবে ২৯ তারিখ থেকে সেই জায়গায় বাকি ৩ দিনের টিকিট বিক্রির কোনো লক্ষণ নেই। এবারের মতো এতো খারাপ অবস্থা আগে কখনো হয়নি।
গোল্ডেন লাইন পরিবহন কাউন্টার ম্যানেজার মো.আবু তালেব বাংলানিউজকে বলেন, পাটুরিয়া ফেরিঘাট ও রাস্তার বেহাল দশার কারণে যাত্রীরা অগ্রিম টিকিট কিনছেন না। শুধু মাত্র ফেরিঘাটেই যাত্রীদের ৭-৮ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। এই সব ভোগান্তির কারণে যাত্রীদের মধ্যে অগ্রিম টিকিটের চাহিদা নেই।
যাত্রীরা তাহলে দক্ষিণাঞ্চলে ঈদ যাত্রা কীভাবে করবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকা থেকে ভেঙ্গে ফেরিঘাট যাবে, তারপর ফেরি পাড় হয়ে ঐ পাড় থেকে বাসে উঠবে।
উত্তরাঞ্চলে যাতায়াত করা বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার বলেছেন, তাদের অগ্রিম টিকিট বিক্রিও অন্য বছরের তুলনায় অনেক কম। তারা ব্যবসায়িকভাবে এবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবণা রয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের ২৭,২৮,২৯,৩০,৩১ আগস্টের অগ্রিম টিকিট রয়ে গেছে অনেক পরিবহনের। যার ৫ শতাংশ টিকিট এখনো বিক্রি করতে পারছেন না।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৭
এমএসি/বিএস