ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

বন্যায় চাপ বেড়েছে ট্রেনে! 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৭
বন্যায় চাপ বেড়েছে ট্রেনে!  কমলাপুর স্টেশন মাস্টার সীতাংশু চক্রবর্তী- ছবি: দীপু মালাকার

ঢাকা: উত্তরাঞ্চলে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে দেখা যাচ্ছে বন্যায় তলিয়ে যাওয়া মহাসড়কগুলোর বেহাল চিত্র। মহাসড়কগুলো খারাপ থাকায় নিরাপদে গন্তব্যে যাওয়ার লক্ষ্যে রেলপথকেই এবার বেঁছে নিচ্ছেন ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা। 

যেসব যাত্রী গত কয়েক বছর ধরে নিয়মিত ঈদ উপলক্ষে সড়কপথে যাতায়াত করতেন তারা এবার বন্যার ভোগান্তি এড়াতে রেলপথের দিকে ঝুঁকছেন। এর ফলে অন্য যেকোনো বারের তুলনায় এবার রেলপথের ওপর চাপ বেশি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

শনিবার (১৯ আগস্ট) সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে সরেজমিনে অগ্রিম টিকিট প্রত্যাশী যাত্রী ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।

উত্তরাঞ্চলের বিভন্ন সড়কপথ দিয়ে ঈদ উপলক্ষে যাতায়াত করা যাত্রীরাই ট্রেনের অগ্রিম টিকিটের জন্য ভিড় করছেন। তাদের বেশিরভাগ যাত্রীই নিয়মিত সড়কপথে যাতায়াত করতেন। এবার এই সব অঞ্চলের সড়কপথ বন্যার পানিতে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনা ও ভোগান্তি এড়াতে রেলপথ বেঁছে নিচ্ছেন।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে অগ্রিম টিকিট প্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা যে সব সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করতেন তা এখন বন্যায় নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে ঈদ মৌসুমে ঐসব রোড দিয়ে চলাচল করা নিরাপদ নয়। তাছাড়া উত্তারঞ্চলের সড়কপথে ফেরিঘাটসহ বিভিন্ন জায়গায় সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয় তাই তারা এবার ভোগান্তিহীন যাত্রার জন্য ট্রেনের অগ্রিম টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন।

চুয়াডাঙ্গাগামী ট্রেনের অগ্রিম টিকিটের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রী মো. রাসেল বাংলানিউজকে বলেন, আমি সব সময়ই ঈদ মৌসুমে বাসে করে বাড়ি যাই। কিন্তু এবার বিভিন্নভাবে খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পাড়ি বন্যায় রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। তাই নিরাপদে ও ভোগান্তি এড়ানোর জন্য ট্রেনের টিকিটের জন্য দাঁড়িয়েছি। বাকিটা নির্ভর করে টিকিট পাওয়ার ওপর।
কমলাপুরে টিকিট সংগ্রহে যাত্রীদের ভিড়- ছবি: দীপু মালাকার দিনাজপুরগামী একতা এক্সপ্রেসের অগ্রিম টিকিটের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রী মইনুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এবার বাসে যাওয়া সম্ভব নয়। বন্যার কারণে রাস্তার যে অবস্থা বাসে গেলে ভোগান্তির শেষ নেই এবার।  তাই ট্রেনের টিকিটের জন্য আসছি। তাছাড়া সড়কপথে যাত্রাতে সারা বছরই ভোগান্তির শেষ নেই।

তবে রেলপথেও ব্যানার কারণে রয়েছে নানা ভোগান্তি। বিশেষ করে জামালপুর ও দিনাজপুরে বন্যায় রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ট্রেন যেতে পারছে না। তবে এই সব এলাকার যাত্রীরা বলছেন রেলপথে নির্দিষ্ট স্থানের আগে নেমে যেতে হলেও সড়কপথ থেকে নিরাপদ ও ভোগান্তি কম।

এ বিষয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, বন্যা ও সড়কপথে বিভিন্ন ভোগান্তির কারণে রেলপথে এবার চাপ বেশি। তবে তারা নিজেদের সাধ্যমত চেষ্টা করছেন যাত্রীদের হাতে টিকিট তুলে দেওয়ার জন্য।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী বাংলানিউজকে জানান, বন্যার কারণে ও রাস্তা ঘাটের বেহাল দশার কারণে যাত্রী চাপ কিছুটা বেশি হতে পারে। তবে আমরা নিজেদের সীমার মধ্যে চেষ্টা করছি যাত্রীদের অগ্রিম টিকিট দেওয়ার জন্য। প্রতিদিন আমরা ২২ হাজার ৪৯৬ টি অগ্রিম টিকিট ইস্যু করছি।

তিনি বলেন, এবার ৩ জোরা ঈদ স্পেশাল ট্রেন রয়েছে যা ঈদের আগে বিভিন্ন জেলায় যাত্রী নিয়ে যাবে। এই সব ট্রেনের টিকিট আগামী কাল থেকে পাওয়া যাবে।

শুক্রবার (১৮ আগস্ট) সকাল থেকে শুরু হওয়ায় অগ্রিম টিকিট বিক্রির দ্বিতীয় দিন শনিবারেও টিকিট প্রত্যাশীদের উপচে পড়া ভিড়।  

ঈদ উপলক্ষে কমলাপুর থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট দেওয়া হচ্ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১২১১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৭
এমএসি/বিএস 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।