ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গীতাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে ঢাকায় জন্মাষ্টমী উদযাপন শুরু 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৭
গীতাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে ঢাকায় জন্মাষ্টমী উদযাপন শুরু  ছবি: সুমন

ঢাকা: দেশ-জাতি ও বিপুল পৃথিবীর সকলের মঙ্গল কামনায় শ্রী শ্রী গীতাযজ্ঞ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে রাজধানী ঢাকায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে শুরু হয়েছে দিনব্যাপী জন্মাষ্টমী উদযাপন।

সোমবার (১৪ আগস্ট) ঢাকেশ্বরী মন্দির-প্রাঙ্গণে শ্রী শ্রী গীতাযজ্ঞ অনুষ্ঠান শুরু হয় সকালে।  মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এই গীতাযজ্ঞে গীতার ১৮টি অধ্যায় পর্যাক্রমে পাঠ করা হবে।

ঢাকেশ্বরী মন্দিরে বিকেলে অনুষ্ঠিত হবে ঐতিহাসিক জন্মাষ্টমী মিছিল এবং রাতে অনুষ্ঠিত হবে কৃষ্ণপূজা।  

সকাল ৮টায় শুর হওয়া শ্রী শ্রী গীতাযজ্ঞ শেষ হবে দুপুর ২টায়। এরপর বিকেল ৩টায় ঐতিহাসিক জন্মাষ্টমী মিছিল ও  রাত  ১২টায় অনুষ্ঠিত হবে কৃষ্ণপূজা।

শ্রী শ্রী গীতাযজ্ঞ অনুষ্ঠানটি হচ্ছে শংকর মঠ ও মিশনের সভাপতি শ্রী মঠস্বামী তপনান্দ গীরির তত্ত্বাবধানে।

স্বামী তপনান্দ গীরি বাংলানিউজকে বলেন, গীতা হচ্ছে ভগবান শ্রী কৃষ্ণ'র মুখনিসৃত বাণী। শ্রী শ্রী গীতাতে ধর্মবর্ণগোত্র ও জাতপাত নির্বেশেষে সকল মানুষ এবং সকল প্রাণীর মঙ্গল ও হিতসাধনের কথা বলা হয়েছে।  উচিত কর্তব্যের কথা বলা হয়েছে এবং নানা দিকনির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাই শ্রী কৃষ্ণ'র জন্মাষ্টমীর উদযাপন অনুষ্ঠান গীতাপাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে থাকে।

তিনি বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠান ও পূজার মধ্য দিয়ে আমরা সারাবিশ্বের সকল প্রাণির কল্যাণ ও মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করছি। বাংলাদেশের সকল মানুষ যেন ধর্ম বর্ণ ও গোত্র নির্বিশেষে এক সঙ্গে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারে সে প্রার্থনাই করা হচ্ছে এই গীতাযজ্ঞ অনুষ্ঠানে। এছাড়া দেশ ও জাতির উন্নয়ন এবং শান্তি কামনার পাশাপাশি আমরা জগতের সর্বপ্রাণী ও সর্বজনের মঙ্গল ও কল্যাণ কামনা করছি।

শ্রী শ্রী গীতাযজ্ঞ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ও দর্শনার্থীরা একে একে মন্দির-প্রাঙ্গণে আসতে থাকেন।  বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আগমন বাড়তে থাকে। দর্শনার্থীরা নানান রঙিন সাজে সেজে আরাধ্য দেবতা ভগবান শ্রীকৃষ্ণ'র প্রতি আনুগত্য প্রকাশ ও নিজেদের ভক্তিশ্রদ্ধা নিবেদন করছেন মন্দিরে।

শ্রীকৃষ্ণ'র জন্মাষ্টমী উপলক্ষে ভক্তরা উপবাসব্রত পালন করার মধ্য দিয়ে এই গীতাযজ্ঞ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছেন। গীতাপাঠের পবিত্র গম্ভীর আবহ ও আগত পুণ্যার্থী নারীদের উলুধ্বনিতে ঢাকেশ্বরী মন্দির-প্রাঙ্গণে অপার্থিব পরিবেশ বিরাজ করছে।

মন্দিরে আগত পুণ্যার্থী পদ্মাবতী দেবী বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমান বিশ্বে ধর্মের নামে হানাহানি বেড়ে গিয়েছে। মানুষ এখন মানবতার ধর্মকে ভুলে গিয়ে এক অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। তাই আজকের দিনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ'র কাছে প্রার্থনা করব পৃথিবীতে যেন মানবধর্ম ফিরে আসে এবং এইসব হানাহানি বন্ধ হয়।

জন্মাষ্টমী অনুষ্ঠান যাতে নির্বিঘ্নে উদযাপিত হতে পারে সেজন্য ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরপ্রাঙ্গণে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে পুলিশের পাশাপাশি এলিট ফোর্স র‍্যাব। মন্দির-প্রাঙ্গণে প্রবেশরত দর্শনার্থীদের সবাইকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা তল্লাশি পার হয়ে আসতে হচ্ছে।

ভগবান শ্রীকৃষ্ণর মর্ত্যে আবির্ভাব ঘটে দ্বাপর যুগে। বিষ্ণুর অষ্টম অবতার হিসেবে। অত্যাচারী রাজা কংসকে হত্যা করে মথুরাবাসীকে উদ্ধার করতেই মর্ত্যলোকে আবির্ভূত হয়েছিলেন কৃষ্ণ। অষ্টোত্তর শতনামধারী ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এভাবেই হয়ে ওঠেন জগতের বিপদনাশন ত্রাতা।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৬ ঘণ্টা  আগস্ট ১৪, ২০১৭
এমএসি/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।