ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আমদানি কমায় বেড়েছে পেঁয়াজের ঝাঁজ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৭
আমদানি কমায় বেড়েছে পেঁয়াজের ঝাঁজ আমদানি কমায় বেড়েছে পেঁয়াজের ঝাঁজ

রাজশাহীর মাস্টারপাড়া কাঁচাবাজার থেকে: চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ট্রাকে পেঁয়াজ ঢুকছে রাজশাহীতে। এরপর সেই পেঁয়াজ রাজশাহী হয়ে চলে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন পাইকারি বাজারে। তবে চলতি মাসের শুরুতে হঠাৎ করে ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি কমেছে। এর উপর বিভিন্ন স্থানে বন্যা, টানা বৃষ্টি হওয়ায় পচে নষ্ট হয়ে গেছে দেশি পেঁয়াজ, ফলে সার্বিকভাবে বেড়েছে দাম।

কোরাবনির ঈদের আগে হঠাৎ করেই পেঁয়াজের দাম বাড়লো। কিন্তু কেন? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে শুক্রবার (১১ আগস্ট) ভোরে রাজশাহীর প্রধান পাইকারি কাঁচাবাজার মাস্টারপাড়ায় গিয়ে পাওয়া গেলো এমন তথ্যই।

ব্যবসায়ীদের দাবি কোনো কারসাজি বা মজুদ নয়, ভারতের বাজারে দাম বাড়ায় আর আমদানি কমায় দেশের বাজারে হু হু করে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। সামনে আরও বাড়বে।

রাজশাহী মহানগরীর মাস্টারপাড়া কাঁচাবাজার এলাকার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী ইয়াসিন আলী বাংলানিউজকে বলেন, সাধারণত ঈদের আগে এমনিতেই পেঁয়াজসহ বিভিন্ন মসলার দাম বাড়ে। তবে এবার একটু আগেভাগেই দাম বাড়তে শুরু করেছে। পাইকারি বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ ২০০ টাকা পাল্লা (পাঁচ কেজি) বিক্রি হচ্ছে। কেজিপ্রতি যার দাম পড়ছে ৪০ টাকা। মহানগরীর খুচরা বাজারে এই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজি। আর দেশি পেঁয়াজ ২৫০ টাকা পাল্লা (পাঁচ কেজি)। প্রতিকেজি হিসেবে দাম পড়ছে ৫০ টাকা। খুচরা বাজারে গিয়ে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

জানতে চাইলে ইয়াসিন আলী বলেন, গত শুক্রবার ভারতীয় পেঁয়াজ ৩৪ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে রাজশাহীর পাইকারি বাজরে। এর মধ্যে আমদানি না বাড়ায় দাম বেড়েছে। সামনের সপ্তাহে এই দাম আরও বাড়বে। এদিকে এবারের আগাম বন্যায় পেঁয়াজের আবাদ নষ্ট হওয়ায় দেশি পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না। মাস্টারপাড়া কাঁচাবাজারছুটির এই দিনের বাজারে প্রতিকেজি রসুন পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি খুচরা ১০০ টাকা, আদা পাইকারি ৮০ টাকা কেজি খুচরা ৯০ টাকা। পাইকারি বাজারে কাঁচামরিচ ১১০ টাকা এবং খুচরা বাজারে ১২০ টাকা কেজি, সয়াবিন খোলা ৮০-৯০ টাকা লিটার এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন (পাঁচ লিটার) ৪৮৫ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকা। প্রতিকেজি ভারতীয় জিরা বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকায়। প্রতিকেজি শাহী জিরা ৭৫০ টাকা।  

পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি দারচিনি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। এছাড়া এলাচ (ছোট) ৯শ’ থেকে এক হাজার ৪শ’ টাকায়, এলাচ (বড়) ৯৫০ থেকে এক হাজার ৫০ টাকায়, লবঙ্গ ৮৫০ থেকে ৯শ’ গোলমচির ৬শ’-৬শ’ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শুকনা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকায়। আর দেশি রসুন ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে খুচরা বাজারে মসলার দাম কিছুটা বেশি।

আরডিএ মার্কেটের পাইকারি মসলা বিক্রেতা মেসার্স সুমন ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপক আব্দুল মোমিন বলেন, একমাস আগে কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে জিরার দাম। এছাড়া অন্য মসলার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ছয় মাস ধরে একই দরে বিক্রি হচ্ছে অধিকাংশ মসলা। সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকায় দাম বাড়েনি। তবে রাজশাহীর বিভিন্ন স্থানে টানা বর্ষণের কারণে সরবরাহ কমে যাওয়ায় সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে।  

মাস্টারপাড়া বাজারের সবজি ব্যবসায়ী আমির হোসেন জানান, পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি আলু ২০, বেগুন ৫০, মূলা ৪০ টাকা, পটল ৪০, শশা ৫০, বিভিন্ন রকম শাক ১৫-২০, পেঁপে ২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২৫, করোলা ৪০, প্রতিটি লাউ-কুমড়া ২০, প্রতিহালি কলা ১৬, লেবু ১২, ঢেঁড়স ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মিলছে শীতের সবজিও। তবে দাম চড়া। প্রতি কেজি বরবটি ৪০ টাকা, টমেটো ১৫০ টাকা, গাজর ৯০-১০০ টাকা, ফুলকপি ৮০ টাকা পিস, বাঁধাকপি ২০-২৫ টাকা পিস।  

বর্ষা বিদায় না হওয়া পর্যন্ত সবজির দাম এর চেয়ে আর কমবে না বলে জানান সবজি ব্যবসায়ী আমির হোসেন।

তবে রাজশাহীর বাজারে মোটামোটি স্থিতিশীল রয়েছে মাংসের দাম। এদিন প্রতিকেজি ফার্মের মুরগি ১৩৫, সোনালি ১৮০ থেকে ২০০ এবং দেশি ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি গরু মাংস ৪৬০ থেকে ৪৮০, খাসির মাংস ৬শ’ থেকে ৭শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৭
এসএস/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।