যদিও বাংলার এই ধুমকেতু শুধু চাঁদ ঘিরে প্রদক্ষিণ করে না। ঢাকার যাত্রীরা একে দিনের বেলাতে দেখতে অভ্যস্ত।
২০০৯ সালে সাদা কোচ দিয়ে রাজশাহী-ঢাকা রুটে যাত্রা শুরু করে ধুমকেতু এক্সপ্রেস। ২০১৬ সালে লাল-সবুজে মোড়ানো হয়।
ব্রডগেজ এই ট্রেনটিকে অনেকখানি সাউন্ড প্রুফ বলা চলে। বাইরের শব্দ সর্বোচ্চ ২০ ভাগ অনুভব হবে। আর মাত্রা অনেক সহনীয়, যা অন্য ট্রেনের (পারাবত, সোনারবাংলা) তুলনায় নগন্য বলা চলে।
তবে কষ্টের কথা লাল-সবুজে মোড়ানো ধুমকেতুর ১ বছরের মাথায় অনেক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এসি বগি গ'র জানালার ১৬ টি গ্লাসের মধ্যে মাত্র তিনটি অক্ষত রয়েছে। অন্যগুলো দুর্বৃত্তদের ছোড়া ঢিলে চৌচির হয়ে গেছে। কোনটিতো মনে হচ্ছে এই বুঝি খসে পড়ে যাবে।
শুধু গ বগি নয় অন্যান্য বগির অবস্থা কমবেশি একই। খ বগির কতগুলো জানালা ভেদকরে চলে গেছে পাথর খন্ড। অ্যাটেনডেন্ট আরাফাত আছেন লাল- সবুজের শুরু থেকে। তিনি জানান, কি করবো ভাই, আমরা দেখি পাথর ছুড়ছে কিন্তু কিছুই করার থাকে না।
এতো গেলো বাইরের কথা, অনেক দিন ধরে নাকি এসি চুইয়ে পানি পড়ছে। যারা নিয়মিত যাতায়াত করছেন অনেক অভিযোগ করেছেন কোনো লাভ হয় নি। ব্যবস্থা হিসেবে মাঝে মাঝে অ্যাটেনডেন্ট এসে পেপার কাগজ দিয়ে মুছে দিতে দেখা গেছে।
তবে সবচেয়ে বিড়ম্বনার হচ্ছে ধুমকেতুর সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেনি স্টেশনের প্লাটফর্মগুলো। বগির তুলনায় অনেক নিচু প্লাটফর্ম। যে কারনে বুক সমান উঁচু ট্রেনে বাদুড় ঝোলা হয়ে উঠতে হচ্ছে যাত্রীদের। এতে বয়স্ক ও অসুস্থ যাত্রীদের ত্রাহী অবস্থা। কমলাপুরে অস্থায়ী সিঁড়ি দেখাগেলো যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
ভারতে এই ট্রেনগুলো বহুল প্রচলিত, তাদের প্লাটফর্ম অনেক উঁচু। কেউ ইচ্ছা করলে নিচ দিয়ে এক প্লাটফর্মে যাওয়ার সুযোগ নেই ওভারব্রিজ ব্যবহার করতে হয়। আর বাংলাদেশের প্লাটফর্ম অনেক নিচু হওয়ায় অনেককে রেল লাইনে হাটাচলা করতে দেখা যায়।
ধুমকেতু মোট ১৫ টি বগি নিয়ে যাত্রা করেছে। এসি কেবিন বগি ৩টি, এসি সিট ২টি, ননএসি বগি ৮টি ও পাওয়ার কার ২টি।
ঢাকা থেকে রাজশাহী যাওয়ার পথে বিমানবন্দর স্টেশন, গাজীপুরের জয়দেবপুর, টাঙ্গাইল, বঙ্গবন্ধু সেতু পুর্ব, সিরাজগঞ্জের এম মনসুর , জামতৈল, উল্লাপাড়া, নাটোরের বড়ালব্রিজ, পাবনার চাটমোহর ও ইশ্বরদীতে যাত্রা বিরতি করবে।
রাজশাহীতে পৌঁছতে সময় নেবে ৬ ঘণ্টা ২০ মিনিট। ট্রেনটি বিকেল ৪টায় পদ্মা হয়ে ঢাকার পথে যাত্রা করবে, কমলাপুরে পৌঁছাবে রাত ৯টা ৫০ মিনিটে। ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট বিরতি দিয়ে রাত ১১.১০ টায় আবার পদ্মা হয়ে রাজশাহী ফিরবে।
ঢাকা-রাজশাহী রুটে মোট ২টি এক্সপ্রেস ট্রেন ভিন্ন তিনটি নামে চলাচল করে। পদ্মা নদীর নামে পদ্মা, রাজশাহীর ঐতিহ্য সিল্কের নামে সিল্ক সিটি। একই গাড়ি ঘুরে ফিরে ভিন্ন নামে।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৭
এসআই/বিএস