ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

প্রতিষ্ঠার ৫ বছর পরও জবি’র নিজস্ব শিক্ষার্থী পরিবহন নেই

মো. মোরশেদ সরকার, জবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১০

ঢাকা: প্রতিষ্ঠার পাঁচ বছরেও শিক্ষার্থী পরিবহনের জন্য কোনো গাড়ি কিনতে পারেনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কর্তৃপক্ষ। প্রায় ২৩ হাজার শিক্ষার্থীর যাতায়াতের জন্য রয়েছে মাত্র আটটি দ্বিতল ভাড়া বাস।



ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা ক্ষোভের সঙ্গে জানান, নানা কারণেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিণত হয়েছে সাইনবোর্ডসর্বস্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো হল বা আবাসন ব্যবস্থা নেই। ফলে দূরদূরান্ত থেকে লোকাল বাসে এসে কাস করতে হয় তাদের। এতে একদিকে যেমন বিপুল অর্থ ও সময় অপচয় হয় তেমনি সময়মতো কাসে উপস্থিত থাকাও সম্ভব হয় না। আবার নির্দিষ্টসংখ্যক কাসে উপস্থিত থাকতে না পারলে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে মোটা অংকের জরিমানা আদায়, এমনকি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অযোগ্য বলেও গণ্য করা হয়।

তারা বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দেওয়া ৫২ সিটের দুটি বাসসহ ভাড়া বাসগুলো সকাল ৯টায় শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে নিয়ে আসে আর বিকেলে সাড়ে ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে দিয়ে আসে। এতে সকাল ১০টার পর ও বিকেল ৩টার আগে যাদের কাস শুরু ও শেষ হয় হয় তাদের আনা-নেওয়ার জন্য বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেই।

বাস স্বল্পতার কারণে ছাত্ররা বাদুড়ঝোলা হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করেন। বাসে উঠে আসন তো দূরের কথা ঠিকমতো দাঁড়ানোরও জায়গা পান না বেশির ভাগ শিক্ষার্থী। এ নিয়ে প্রায়ই কথা কাটাকাটি হয় নিজেদের মধ্যে।

অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ধ্যায় কাস করতে আসা এমবিএ‘র শিক্ষার্থীরা কোনো পরিবহন সুবিধাই পান না। ফলে সন্ধ্যা ৭টার পর মেয়ে শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় বলে জানান তারা।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করতে পারছে না। অথচ প্রতি বছর তাদের কাছ থেকে পরিবহন ভাড়াবাবদ মোটা অংকের টাকা নেওয়া হচ্ছে।

জবি প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল থেকে দুটি বাস কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। স্থানীয় সাংসদ মিজানুর রহমান খান দিপু বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য দুটি বাস দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় সে সিদ্ধান্তও বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু সাংসদ ঘোষিত বাস দুটি এখন পর্যন্ত পাননি জবি শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে তিনশ’ শিক্ষককে আনা-নেওয়ার জন্য রয়েছে মাত্র চারটি মিনিবাস। এগুলোর দুটিই চলাচলের অযোগ্য। নিজস্ব মেকানিক না থাকায় চারটি মিনিসবাসের গড়ে দুটিই বিকল হয়ে পড়ে থাকে বলে জানা যায়।

প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক এএইচএম শফিউল্লাহ হাবিব বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে জানান, ‘প্রায়ই রাস্তায় মাইক্রোবাসের ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় সময়মতো কাসে পৌঁছা যায় না। ’

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক আবদুল মজিদ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে জানান, ‘অর্থসঙ্কটের কারণে গাড়ি মেরামতের জন্য মেকানিক রাখা যাচ্ছে না। ’

প্রশাসন থেকে মেরামত খরচ পেতে দেরি হওয়ার কারণেও বিকল গাড়ি সময়মতো সচল করা যায় না বলে স্বীকার করেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শওকত জাহাঙ্গীর বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাস থাকার চেয়ে ক্ষেত্রবিশেষে ভাড়ায় চালিত বাসের সুবিধা বেশি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন সঙ্কটের কথা বিবেচনা করে দুটি বাস ক্রয়ের প্রক্রিয়া চলছে। ’

সাংসদ ঘোষিত দুটি বাস শিগগিরই পাওয়ার ব্যাপারেও আশাবাদী তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।