রিমান্ডে নেওয়া দু’জন হলেন- লাইলীর গৃহকর্তা ওই বাড়ির মালিক মুন্সী মইনুদ্দিন ও দারোয়ান তোফাজ্জল করিম। তবে গৃহকর্ত্রী শাহনাজ বেগমকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
শুক্রবার (০৪ আগস্ট) দিবাগত রাতে নিহত লাইলীর স্বামী নজরুল ইসলামের বড় ভাই শহীদুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে খিলগাঁও থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেন।
ঘটনার পর পরই গৃহকর্তা মইনুদ্দিন ও বাড়ির দারোয়ান তোফাজ্জল করিমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল। মামলার পরে তাদেরকে গ্রেফতার দেখানো হয়। শনিবার (০৫ আগস্ট) সকালে গৃহকর্ত্রী শাহনাজ বেগমকেও গ্রেফতার করে পুলিশ।
বিকেলে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে আসামিদের সাতদিন করে রিমান্ডের আবেদন জানায় খিলগাঁও থানা পুলিশ। অন্যদিকে জামিনের আবেদন জানান তাদের আইনজীবী।
শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম মাইনউদ্দিনের আদালত জামিনের আবেদন বাতিল করে মইনুদ্দিন ও তোফাজ্জলের তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অসুস্থতার কারণে শাহনাজকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
দক্ষিণ বনশ্রীর ডি ব্লকের ৪ নম্বর রোডের ১৪ নম্বরের সাততলা বাড়ির মালিক গৃহকর্তা মইনউদ্দিনের নিচতলার বাসায় কাজ করতেন গৃহকর্মী লাইলী (২৫)। শুক্রবার (০৪ আগস্ট) সকালে তাকে দারোয়ান দিয়ে ডেকে আনেন মইনউদ্দিন। এর কিছুক্ষণ পর মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন গৃহকর্তা মইনউদ্দিন। কর্তব্যরত চিকিৎসক বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সে সময় লাইলী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেন মইনউদ্দিন। তবে লাইলীকে হত্যা করে মইনউদ্দিন আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ তোলেন লাইলীর স্বজন ও এলাকাবাসী। এরপর মইনউদ্দিন ও ‘হত্যাকারীদের’ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে লাইলীর দুই সন্তানকে নিয়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন তারা।
মইনউদ্দিনের বাড়ি ঘেরাও করে দফায় দফায় হামলা-ভাংচুর ও তার গাড়িতে অগ্নিসংযোগের সময় পুলিশের সঙ্গে স্বজন ও এলাকাবাসীর সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
এদিকে সংঘর্ষ, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলার এজাহারে অজ্ঞাতনামা ৩ থেকে ৪শ’ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫,২০১৭
এমআই/এসএইচ/এএসআর