বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার বেনোইট পিয়েরে লারামি বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে এলে মঙ্গলবার (০১ আগস্ট) এ অনুরোধ জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
সচিবালয়ে এ সাক্ষাৎ শেষে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিদায়ী হাইকমিশনারকে দেশটিতে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনি নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি।
আনিসুল হক বলেন, ‘কানাডার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ভালো। এ সম্পর্ক উন্নয়নে হাইকমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি। তবে বঙ্গবন্ধুর খুনি নূর চৌধুরীকে ফেরতের বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কথা উঠবে। আমরা দুই দেশই তাই আলোচনা অব্যাহত রেখেছি’।
বঙ্গবন্ধু হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ খুনির মধ্যে ছয়জন এখনও পলাতক আছেন। আরেক খুনি আজিজ পাশা জিম্বাবুয়েতে মারা গেছেন।
২০১০ সালের জানুয়ারিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া বাকি পাঁচজন হলেন- বরখাস্তকৃত লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফারুক রহমান, মহিউদ্দিন আহমেদ (আর্টিলারি), শাহরিয়ার রশিদ খান, এ কে এম মহিউদ্দিন আহম্মেদ (ল্যান্সার) এবং বরখাস্তকৃত মেজর বজলুল হুদা।
তাদের মধ্যে ঢাকা-ব্যাংকক বন্দি বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষরের পর বজলুল হুদাকে থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। আর সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদকে ফিরিয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে আইনমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত টাস্কফোর্স। এতে সদস্য হিসেবে আছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
পলাতকদের মধ্যে নূর চৌধুরী কানাডায় অবস্থান করছেন। তিনি কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় চাইলেও দেশটির সরকার তা দেয়নি। এরপর তিনি দেশটির আদালতে আবেদন করেন যে, ‘বাংলাদেশের আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। ফলে বাংলাদেশে ফেরত পাঠালে তার ফাঁসি নিশ্চিত’।
কানাডায় বিধান না থাকায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত কোনো ব্যক্তিকে ফেরত পাঠায় না দেশটি। এ কারণে তাকে তৃতীয় দেশে স্থানান্তরেরও অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে আলোচনার পাশাপাশি তাকে ফেরাতে আইনি লড়াইও চলছে।
অন্যদিকে সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতার আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে থাকা খুনি রাশেদকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে।
অন্য চারজন বরখাস্তকৃত রিসালদার মুসলেহউদ্দিন, বরখাস্তকৃত ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদ, বরখাস্তকৃত কর্নেল খন্দকার আবদুর রশিদ ও বরখাস্তকৃত লেফটেন্যান্ট কর্নেল শরিফুল হক ডালিমের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি সরকার।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ দিয়ে বিচার বন্ধ এবং আত্মস্বীকৃত ১২ খুনিকে বিদেশে বাংলাদেশের বিভিন্ন মিশনে চাকরি দিয়ে পুনর্বাসন করা হয়। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ইনডেমনিটি আইন বাতিলের পর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার সম্পন্ন করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০১৭
কেজেড/এএসআর