ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

বিমানের হজ ফ্লাইট বাতিলের দায় কার!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১৭
বিমানের হজ ফ্লাইট বাতিলের দায় কার! ফ্লাইট বাতিলে হজযাত্রীদের ভোগান্তি; ছবি: কাশেম হারুন

ঢাকা: মুজিবুর রহমান। বয়স ষাটের বেশি। কুড়িগ্রামের রাজারহাট গ্রাম থেকে এসেছেন হজে যাওয়ার জন্য। চিন্তিত বিরক্ত মানুষটি হাঁটাহাঁটি করছেন হজ্জ ক্যাম্পের সামনে। শেষ পর্যন্ত হজে যেতে পারবেন তো এমন নানা চিন্তার যেন শেষ নেই।

‘৩১ তারিখ রাতে আমার ফ্লাইট ছিলো।  গেলাম ইমিগ্রেশনে।

 বলল, ফ্লাইট নাকি বাতিল হয়েছে।  আসতে বলল ১ আগস্ট সকালে।  আজ দুপুর ১২ টা ৫৫ মিনিটে ফ্লাইট ছিলো।  সকাল আটটায় লাগেজ নিয়ে গেলাম ইমিগ্রেশনে।  বলল আবার নাকি ফ্লাইট বাতিল হইছে।  এবার বলছে রাত আটটার ফ্লাইটে নাকি আমরা যাবো।  এখন ভাবছি হজে যেতে পারবো তো!’

কথাগুলো বলছিলেন কুড়িগ্রামের রাজার হাটের মুজিবুর রহমান।

অন্যদিকে বাবা আবদুল মজিদকে ফ্লাইটে তুলে দিতে এসেছেন ছেলে মিলন।  ৩১ তারিখ রাতে বিমানের ফ্লাইটে সৌদি যাওয়ার কথা ছিলো আবদুল মজিদের।  তাই ৩০ তারিখ ঢাকায় আসেন মিলন।  কিন্তু আজ এখন পর্যন্ত দুইবার ফ্লাইট বাতিলের খবর পেলেন মিলন।  এবার কি হবে।  রাত আটটার ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষা করছেন মিলন।

আবদুল মজিদ ও মুজিবুর রহমানের মতো অসংখ্য হজযাত্রী ফ্লাইট বাতিলের কারণে পড়েছেন বিড়ম্বনায়।  কিন্তু বারবার ফ্লাইট বাতিল হচ্ছে কেন সেই প্রশ্ন সকল হজযাত্রীদের।  হজযাত্রী মুজিবুর রহমানের কার্ডে দেয়া গাইডের নাম গোলাম মোস্তফা।  তার সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এক্ষেত্রে কিছুই বলার নেই।  ভিসা জটিলতার কারণে যাত্রী সঙ্কট দেখা দেয়ায় হজ ফ্লাইট বিমান বাতিল করা হয়েছে।  আমরা কী করব! এতে আমাদেরই ক্ষতি হচ্ছে।  যাত্রীদের কাছে আমাদের সুনাম নষ্ট হচ্ছে।
ভিসা জটিলতায় যাত্রী সঙ্কটের কারণেই কয়েকটি হজ ফ্লাইট বাতিল হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিমানের গণসংযোগ বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার শাকিল মেরাজ।  

তিনি বলেন, ভিসা জটিলতার কারণে যাত্রী-সঙ্কট হওয়ায়ই ফ্লাইট বাতিল হচ্ছে।  এখানে আমাদের তো কিছু করার নেই।

তবে বিমানের এ ধরনের বক্তব্য মানতে নারাজ ধর্ম মন্ত্রণালয়।   মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল জলিল বাংলানিউজকে বলেন, দেখুন ভিসা জটিলতার কারণে ফ্লাইট বাতিল হচ্ছে এটা ঠিক নয়।  যথেষ্ট হজযাত্রী আছে যাদের ভিসা হয়ে গিয়েছে।  তবে যারা এর আগেও হজ করে এসেছেন তাদের ক্ষেত্রে সৌদি সরকার ২ হাজার রিয়াল পৃথক ফি ধার্য করার যে কথা হাব (হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) বলছে, সে বিষয়ে আমরা এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক চিঠি সংশ্লিষ্ট দেশটির কাছ থেকে পাইনি।
জেদ্দায় বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ১ আগস্ট সৌদি কর্তৃপক্ষের সাথে এসব বিষয়ে আলোচনা করবেন বলেও জানান ধর্মসচিব।  তাছাড়া এসব বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

এদিকে যেসব হজযাত্রী পূর্বে হজ করেছেন তাদের ক্ষেত্রে বাড়তি যে ফি ধার্য হয়েছে সে বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে হাব।  

হাবের মহাসচিব শাহদাত হোসাইন তসলিম বাংলানিউজকে বলেন, হজ এজেন্সিগুলো যাত্রীদের ভিসার জন্য সৌদি অ্যাম্বেসিতে গিয়ে জানতে পারছে, যেসব হজযাত্রী এর আগেও হজে গিয়েছেন তাদের বাড়তি ২ হাজার রিয়াল দিতে হবে। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৫ হাজার টাকা।  এখন হঠাৎ করেই অনেক হজযাত্রী টাকা যোগাড় করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন।

৬টি হজ ফ্লাইটের চারটিই বাতিল:
এদিকে ০১ আগস্ট বিমানের ৬ টি হজ ফ্লাইট ছাড়ার কথা থাকলেও বাতিল হয়ে গেছে চারটি। শুধু মাত্র  বিমানের বিজি-০০৩৭ এবং বিজি-১০৩৩ হজ ফ্লাইট দুটি ঢাকা ছেড়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০১৭৮/আপডেট ১৫৫১ ঘণ্টা
ইউএম/জেএম

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।