ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মতিঝিলে পুলিশ হত্যা: খুনিরা ধরা পড়েনি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১০

ঢাকা: মতিঝিলে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পুলিশ কনস্টেবল নিহত হওয়ার ঘটনায় দুর্বৃত্তদের এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তাদের ব্যবহৃত সিএনজি ট্যাক্সিরও হদিস পাওয়া যায়নি।



এদিকে আহত দুই পুলিশ সদস্যের বক্তব্য নিতে না পারায় তদন্তের গতিও আটকে আছে। ফলে পুলিশ কনস্টেবল মঞ্জুরুল ইসলাম হত্যা মামলার তদন্তে দীর্ঘসূত্রিতার আশঙ্কা করছেন তার পরিবার।

বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা এ ঘটনার জন্য মতিঝিল কাবপাড়ার জুয়া ও মাদক ব্যবসাকে দায়ি করেছেন। তাদের ধারনা, গভীর রাত পর্যন্ত মতিঝিল থানা সংলগ্ন কাবপাড়ায় জুয়া আর মাদকের ব্যবসা চলে। সেখানে আসা যাওয়া করে নগরীর দাগী অপরাধী ও ডাকসাইটে সন্ত্রাসীরা। জুয়ায় হেরে গেলে তারা ছিনতাই ডাকাতির মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি পুশিয়ে নিয়ে বাড়ি ফেরে।

বৃহস্পতিবার রাতে দুর্বৃত্তরা কাবপাড়ার জুয়ার আসর থেকে বেরিয়েই পুলিশকে গুলি করেছিল কি-না তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দা সদস্যরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘটনাস্থলের আশেপাশে বিভিন্ন অফিসে রাতের নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাবের সদস্য ছাড়া ওই রাস্তায় গভীর রাতে কেউ চলাচল করে না। প্রতিরাতেই কাবপাড়ায় অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি, মদ, জুয়াসহ অসামাজিক কাজের উৎসব চলে।

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মতিঝিলের পুবালী ব্যাংকের সামনে কর্তব্যরত অবস্থায় ছিনতাইকারীদের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন মতিঝিল থানার পুলিশের কনস্টেবল মঞ্জুরুল ইসলাম এবং আহত হন নায়েক হাবিবুল্লাহ ও হাবিলদার মফিজুল ইসলাম।

এ ঘটনায় পুলিশের অন্য একটি টহল দলের গুলিতে মারা যায় সাইফুল ইসলাম নয়ন (২৮) নামে এক ব্যক্তি। পুলিশ দাবি করছে নিহত নয়ন ছিনতাইকারী দলের সদস্য। কিন্তু নয়নের স্বজন-পরিজন ও প্রতিবেশিরা জানান, তিনি ইসলামপুরে কাপড়ের ব্যবসায়ি। রাতে দোকান বন্ধ করে শান্তিনগরের বাসায় ফেরার পথে পুলিশ তাকে বিনা কারণে গুলি চালিয়ে হত্যা করে।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুক্তার হোসেন বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে জানান, ঘটনার পর থেকেই আরও দুই ছিনতাইকারি ও তাদের ব্যবহৃত সিএনজি ট্যাক্সি আটক করতে পুলিশ হন্যে হয়ে ঘুরছে। সাদা পোশাকে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নামলেও কোথাও তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুক্তার হোসেন জানান, ময়না তদন্ত শেষে পুলিশ কনস্টেবল মঞ্জুর এবং কথিত ছিনতাইকারী সাইফুলের লাশ তাদের আত্মীয়দের নিকট হস্তান্তর করা হয়। মঞ্জুরুলের লাশ দাফন করা হলেও সাইফুলের লাশ কোথায় দাফন হয়েছে তা জানে না পুলিশ।

ময়না তদন্তের পর কাকলী বেগম নামে এক মহিলা সাইফুলের বোন পরিচয়ে লাশ গ্রহণ করেন। তার দেওয়া তথ্যমতে সাইফুলের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের কাশিনাবাদ গ্রামে। ঢাকায় শান্তিনগরের ৩৯/৫ নম্বর বাসায় বোনকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন সাইফুল। তবে শান্তিনগরের ঠিকানাতে গিয়ে পুলিশ কাকলীদের কাউকে খুঁজে পায়নি।

রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পুলিশের অপর দুই সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে অনেক প্রশ্নের উত্তর বেরিয়ে আসবে বলে তদন্তকারী কর্মকর্তা মনে করেন। তবে এ মূহুর্তে তাদের কারো সঙ্গে কথা বলতে চিকিৎসকের নিষেধ থাকায় তদন্তে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময় : ১৭৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad