বুধবার (২৬ জুলাই) সকালে পুরান ঢাকার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা যায় বেশিরভাগ রাস্তাঘাট কোমর সমান পানির নিচে ডুবে আছে।
কোথাও কোথাও রাস্তা ডোবার পর পানি ঢুকে সয়লাভ হয়েছে আশা-পাশের দোকানগুলো।
পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার থেকে শুরু করে ভিক্টরিয়া পার্ক, লক্ষ্মীবাজার, নয়াবাজার, তাঁতিবাজার, বংশাল মোড়, ওয়ারী, ধোলাইখাল, মুরিগটোলাসহ বিভিন্ন জায়গা ডুবে আছে পানির নিচে। অপরদিকে দুপুর ২টার দিকে এসব এলাকায় গিয়েও খুব বেশি পরিবর্তন চোখে পড়েনি। এসব এলাকার ড্রেনেজ সিস্টেম ভাল না হওয়ায় পানি সরছে না। ফলে এখনো পানির নিচে এখনো ডুবে আছে এসব এলাকার রাস্তাঘাট।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সকালের দিকে ঝুম বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছেন এ এলাকায় বসবাসকারী মানুষ। বিশেষ করে সকালে অফিসগামী লোকজন ও স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। এ এলাকার অধিকাংশ রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই চলাচলের যানবাহন না থাকায় ভোগান্তি বাড়ে আরো। গার্মেন্টস শ্রমিক, নিম্নআয়ের নারী ও পুরুষদের কেউ কেউ ছুটছেন ছাতা নিয়ে, কেউ ছাতা ছাড়া ভিজে ভিজে।
আবার কেউ কেউ রেইনকোর্টকে করেছেন এই বরষায় একান্ত সঙ্গী। এক হাতে ছাতা মাথায় ধরে অন্য হাতে সাইকেল চালিয়েও অনেককে গন্তব্যে ছুটতে দেখা গেছে।
তবে বেশি বিপাকে পরেছেন এই এলাকার লৌহসামগ্রী ব্যাবসায়ীরা। বৃষ্টির পানি রাস্তা গড়িয়ে ঢুকে পড়েছে তাদের দোকানে। ফলে লোহা, স্টিলের এসব যন্ত্র ও শিটে মরিচা পড়ে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। এতে তাদের ক্ষতির পরিমাণ কোটির অংক ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন এই এলাকার একাধিক ব্যাবসায়ী।
ধোলাইখাল মোড়ের স্টিল শিট ব্যবসায়ী শাহিনূর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, রাস্তায় কোমর সমান পানি। আর আমার দোকানে প্রায় হাঁটু সমান পানি ঢুকেছে। এখানে আমিসহ প্রায় বেশিরভাগ দোকান স্টিল ও লোহার সামগ্রী বিক্রি করে থাকে। পানিতে এসব লোহাতে জং পড়ার আশংকা রয়েছে। তবে পানি দ্রুত নেমে গেলে ক্ষতি কিছুটা কম হতে পারে।
অপরদিকে ছেলেকে স্কুলে নিয়ে যেতে বের হওয়া রহিমা আফরোজ বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার ছেলের সকাল ১০টা থেকে ক্লাস শুরু হবে। বৃষ্টির কারণে বেরোতে পারছিলাম না। আবার যদি স্কুলে যেতে না পারে, সেখানে আরেক ঝামেলা। অনুপস্থিতির জন্য জরিমানা, রিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া, রাস্তায় প্রচন্ড জলাবদ্ধতা, সব মিলিয়ে এক বিশ্রি অবস্থা। কিন্তু তবুও থেমে থাকার উপায় নেই। ’
চন্দ্রা থেকে সদরঘাট চলাচলকারী আজমেরি গ্লোরী পরিবহনের চালক শহিদুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, ‘রাত ৩টা থেকে গাড়ির স্ট্যারিং এ বসা। রাস্তায় প্রচণ্ড যানজট। অবশেষে সদরঘাট পৌঁছালাম বেলা ১২টায়। রাস্তায় কতবার ঘুমিয়েছি তার হিসেব নেই। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৭
ডিআর/এএটি/