ঢাকা, বুধবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ মে ২০২৪, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাউফলের ক্লিনিকে প্রসূতির পেটে গজ রেখেই সেলাই!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৭
বাউফলের ক্লিনিকে প্রসূতির পেটে গজ রেখেই সেলাই! শেবাচিম এর আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ভুক্তভোগী গৃহবধূ

বরিশাল: বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) ও হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে মাকসুদা বেগম নামে এক নারীর পেট থেকে গজ বের করা হয়েছে। সাড়ে ৩ মাস আগে পটুয়াখালীর বাউফলের একটি ক্লিনিকে হওয়া অপর এক অস্ত্রোপচারের সময় ওই গজ তার পেটের ভেতরে থেকে যায় বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন স্বজনরা।

দীর্ঘদিন ওই নারীর পেটের মধ্যে গজ থাকায় সেগুলো পচে তার খাদ্যনালীতে ক্ষতের সৃষ্টি করেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এখন ওই নারী মুমূর্ষু অবস্থায় শেবাচিম হাসপাতালের নিবির পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন।

 

মাকসুদা পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার বিলবিলাস গ্রামের মো. রাসেল সরদারের স্ত্রী। গত মার্চ মাসে সিজার অপারেশনের মাধ্যমে মাকসুদা বেগম একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। ধারণা করা হচ্ছে ওই সময়ে গজ রেখেই তার পেট সেলাই করে দেয়া হয়।

বিষয়টি জানিয়ে মাকসুদার মা রোকেয়া বেগম সহ স্বজনরা বাংলানিউজকে জানান, গত মার্চে সন্তান প্রসব করানোর জন্য মাকসুদাকে নিয়ে বাউফলের নিরাময় ক্লিনিকে যাওয়া হয়। সেখান সিজারের মাধ্যমে মাকসুদার কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। এর কয়েকদিন পরে তারা বাড়ি চলে যান।

এর প্রায় একমাস পর মাকসুদা পেটে ব্যথা অনুভব করেন। এরপর ওই ক্লিনিকে নেয়া হলে তারা কিডনিতে সমস্যার কথা বলে ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন।

কিন্তু কোন আশানুরূপ ফল না পেয়ে পরবর্তীতে পটুয়াখালীতে ডা. জিএম নাজিবুল হককে দেখানো হলে তিনি হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন।

এরপর গত ১২ জুলাই শেবাচিম এ মাকসুদার পেটে অস্ত্রোপচার তার পেটের ভেতর থেকে গজ বের করা হয়।

শেবাচিম হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জিএম নাজিবুল হক জানান, এই রোগীর পরিবার আর্থিকভাবে স্বচ্ছল নয়। এক শুক্রবার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তাদের এ সমস্যার কথা শুনেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে বলি।

এরপর গত ১২ জুলাই অস্ত্রোপচার করে মাকসুদার পেট থেকে মফ (গজ) বের করা হয়। পেটের মধ্যে দীর্ঘদিন গজগুলো থাকায় খাদ্যনালীতে অনেকগুলো ছিদ্র হয়েছে। যেগুলোতে আর অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হচ্ছিলো না। যার ফলে অস্ত্রোপচারের সময় গজ বের করার পাশাপাশি বিকল্প পথে পায়খানার রাস্তা বের করে দেয়া হয়।

দুইদিন আগে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। তবে আজ একটু শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে মাকসুদার।

তিনি জানান, রোগী সুস্থ হলে ৩ মাস পরে তার বিকল্প পায়খানার রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৭
এমএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।