বিমানবন্দর রেলস্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, প্লাটফর্মের ভেতরেই মিলছে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর সিগারেট। স্টেশনের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে অস্থায়ী অনেক দোকানেও কোনো বাধা ছাড়াই বিক্রি হচ্ছে প্রাণঘাতী পণ্যটি।
নিত্যকার মতো মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সকালেও কমলাপুর, বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ধূমপানের এমন অবাধ চিত্র দেখা যায়।
সরেজমিন দেখা যায়, কমলাপুরের কোচ ওয়ার্কশপের এক কোনায় রেলওয়ের কিছু লোক টং দোকান খুলেছেন। যেখানে একইসঙ্গে সিগারেট বিক্রি হচ্ছে। আবার কিছু ফেরিওয়ালা এখান থেকে সিগারেট নিয়ে প্লাটফর্মে হরহামেশা বিক্রি করছেন।
রেলওয়ে নিরাপত্তা পুলিশ (জিআরপি) ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) কর্মকর্তাদের চোখের সামনেই এসব ঘটনা ঘটছে।
জানতে চাইলে তারা বলেন, তাদের চোখ ফাঁকি দিয়েই রেলস্টেশনে ধূমপান চলে। আর স্টেশন কৃর্তপক্ষের বক্তব্য- ‘তারা এ দুই বাহিনীকে চিঠি দিয়েছেন। এর বাইরে তারা ধূমপায়ীদের পেছনে দৌড়াতে পারেন না। ’
আরএনবির চিফ ইন্সপেক্টর মুজিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘সিগারেট নিয়ে হকার দেখলেই আমরা বের করে দেই। এর বেশি সাজা দিতে পারি না। আর সিগারেট নিয়ে হকাররা ট্রেনে আসে, ট্রেনেই চলে যায়। ’
তবে বিমানবন্দর স্টেশনে আরএনবি বাহিনী সদস্যের হাতেই সিগারেট দেখা গেছে। আর যেসব হকার সিগারেট নিয়ে স্টেশনে ঢুকেছে তারা বলছে, কেউ তাদের প্রবেশে বাধা দেয়নি।
বিমানবন্দর স্টেশনের প্লাটফর্মে ধূমপান করতে দেখা গেছে স্কুলের ছাত্রদের। কমলাপুর রেলস্টেশনের প্লাটফর্মে দায়িত্বরত দুই আরএনবি সদস্যের সামনেই বিক্রি হচ্ছিলো সিগারেট। এ বিষয়ে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বলেন, ‘স্টেশনের ভেতর থেকে সিগারেট ফেরিওয়ালাদের বের করে দিলেও সুযোগ বুঝে আবার ঢুকে পড়ে’।
তবে আরএনবি’র ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, স্টেশনে ধূমপানবিরোধী অভিযান পরিচালনা তাদের কাজ নয়। এটা পুলিশের ওপর ন্যস্ত। কিন্তু পুলিশ এটা করে না।
জানতে চাইলে কমলাপুর রেলওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসিন ফারুক বলেন, ‘রেলস্টেশনে প্রকাশ্যে ধূমপানের বিরুদ্ধে তারা প্রতিদিনই অভিযান চালান। অভিযান টের পেয়ে যে দু’একজন সিগারেট বিক্রি করে তারা পালিয়ে যায়। মাঝেমধ্যে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়।
কমলাপুর রেলস্টেশন ম্যানেজার শীতাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘রেলস্টেশনের ভেতরে টং দোকান তুলে দিতে তিনি এখনই পরিদর্শনে যাচ্ছেন। ’
বিমানবন্দর রেলস্টেশন মাস্টার মাহবুবুর রহমান বলেন, রেলস্টেশনের ভেতরে হকার ও সিগারেট বিক্রি বন্ধে তারা আরএনবিকে চিঠি দিয়েছেন। এর বাইরে তাদের করণীয় নেই।
বাংলাদেশে আইনে পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহনে ধূমপান নিষিদ্ধ। এর বাইরে রেলওয়ে আলাদাভাবে ধূমপান নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
ধুমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি এ বিধান লঙ্ঘন করলে অনধিক তিনশ’ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আর একই ব্যক্তি দ্বিতীয়বার বা বার বার একই ধরনের অপরাধ করলে তিনি এ দণ্ডের দ্বিগুন দণ্ডিতের বিধান রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৭
এসএ/জেডএস