ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘আমাকে স্বৈরাচার বলা হয়, আমি ক্ষমতা নিতে চাইনি’

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১২ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১৭
‘আমাকে স্বৈরাচার বলা হয়, আমি ক্ষমতা নিতে চাইনি’

জাতীয় সংসদ  ভবন থেকে: প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনার শুরুতেই নিজের দুঃখভরা জীবনের গল্প শোনালেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি বলেন, আমাকে মাঝে মধ্যে বলা হয় স্বৈরাচার। আমি ক্ষমতা নিতে চাইনি। আমার কোনো দোষ ছিলো না। আমি তো নির্বাচন দিয়েছিলাম। কিন্তু কেউ নির্বাচনে অংশ নেয়নি।‌

বুধবার (২৮ জুন) বিকেলে  জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে একথা বলেন এ সাবেক রাষ্ট্রপতি। বাজেট আলোচনার শুরুতে নিজের অতীতে ফিরে যান তিনি।



জাতীয় পার্টি গঠনের ইতিহাস তুলে ধরে এরশাদ বলেন, জাস্টিস আব্দুস সাত্তার নির্বাচন করবেন। আমি তখন সেনাবাহিনীর প্রধান। আমরা সাহায্য করেছিলাম ক্ষমতায় আসার জন্য। এক বছরের মাথায় তিনি (সাত্তার) বললেন তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা দুর্নীতিবাজ। আমি দেশ পরিচালনা করতে অপারগ। সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চাই। আমরা প্রস্তুত ছিলাম না। দেশ পরিচালনা করা সহজ ব্যাপার  নয়। আমি চাইনি। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়।

তিনি বলেন, আমি সেদিন বলেছিলাম শৃঙ্খলা ফিরে আসার পর আমি নির্বাচন দিয়ে ব্যারাকে ফিরে যেতে চাই। আমার কথা রেখেছিলাম। ১৯৮৪ সালে নির্বাচন দিয়েছিলাম। সেই নির্বাচনে যদি সবাই অংশ নিতো তাহলে ব্যারাকে ফিরে যেতে পারতাম। দুঃখের বিষয় তখন তারা কেউ অংশ নেয়নি। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত ও হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেননরাও অংশ নেননি। ফলে ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টি গঠন করতে হয়েছিল। আমি আমার প্রতিশ্রুত রক্ষা করেছিলাম। আমার কোনো দোষ নেই। অথচ আমাকে মাঝে মধ্যে বলা হয় স্বৈরাচার।

তিনি আরও বলেন, ক্ষমতা হস্তান্তর করার কোনো উপায় ছিল না। আমাকে বাধ্য হয়ে ক্ষমতা নিতে হয়। তারপর আমার দুর্বিষহ জীবন। ৬টি বছর কারাগারে কাটাতে হয়েছে। কথা বলার লোক নেই। আমি একা। নির্জন কারাগার। পড়ার বই নেই। গাছের নিচে বসে সময় কাটাতাম। দুর্বিষহ যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে ৬টি বছর। আমার স্ত্রীকে তারা জেলে নিয়ে গিয়েছিলেন। আমার শিশু সন্তানকে জেলে নিয়েছিলেন। তার জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছিলো।

এরশাদ আরও বলেন, আমি চাঁদ দেখতে পারিনি ৬ বছর। তারা দেখতে পারিনি ৬ বছর। ঈদের জামাতে অংশ নিতে পারিনি। ইফতার-সেহরির সময় ডিআইজিকে বলেছিলাম একটু মিষ্টি দিতে পারবেন। তখন ডিআইজি বলেছিলেন এর বেশি বরাদ্দ নেই। দেওয়া যাবে না। এসব কথা মনে আছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৪ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১৭
এসকে/এসএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।