কুড়িগ্রাম: অবিরাম বর্ষণ এবং উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের নদ-নদীগুলোতে আবারো পানি বাড়তে থাকায় ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ধরলার ভাঙনে শুক্রবার ভোরে সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের নানকার হাওরার টেক গ্রাম মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে ।
একইভাবে চর বড়াইবাড়ীতে ধরলা নদীর পানির প্রবল স্রোতে পানি উন্নয়ন বোর্ড- পাউবো’র ৭৫০ মিটার রিভেটমেন্টের দু’টি স্থানে প্রায় ১৫০ মিটার পিচিং করা ব্লক ধসে পড়েছে।
এছাড়াও গত ৭২ ঘন্টায় ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমোর ও সোনাভরি নদীর ভাঙনের কবলে ৪টি উপজেলার ২৪ গ্রামে গৃহহীণ হয়ে পড়েছে ১৮৭টি পরিবার।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে জানান, চর বড়াইবাড়ী বাজারের সামনে ১৫০ মিটার পিচিং করা ব্লক ধসে পড়েছে। এর ফলে বিলীন হয়েছে চর বড়াইবাড়ী হাটখোলা জামে মসজিদ এবং বাজারের অধিকাংশ এলাকা। ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা শুক্রবার অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত নানকার হাওরার টেক গ্রামের শেষ চিহ্নটুকুও ধরলা নদীগর্ভে চলে গেছে। গ্রামটির ৩৫টি পরিবার এখন স্থানীয় আবাসন প্রকল্পের মাঠে ও বাঁধের রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে। জগমোহনের চর, চর বড়াইবাড়ী ও কাইম বড়াইবাড়ী গ্রামেও ২৩টি পরিবার গৃহহীণ হয়েছে।
রাজিবপুর ও নাগেশ্বরী উপজেলার সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানগণ জানান, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমোর ও সোনাভরির ভাঙনে সদরের চর রসুলপুর, ভইষের কুটি ও চর রাউলিয়ায় ১০টি পরিবার, রাজিবপুরের ভেলামারী, বড়বেড়, মেম্বার পাড়া ও মুন্সিপাড়া গ্রামে ৫৯টি পরিবার গৃহহীণ হয়ে পড়েছে। নাগেশ্বরীর কয়েকটি গ্রামের ১৭টি পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে।
পাউবো’র স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ৭২ ঘন্টায় পানি বেড়েছে ধরলায় ১ দশমিক ১০ মিটার, ব্রহ্মপুত্রে ৭০ সে.মিটার, তিস্তায় ৬৮ সে.মিটার এবং দুধকুমোরে ৭৬ সে.মিটার।
কুড়িগ্রাম পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল মোস্তফা আসাফুদ্দৌলা বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে জানান, পানি বাড়তে থাকায় বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। বরাদ্দ না থাকায় ভাঙন ঠেকাতে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১০