ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সিলেট রুটে যাত্রী দুর্ভোগ, নেই বিশেষ ট্রেন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৯ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৭
সিলেট রুটে যাত্রী দুর্ভোগ, নেই বিশেষ ট্রেন সিলেট রুটে যাত্রী দুর্ভোগ, নেই বিশেষ ট্রেন- ছবি: বাংলানিউজ

সিলেট: ছয়টি আন্তঃনগর ট্রেন সিলেট রুটে। পারাবত ব্যতীত পাঁচটিরই জরাজীর্ণ অবস্থা। সিট-দরজা ভাঙা, ফ্যান চলেনা, লাইট জ্বলেনা। বাথরুমের অবস্থাও করুন।

এমন দুরবস্থা যাত্রীদের সেবায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ উদাসীনতাই প্রমাণ। এতো বঞ্চনা স্বত্ত্বেও সিলেট রুটে ট্রেনে ভ্রমনেই নিরাপদ মনে করছেন যাত্রীরা।

ঈদে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম রুটে যাত্রীদের সুবিধায় বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সিলেটের বেলায় নেই। এমনকি চলাচলকারী ট্রেনগুলোতেও নতুন বগি সংযোজন করা হয়নি এবারের ঈদে। এ কারণে বাড়ি ফেরা মানুষকে টিকিট বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে।

যাত্রীদের অভিযোগ, কাউন্টারে আসলে বলা হয় ‘সিট নেই’ স্ট্যান্ডিং টিকিট নিতে পারবেন। বিরক্ত হয়ে অনেকে বাসে যাত্রা করেন। কেউবা বাধ্য হয়ে স্ট্যান্ডিং টিকিট নিয়ে ট্রেনেই যাত্রা করতে দেখা যায়। এছাড়া ভিআইপি কোটা দেখিয়ে সিট আটক করে অতিরিক্ত টাকা পেলে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এমন অভিযোগও করেন যাত্রীরা।
সিলেট রুটে যাত্রী দুর্ভোগ, নেই বিশেষ ট্রেন- ছবি: বাংলানিউজ
সিলেট রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানান, সিলেট-ঢাকা রুটে চলাচলকারী আন্তঃনগর ট্রেনের মধ্যে পারাবত, জয়ন্তিকা, উপবন ও চট্টগ্রাম রুটে উদয়ন এক্সপ্রেস চলছে ১৬টি বগি নিয়ে। যার মধ্যে পারাবতে সংযুক্ত দু’টি করে এসি ও কেবিন, জয়ন্তিকায় একটি এসি ও কেবিন রয়েছে তিনটি, উপবনে এক এসি ও দু’টি কেবিন।

এছাড়া ১৪টি বগি নিয়ে ঢাকা রুটে কালনী এক্সপ্রেসের উদ্বোধন হলেও এখন সাতটি বগিতে নেমে এসেছে। এই ট্রেনে নেই কোনো কেবিন বা এসি বগি। চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ১৫টি বগি নিয়ে চলছে। যার মধ্যে রয়েছে একটি এসি ও দু’টি কেবিন।

সরেজমিন দেখা যায়, পারাবত ছাড়া অন্য ট্রেনগুলোর ভেতরের অবস্থা খুবই নাজুক। বিশেষ করে পাহাড়িকা ট্রেনের ভেতরের পরিবেশ অন্য রুটে চলাচলকারী লোকাল ট্রেনের চেয়েও খারাপ বলে অভিযোগ যাত্রীদের। ট্রেনটির অনেক বগিতে বাতি জ্বলে না, ফ্যান চলে না। সুইচগুলোও ভাঙা, পরিবাহী বিদ্যুতের খোলা তারগুলো জানান দিচ্ছে দুর্ঘটনা আশঙ্কার। বাথরুমের ঢোকতে গেলে ওপর থেকে গড়িয়ে পড়া পানিতে ভিজে যায় গায়ের জামা-কাপড়। এতো দুরাবস্থার পর রয়েছে নিরাপত্তার অভাব।
সিলেট রুটে যাত্রী দুর্ভোগ, নেই বিশেষ ট্রেন- ছবি: বাংলানিউজ
পেশায় ঠিকাদার চট্টগাম হাটহাজারির বাসিন্দা পাহাড়িকার যাত্রী আবু তালেব বাংলানিউজকে বলেন, সড়ক পথে দ্রুত চালানোর অসুস্থ প্রতিযোগী থাকে বাস চালকদের। শুধু নিরাপদে বাড়ি পৌঁছতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ট্রেনে ভ্রমন করেন তিনি।

সিলেট রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার কাজী শহিদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, টিকিট পর্যাপ্তই ছিলো। ভ্রমনের ১০দিন আগে থেকে যাত্রীরা সব টিকিট নিয়ে গেছেন। যাত্রীদের চাপ বেশি থাকায় আসন সংকট দেখা দেয়। অতিরিক্ত বগি থাকলে আসন সংকট কিছুটা কাটিয়ে ওঠা যেতো।
সিলেট রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক- ছবি: বাংলানিউজ
সিলেট রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, অর্থমন্ত্রীর ডিও লেটারের প্রেক্ষিতে উদয়ন ও পাহাড়িকা ট্রেনে দু’টি শোভন বগি সংযুক্ত করা হয়েছে। এবার ঈদে বিশেষ ট্রেন ও বগি বরাদ্দের জন্য চিঠি দিয়েছিলাম।

তিনি বলেন, ‘ট্রেনের জরাজীর্ণ বগিগুলোর পরিবর্তে নতুন বগি দেওয়ারও আবেদন করেছি ৫-৬ মাস আগে। দেখা যাক, হয় কি-না?’

তবে ভিআইপিদের জন্য টিকিট সংরক্ষণে রাখলেও দালাল মারফত বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৯ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৭
এনইউ/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।