ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

সাতক্ষীরার ৪০০ বছরের ‘গুড়পুকুর’ মেলা শুরু রোববার

মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১১
সাতক্ষীরার ৪০০ বছরের ‘গুড়পুকুর’ মেলা শুরু রোববার

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরায় ঐতিহ্যবাহী ৪০০ বছরের পুরানো ‘গুড়পুকুর মেলা’ আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে। মেলা উপলক্ষে জেলা প্রশাসন সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।



মেলা সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বেশ কয়েকটি বৈঠক করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে মেলা ব্যবস্থাপনা ও তদারকি কমিটি। তবে ঐতিহ্য আর ব্যপ্তির বিচারে তেমন প্রচার না হওয়ায় এবারের মেলা জমবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

এর আগে দীর্ঘ আট বছর বন্ধ থাকার পর গত বছর থেকে ছোট পরিসরে মেলা শুরু হলেও মেলার আগের সেই জৌলুস ছিল অনুপস্থিত। তবে ঐতিহ্যবাহী এ মেলাটি ধরে রাখতে দেরিতে হলেও শুরু হয়েছে নানামুখী তৎপরতা।

প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মাত্র পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে একটি সিনেমা হল ও সার্কাস প্যান্ডেলে বোমা হামলা হয়। এতে তিনজন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়। এরপর থেকে দীর্ঘ আট বছর গুড়পুকুর মেলা বন্ধ ছিল।

প্রতিবছর বাংলা ভাদ্র মাসের ৩১ তারিখে হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্পদেবী মনসাপুজোর মধ্য দিয়ে সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল এলাকায় প্রাচীন আমলের গুড়পুকুরকে ঘিরে বসতো গুড়পুকুরের মেলা। একই দিনে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পালন করতেন বিশ্বকর্মা পূজা। তবে বিভিন্ন কারণে পরবর্তী সময়ে মেলার শুরুর তারিখ দু’একদিন পিছিয়েও শুরু করতে দেখা গেছে। যেমন এবারের মেলা শুরু হচ্ছে ০৩ আশ্বিন (১৮ সেপ্টেম্বর)। ঐতিহ্য মেলাটি মূলত মাসব্যাপী অনুষ্ঠিত হলেও গতবছর এর ব্যাপ্তি ছিল ১৫ দিন আর এবার মেলা চলবে ১৯ দিনব্যাপী।

মেলায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা আসতেন হরেক পদের পসরা নিয়ে। কাঠের তৈরি কলম থেকে মনোলোভা আসবাবপত্র, বাঁশ, বেত, মাটি ও লোহার তৈরি হস্তশিল্প, শিশুদের হরেক পদের রকমারি খেলনা, মনোহারি সামগ্রী, নানা পদের মিষ্টি ও মৌসুমী ফলের সম্ভার নিয়ে রমরমা পরিবেশ বিরাজ করতো মেলায়।

ক্রমশ সার্কাস, যাত্রা, পুতুল নাচ, জাদু প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মেলা পরিণত হতো মহামিলন উৎসবে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মেলার সেই আগেকার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে এ বছর মেলা চলাকালিন মেলা প্রাঙ্গনসহ জেলা শহরের আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বাধীন সার্বক্ষণিক পুলিশ টিম নিয়োজিত থাকবে।

এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ স্পটগুলোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি নিয়মিত টহলে থাকবে র‌্যাব ও বিজিবি দল।

এর পাশাপাশি আনসার ভিডিপি, রোভার স্কাউট ও স্থানীয় যুবকদের সমন্বয়ে স্বেচ্ছাসেবক দল নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পালন করবে। মেলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষে তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার জন্য কাজ করবে বিশেষ মেডিকেল টিম।

প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত শহরের নিউ মার্কেটের সামনে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে মেলার সার্বিক তদারকি করা হবে। মেলায় শহরের শহীদ কাজল সরণি, পলাশপোল স্কুলমাঠ, সরকারি হাইস্কুল মাঠসহ বিভিন্ন সড়কে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত না করে স্টল স্থাপনের সুযোগ রাখা হয়েছে। এছাড়া মেলার পরিষ্কার-পরিছন্নতা রক্ষার্থে ও সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে সাতক্ষীরা পৌরসভা বিভিন্ন পয়েন্টে ২০টি গণশৌচাগার স্থাপন করেছে।

মেলায় দোকানদারদের বসার স্থান, ভাড়া, খাজনা প্রভৃতি বিষয়ে তদারকির জন্য কাজ করবে মেলা ব্যবস্থাপনা ও তদারকি কমিটি।

বন্যার কারণে সীমিত আকারে ১৯ দিন চলে ৬ অক্টোবর মেলা শেষ হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।