ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঈদে বাড়ি ফেরা: এবারও দায়সারা সিদ্ধান্ত সরকারের

এমএকে জিলানী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১০
ঈদে বাড়ি ফেরা: এবারও দায়সারা সিদ্ধান্ত সরকারের

ঢাকা: ঈদে নদীপথে বাড়ি ফেরা ও নৌ-যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বরাবরের মতো এবারও কিছু দায়সারা গোছের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে লঞ্চ মালিকদের চেয়ে যাত্রীদের করণীয় নির্ধারনেই জোর দেওয়া হয়েছে বেশি।



তবে এবারের ঈদে লঞ্চে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হবে না বলে জোর দিয়ে জানিয়েছেন নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান।    

সামনের ঈদে নদীপথে বাড়ি ফেরা ও যাত্রাপথে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নৌ মন্ত্রী শাজাহান খানের সভাপতিত্বে বৈঠক হয়। বৈঠকে লঞ্চ মালিকসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে নৌ মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঈদকে কেন্দ্র করে নৌ পথের ভাড়া বাড়ানোর প্রশ্নই ওঠে না। ’

উল্লেখ্য, নৌপথে বিভিন্ন রুটের ভাড়া নির্ধারণ করে ‘ফেয়ার চার্ট’ তৈরি রয়েছে। তবে ঈদের সময় এ চার্ট খুব একটা মানা হয় না। লঞ্চ মালিকরা ঈদের আগে নির্ধারিত ভাড়া থেকে যাত্রীদের কিছুটা ছাড় দিলেও ঈদের সময় সুযোগ বুঝে নির্ধারিত ভাড়ার দ্বিগুনেরও বেশি ভাড়া নেন এমনটাই সাধারণ চিত্র।

বিষয়টি মন্ত্রীর নজরে আনা হলে তিনি বলেন, ‘ঈদের আগে ছাড় দিলে ঈদের সময়ও ছাড়কৃত ভাড়াতেই যাত্রী পরিবহন করা হবে। ’

তবে মন্ত্রীর সামনেই লঞ্চ মালিকরা ভিন্নমত দেন।

লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি কে এম মাহমুদ উর রহমান বলেন, ‘ঈদের সময়ে যাত্রীর চাপ বেশি থাকে। এ সময়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। ‘ফেয়ার চার্ট’ অনুযায়ী ভাড়া নেওয়া হবে। ’

এ পর্যায়ে নৌমন্ত্রী বিষয়টি দ্রুত এড়িয়ে যাওযার জন্য বলেন, ‘ঠিক আছে, নির্ধারিত ভাড়া থেকে বেশি আদায় হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

এসময় নৌ সচিব আবদুল মান্নান হাওলাদার সাংবাদিকদের জানান, প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ নৌ পথে যাতায়াত করে। ঈদে এই সংখ্যা বেড়ে এক থেকে দেড় লাখ হয়।

ঈদে এই বাড়তি মানুষের বাড়ি ফেরার জন্য সরকার কী ব্যবস্থা নিচ্ছে জানতে চাইলে নৌমন্ত্রী  বলেন, ‘সরকারের যে কয়টা নৌ যান আছে সেগুলো পর্যায়ক্রমে আসা-যাওয়া করবে। ’

কিন্তু সরকারের কয়টা যান আছে, এগুলো কোন রুটে যাতায়াত করবে, প্রতিদিন কয়টা ট্রিপ হবে এসব প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে পারেনি নৌ মন্ত্রী।

বাড়তি যাত্রীর চাপ সামলাতে মালিক পক্ষের দায়িত্ব কী হবে তা এড়িয়ে গিয়ে নৌমন্ত্রী বার বার যাত্রীদের করণীয় দিকগুলোই তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘সম্ভাব্য দূর্ঘটনা এড়াতে যাত্রীদের সচেতন হতে হবে। লঞ্চের ছাদে ওঠা যাবে না। ’

উল্লেখ্য, গত বছর ঈদের আগে (২০০৯ সালের ৬ আগস্ট) নদীপথে বাড়ি ফেরা ও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নৌ মন্ত্রীর সভাপতিত্বে একই ধরনের বৈঠক হয়। ওই বৈঠকেও যাত্রীদের থেকে ভাড়া বেশি না নেওয়া এবং অতিরিক্ত যাত্রী বহন নিষিদ্ধ করা হয়।

অথচ গত বছর ঈদের আগের দিন রাতে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে কোকো-৪ নামে একটি লঞ্চ দূর্ঘটনায় পড়লে প্রায় ১০০ জন যাত্রী প্রাণ হারান।

এছাড়া গতবারও দ্বিগুন তিনগুন ভাড়া গুনে স্বজনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাড়ি ফেরেন রাজধানীর অনেক মানুষ।

বাংলাদেশ সময় : ১৭১৫ ঘণ্টা, ১৯ আগস্ট, ২০১০।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।