ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবার মানোন্নয়নে বিমানকে আলটিমেটাম

ইশতিয়াক হুসাইন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১০
গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবার মানোন্নয়নে বিমানকে আলটিমেটাম

ঢাকা: গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবার মানোন্নয়নে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষকে তিন মাসের আলটিমেটাম দিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।

এসময়ের মধ্যে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কাজের মান উন্নত করা না হলে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে এই দায়িত্ব একাধিক কোম্পানিকে দেওয়া হবে।

     

গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং নিয়ে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি আর নিম্নমানের কাজের জন্যই বিমানকে এই সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে মন্ত্রণালয়।  
 
সম্প্রতি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সংক্রান্ত এক বৈঠকে এই আলটিমেটাম দেওয়া হয় বলে বৈঠকে উপস্থিত একটি সূত্রে জানা গেছে।  

মন্ত্রণালয়ের এ আলটিমেটামের কথা জানিয়ে বিমানের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) জামাল উদ্দিন  বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘বিমান অবশ্যই গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কাজ করতে সক্ষম। তারপরও আলটিমেটাম দেওয়ার অর্থ হচ্ছে বিমান এই কাজ করতে পারছে না। ’

তিনি বলেন, ‘বিমান পাবলিক লিমিটেড হওয়ার পর থেকে সবকিছু ঠিকমতোই চলছে। যেসব সমস্যা রয়েছে তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে। বিদেশিদের হাতে বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কাজ তুলে দিতেই এ ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বিমান ঠিকমতো কাজ চালানোর পরও যদি কেউ এই পাঁয়তারা করে থাকে তাহলে বুঝতে হবে এখানে কারো না কারো স্বার্থ রয়েছে। ’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিমানের বিভিন্ন খাতে লোকসান হলেও গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং খাত থেকে প্রতি বছর দুইশ’ কোটি টাকা আয় হয়।

দীর্ঘদিন ধরে নিম্নমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের জন্য দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্স কোম্পানি বিমানের ওপর ক্ষুব্ধ। নিয়মিত চার্জ দিয়েও তারা সেবা পাচ্ছে না। বিমানবন্দরের দেশি-বিদেশি সব এয়ারলাইন্সের মালামাল লোড-আনলোড, বোডিং কার্ড ইস্যু, এয়ারক্রাফট ল্যান্ড করানো, পার্কিং, উড়োজাহাজে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও এসি সরবরাহ , হাই লিফটার, লেডার, টো ট্রাক্টর সরবরাহ, সিঁড়ি লাগানো, বাস সার্ভিস, ইঞ্জিনিয়ারিং সাপোর্ট, কার্গো সার্ভিস, খাবার পরিবেশনসহ নানা কর্মকাণ্ড গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত।    
 
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের যাচ্ছেতাই কর্মকান্ডের কারণে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তার সুনাম হারাচ্ছে।

বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে জানিয়েছে, শাহজালালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের মান উন্নত না হলে তারা ব্যবসা গুটিয়ে নেবেন। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ বিমানের ট্যাক্সিওয়ে, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংসহ বিভিন্ন কারণে ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছিল। এক পর্যায়ে তারা ২০০৯ সালের ২৮ মার্চ বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়েও নেয়।  

বিমানের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে চোরাচালান ও লাগেজ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এসব দিক মাথায় রেখে মন্ত্রণালয় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ অন্য প্রতিষ্ঠানকে দেওয়ার চিন্তা করছে।  

সংশিষ্টদের ধারণা, প্রতিযোগিতার মাধ্যমে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজটি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাবে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিকভাবে বিমানবন্দরের সুনামও বাড়বে। সেইসঙ্গে বাড়বে যাত্রীসেবার মান।

বাংলাদেশ সময় ১৬৩৫ ঘণ্টা, ১৯ আগস্ট, ২০১০ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।