ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রানা প্লাজা

চার বছরেও শুরু হয়নি তিন মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ

মবিনুল ইসলাম, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭
চার বছরেও শুরু হয়নি তিন মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ

ঢাকা: ঢাকার সাভারে ইতিহাসের ভয়াবহতম রানা প্লাজা ধসের ঘটনার চার বছর পার হয়ে গেছে। হত্যা, ইমারত আইন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা তিন মামলার একটিরও সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি।

মামলা তিনটির মধ্যে হত্যা মামলাটি ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এসএম কুদ্দুস জামান, দুর্নীতির মামলাটি বিভাগীয় বিশেষ জজ এম আতোয়ার রহমান ও ইমারত নির্মাণ আইনের মামলাটি ঢাকার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে বিচারাধীন।
 
হত্যা মামলায় গত বছরের ১৮ জুলাই অভিযোগ (চার্জ) গঠন করে সাক্ষীদের সমন দেন জেলা জজ এসএম কুদ্দুস জামানের আদালত।

কিন্তু ইতোমধ্যে মামলার আসামি আবু বকর সিদ্দিক মারা গেছেন বলে তার আইনজীবী আদালতকে অবহিত করেন।  
 
আইনজীবীর বক্তব্য যাচাই করে সাভার থানার ওসিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো প্রতিবেদন দাখিল করেননি ওসি।
 
এছাড়া এ মামলায় ৭ আসামি আব্দুস সামাদ, জামসেদুর রহমান, আবুল হাসান, বেলায়েত হোসেন, শহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলী ও রেফাত উল্লাহ’র ক্ষেত্রে মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।  
 
মামলার নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, সাত আসামির ক্ষেত্রে মামলা স্থগিত হওয়ায় তাদের বাদ দিয়েই বিচার শুরু হবে, না নথি বিভাজন করে যে সকল আসামির ক্ষেত্রে মামলা স্থগিত হয়নি তাদের আলাদা করে বিচার হবে- এ নিয়ে সংশিষ্ট আদালতের জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর খন্দকার আব্দুল মান্নান অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে পরামর্শ করতে সময় চান। আদালত তা মঞ্জুর করলে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ ঝুলে যায়। প্রতি ধার্য তারিখে ৫ জন করে সাক্ষী আদালতে হাজির হলেও সাক্ষ্যগ্রহণ করা যাচ্ছে না।  
 
ইতোমধ্যে মামলার ৪১ আসামির মধ্যে ৩০ জন জামিন পেয়েছেন। তিন আসামি সোহেল রানা, সারওয়ার কামাল ও রফিকুল ইসলাম কারাগারে আটক আছেন। বাকি ৭ আসামি পলাতক।  
 
আগামী ৭ মে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য আছে।  
 
দুর্নীতির মামলাটি বিচারাধীন ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে।  

২০১৪ সালের ১৬ জুলাই মামলাটির চার্জশিট দাখিল করা হয়। বিচারের জন্য প্রস্তত হওয়ার পর চার্জশিটের কিছু ত্রুটি ধরা পড়লে গত বছরের ০৬ মার্চ মামলাটি অধিকতর তদন্তে পাঠান আদালত। ফলে চার্জ শুনানিও বিলম্বিত হয়ে পড়ে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশ।  

আগামী ০৮ মে মামলাটির চার্জ শুনানির জন্য দিন ধার্য আছে।  
 
ইমারত নির্মাণ আইনের মামলাটি ঢাকার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে বিচারাধীন আছে। মামলাটিতে ২০১৬ সালের ১৪ জুন চার্জ গঠন করেন আদালত। কিন্তু চার্জ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তিন আসামি জেলা জজ আদালতে রিভিশন করলে মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ ঝুলে যায়। তিনটি রিভিশনের একটি খারিজ হলেও বাকি দু’টির শুনানি না হওয়ায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করা যাচ্ছে না।

তিন মামলার সাক্ষী মোট ৭৪৭ জন। তাদের মধ্যে রয়েছেন নিহতদের স্বজনেরা, জীবিত উদ্ধারকৃতরা, বিভিন্ন হাসপাতালের ডাক্তার-নার্স, উদ্ধারকর্মী, বিভিন্ন সংস্থার তদন্ত কমিটির কর্মকর্তা, রানা প্লাজার বাণিজ্যিক ভবনে গার্মেন্টস কারখানা স্থাপনে সংশ্লিষ্টরা, নকশা অনুমোদনকারী, নিরপেক্ষ সাক্ষী ও মিডিয়া কর্মীরা।
 
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ইতিহাসের ভয়াবহতম রানা প্লাজা ধসের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় দু’টি মামলা দায়ের করা হয়। ২০১৪ সালের ১৫ জুন দুর্নীতির মামলাটি দায়ের করে দুদক।

বাংলাদেশ সময়: ০০৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৭
এমআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।