ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

ছেলেসহ রাগীব আলী আদালতে, আত্মসাৎ মামলার রায়ের অপেক্ষা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০১৭
ছেলেসহ রাগীব আলী আদালতে, আত্মসাৎ মামলার রায়ের অপেক্ষা আদালতে রাগীব আলী

সিলেট: তারাপুর চা বাগানের হাজার কোটি টাকা মূল্যের দেবোত্তর সম্পত্তি আত্মসাৎ মামলার রায় শোনাতে আদালতে আনা হয়েছে রাগীব আলী ও তার ছেলে আব্দুল হাইকে।

বৃহস্পতিবার (০৬ এপ্রিল) বেলা পৌনে একটার দিকে তাদেরকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সিলেটের মহানগর মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. সাইফুজ্জামান হিরোর আদালতে হাজির করা হয়েছে।  

দুপুরে মামলাটির রায় রায় ঘোষণা করবেন আদালত।

মামলার ৬ আসামির পলাতক অন্য চারজন হলেন- রাগীব আলীর জামাতা আবদুল কাদির, মেয়ে রুজিনা কাদির, রাগীব আলীর আত্মীয় মৌলভীবাজারের দেওয়ান মোস্তাক মজিদ ও তারাপুর চা বাগানের সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্ত।

আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিচার শেষে ২৬ ফেব্রুয়ারি রায়ের দিন ধার্য করেছিলেন আদালত। কিন্তু মামলায় অভিযুক্ত রাগীব আলীর ছেলে আবদুল হাইয়ের মানসিক স্বাস্থ্যগত কারণ দেখানোয় রায় ঘোষণা পিছিয়ে যায়।

৩০ মার্চের মধ্যে আব্দুল হাইয়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন দাখিলে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মানসিক স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসককে নির্দেশ দেন আদালত। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে প্রতিবেদন না দেওয়ায় ফের ৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত। সে প্রেক্ষিতে গত ০২ এপ্রিল আদালতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন দেওয়া হয়। তাতে স্বাস্থ্যগত মানসিক সমস্যা ধরা পড়েনি।

প্রতিবেদন দাখিলের পর পরই উচ্চ আদালতের নির্দেশে আদালত স্থগিত করা রায় ঘোষণার নতুন দিন ০৬ এপ্রিল ধার্য করেন বলেও জানান সরকারি এই কৌশলী।

আদালতে রাগীব আলীর ছেলে আব্দুল হাইওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে মাহবুবুল হক আদালতকে জানান, ২৫ মার্চ সিলেটে জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহলে অভিযান চলাকালে বোমা হামলায় হতাহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় প্রতিবেদন দাখিলে দেরি হয়।

গত ০২ ফেব্রুয়ারি তারাপুর চা বাগানের ভূমি বন্দোবস্তের নামে ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতি মামলার রায় দেন একই আদালত। রায়ে রাগীব আলী ও তার ছেলে আব্দুল হাইকে ১৪ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।

এছাড়া মামলায় আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যুর পর পলাতক থাকাবস্থায় পত্রিকা প্রকাশের কারণে রাগীব আলী ও তার ছেলে আব্দুল হাইয়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা অন্য একটি মামলার রায়ে তাদেরকে এক বছর করে কারাদণ্ড দেন মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালত। বর্তমানে এসব মামলায় কারাগারে সাজা ভোগ করছেন রাগীব আলী ও তার ছেলে আব্দুল হাই।

দেবোত্তর সম্পত্তির চা বাগান বন্দোবস্ত নেওয়া ও চায়ের ভূমিতে বিধি বহির্ভূত স্থাপনা করার অভিযোগে ২০০৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেটের তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম আবদুল কাদের বাদী হয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতি ও সরকারের এক হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দু’টি করেন। তবে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে মামলার নিষ্পত্তি করে দেয় পুলিশ।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিবের স্বাক্ষর জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে দেবোত্তর সম্পত্তি দখলের দু’টি মামলা গত বছরের ১৯ জানুয়ারি পুনরুজ্জীবিত করার নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট।

গত বছরের ১০ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল এবং ১২ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে এদিনই রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাই সপরিবারে ভারতে পালিয়ে যান। ১২ নভেম্বর দেশে ফেরার পথে জকিগঞ্জ সীমান্তে আবদুল হাই ও ২৩ নভেম্বর ভারতের করিমগঞ্জে গ্রেফতার হন রাগীব আলী।

গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর থেকে আলোচিত এ মামলায় ১৪ সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। গত ১৭ জানুয়ারি রাগীব আলীর পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দেন তারই মালিকানাধীন মালনিছড়া চা বাগানের সহকারী ম্যানেজার মাহমুদ হোসেন চৌধুরী ও আব্দুল মুনিম।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৭
এনইউ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।