ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মুফতি হান্নান-বিপুলের পর ফাঁসির রায় শুনলেন রিপনও

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪১ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৭
মুফতি হান্নান-বিপুলের পর ফাঁসির রায় শুনলেন রিপনও মৃত্যুদণ্ডের রায় শুনেছেন তিন জঙ্গিই

সিলেট: সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির মধ্যে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা দেলোয়ার হোসেন রিপনকে রিভিউ খারিজের রায় পড়ে শোনানো হয়েছে।

বুধবার (২২ মার্চ) দুপুর ১২টায় ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে জঙ্গিদের রিভিউ খারিজের রায় কারাগারে পৌঁছানোর পর তা পড়ে শোনানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ছগির মিয়া।

তবে তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করবেন কি-না, তা তার আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করেই তাদের জানাবেন বলেছেন,জেল সুপার।

 

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য দু’জন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের শীর্ষনেতা মুফতি আব্দুল হান্নান ও শরীফ শাহেদুল বিপুলকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে। সেখানে ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে করা তাদের রিভিউ আবেদন খারিজের রায় পড়ে শোনানো হয় বুধবার সকালে। তারা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন বলে জানিয়েছেন কারা কর্তৃপক্ষকে।

সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা দেলোয়ার হোসেন রিপন মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কোনাগাঁও গ্রামের আ. ইউসুফের ছেলে।

২০০৪ সালের ২১ মে (শুক্রবার) দুপুরে ১টা ৪০ মিনিটে হযরত শাহজালাল (র.) মাজার জিয়ারত ও জুম্মার নামাজ শেষে মুসল্লিদের সঙ্গে কোলাকুলি করছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরী। এ সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণে ধোয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে দরগাহ প্রধান ফটক এলাকা। মুহূর্তে রক্তাক্ত মানুষ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

এ ঘটনায় পুলিশের দুই কর্মকর্তা ও রুবেল নামের একজনসহ নিহত হন ৩ জন।

ভয়াবহ ওই গ্রেনেড হামলায় আনোয়ার চৌধুরী ও সিলেটের তৎকালীন জেলা প্রশাসক আবুল হোসেনসহ আহত হন অর্ধশতাধিক।

এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রদীপ কুমার দাস।
২০০৭ সালের ২৬ জুন চারজনকে আসামি করে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মুন্সী আতিকুর রহমান। আসামিরা হলেন-  মুফতি আব্দুল হান্নান, মুহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ, শরীফ সাহেদুল আলম বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন রিপন। পরে মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দাল ও আগের ৪ জন ৫ জনকে আসামি করে সম্পূরক চার্জশিট দেন সিআইডি’র পরিদর্শক জুবের আহমদ।

সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে ২০০৭ সালের ৩১ জুলাই চার্জ গঠনের মধ্য দিয়ে মামলার বিচার শুরু হয়।

বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত ৫ আসামির মধ্যে মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করতে প্রয়োজনীয় নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি ২০০৯ সালে আসামিরা জেল আপিলও করেন।

গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। ১৪ জুলাই আপিল করেন দুই আসামি হান্নান ও বিপুল।

গত বছরের ০৭ ডিসেম্বর চূড়ান্ত রায়েও দণ্ড বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে দুই জঙ্গির করা রিভিউ আবেদন শুনানি শেষে রোববার (১৯ মার্চ) খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত। মঙ্গলবার (২১ মার্চ) দণ্ড বহাল রেখে দেওয়া সর্বশেষ এ রায়ের অনুলিপি প্রকাশের পর থেকে চলছে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন জঙ্গির ফাঁসি কার্যকরের প্রস্তুতি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘন্টা, মার্চ ২২, ২০১৭
এনইউ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।