ঢাকা: ঈদে জামা-কাপড়সহ অন্যান্য কেনাকাটা প্রায় শেষ। এখন ঈদে খাবারের আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত নগরবাসী।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল, কলাবাগান ও হাজারীবাগ বাজার ঘুরে দেখা গেছে ঈদের আবহ চলছে। চলছে পোলার চাল, চিনি, সেমাই, ঘি, নারকেল ও মাংস, দুধ, চিনি, তেল, মসলা কেনার ধুম।
রোজার সময় সরকার প্রতি কেজি চিনির দাম নির্ধারণ করে দেয় ৬৫ টাকা। কিন্ত বিক্রি হচ্ছিলো ৭৫ টাকা। এখন ঈদেও বাজারে ৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর খুচরা ও পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ সামনে রেখে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে সেমাইয়ের প্যাকেটের দাম। লাচ্ছা ও খোলা সেমাইয়ের দাম মানভেদে বেড়েছে প্রতি কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা।
রমজানের শুরুতে বাজারে বাংলা সেমাই হিসাবে পরিচিত সাধারণ মানের খোলা সেমাই প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছিল ৩২-৩৩ টাকা। কেজিতে আট টাকা বেড়ে এ সেমাই এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা।
একইভাবে নানা ব্রান্ডের লাচ্ছা সেমাইয়ের দামও বেড়েছে কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা। রোজার আগে প্রতি কেজি বনফুল ব্রান্ডের লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হতো ১৩০ টাকা। দাম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা।
মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা দোকানে প্রতি কেজি খোলা সেমাই বিক্রি হয় ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। সাধারণ মানের খোলা লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হয় ৮৫ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। এর দামও এক বছরে বেড়েছে ৪০ টাকা।
বেশি বেড়েছে প্যাকেটজাত সেমাইয়ের দাম। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্যাকেটজাত লাচ্ছা সেমাইয়ের চাহিদা বাজারে বেশি।
কারওয়ান বাজারের খুচরা বিক্রেতা আশরাফ হোসেন জানান, বনফুল, কুলসুন, বিডি,সজীব, আফতাব, ড্যানিশ, ফুলকলি, ব্র্যান্ডের সেমাইয়ের কদর বেশি, বিক্রিও বেশি। এসব লাচ্ছা সেমাইয়ের ২০০ গ্রামের প্যাকেট বিক্রি হয় ২৮ থেকে ৩০ টাকায়।
বাজারে খোলা চিনিগুঁড়া পোলাওয়ের চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে। আর খোলা সাধারণ মানের পোলাওয়ের চালের দাম নেওয়া হচ্ছে ৬৫ টাকা। প্রাণ ও রাধুনির প্যাকেটজাত পোলাওয়ের চালের দাম নেওয়া হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা।
ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি। আর ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২২০ টাকায়। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ২৭০ এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে।
খোলার পাশাপাশি প্যাকেটজাত মসলা বেশি বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি এলাচ ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার, দারুচিনি ৩০০, লবঙ্গ ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার, গোলমরিচ ৮০০, কিশমিশ ৪৫০, জিরা ৪৫০ থেকে ৫০০, হলুদ ৩০০ থেকে ৩৫০ ও আদা ৭০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হয়।
এ ছাড়া দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৪০, ভারতীয় ৩৬, রসুন দেশি ৯০ ও ভারতীয় ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ঈদের দু`এক দিন আগেই বাজার থেকে তরল দুধ কোনো কোনো দোকানে দু-এক প্যাকেট পাওয়া গেলেও দাম লিটারপ্রতি ৬০ থেকে ৬২ টাকা। অথচ তা বিক্রি হওয়ার কথা ৫২ টাকায়। বাজারে মিল্ক ভিটা ছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যেমনথ আড়ং, প্রাণ ও ফার্ম ফ্রেশ দুধ পাওয়া যায়। বিভিন্ন মুদিদোকানেই তরল দুধ নেই। বিক্রি হচ্ছে এক লিটার ৬০ বা ৬২ টাকায় আর আধা লিটারের প্যাকেট ৩২ থেকে ৩৪ টাকা।
এ ব্যপারে মিল্ক ভিটার বিপণন বিভাগের কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা দুধের দাম বাড়ায়নি। ঢাকায় প্রথম রোজা থেকে দিনে গড়ে ৩ লাখ লিটার তরল দুধ সরবরাহ করা হয়েছে। এখন শেষের দিকে পৌনে ৪ লাখ লিটার দুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। এ ছাড়া ঈদের আগের দিন ৪ লাখ লিটার মিল্ক ভিটা সরবরাহ করা হয়। ফলে দুধের কোনো সংকট থাকবে না । ’
বাংলাদেশস ময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১১