ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঢাবির জমিতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্যালয়

তুহিন শুভ্র অধিকারী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১০
ঢাবির জমিতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্যালয়

ঢাকা: ‘জায়গা পড়ে ছিল, তাই কার্যালয় স্থাপন করেছি। ’ সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জমিতে গড়ে ওঠা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্যালয় সম্পর্কে এর সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন এ কথা বলেছেন।



তবে কার্যালয় স্থাপন করেই থেমে থাকেননি তারা। স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ঢাকা মেডিকেল ইউনিট নামের ওই কার্যালয় থেকে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে দালালি, হাসপাতালের সামনের দোকান থেকে চাঁদাবাজিসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডও চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালের প্রধান গেটের উল্টো পাশে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীর চর্চা কেন্দ্রের পেছনে বাঁশ ও খরের চালা দিয়ে একটি ঘর তৈরি করা হয়েছে। ঘরে টাঙানো সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে ৫৬ নং ওয়ার্ড, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ইউনিট, স্বেচ্ছাসেবক লীগ কার্যালয়।

স্থানীয় দোকানদার ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশ কয়েক মাস ধরে সেখানে শুধু একটি চালা ঘর ছিল। তবে গত রোববার সেখানে সাইনবোর্ড টাঙানো হয়। এর একটু দূরেই আরেকটি বাঁশের চালা তৈরি করা হয়েছে।
 
নাম না প্রকাশের শর্তে এক দোকানদার বলেন, ‘এখানে যুবলীগের কার্যালয় হবে। ’

কার্যালয় স্থাপনের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি-না জিজ্ঞেস করা হলে মেডিকেল ইউনিট স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন বাংলানিউজটোয়িন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘অনুমতি নেইনি। তবে জায়গা খালি পড়ে ছিল, তাই ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের নেতাদের  সঙ্গে কথা বলে কার্যালয় স্থাপন করেছি। ’

অথচ ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন এ মেডিকেল ইউনিট কার্যালয়ের অনুমোদন দেয়নি খোদ ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগই।

৫৬ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রাহাত ব্যাপারী বলেন, ‘ওই কার্যালয় করার পেছনে আমাদের কোনো অনুমোদন নেই। যদি ওখানে কেউ কার্যলয় করে থাকে তবে আমরা তা জানি না। ’

তিনি আরও বলেন, ‘ওখানে কার্যালয় প্রতিষ্ঠার কোনো প্রশ্নই আসে না। কারণ যোগ্য  নেতৃত্বের অভাবে ওখানকার কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়নি। ’

তিনি জানান, আগে একবার ওই এলাকায় কার্যালয় করার চিন্তা ভাবনা করা হয়েছিল, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নিষেধ করায় তা বাতিল হয়ে যায়।

তবে এসব নিষেধাজ্ঞা কিংবা অনুমোদনের ধার ধারেননি মেডিকেল ইউনিটের নেতা-কর্মীরা। তাদের হয়ে সাখায়াত হোসেন বলেন, ‘তিনি অন্য গ্রুপের লোক, তাই এ রকম কথা বলেছেন। ’

অন্যদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর একেএম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। আর অনুমতি দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। ’

স্থানীয় দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজের কর্মচারী, দালাল, কিছুসংখ্যক ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের সন্তানদের নিয়ে এ ইউনিট গড়ে তোলা হয়েছে।

জানা গেছে, এদের বেশিরভাগই মেডিকেলের জরুরি বিভাগের গেটে দিন রাত আড্ডা দেয়। আর কয়েকজন হাসপাতালের উল্টো পাশের রাস্তায় মাটির জিনিসপত্রের দোকান চালায়।

সময় সময় এরা সামনের দোকানগুলো থেকে চাঁদাবাজি করে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে হাসপাতালের ভিতরে দালালদের দৌরাত্ম্য টিকিয়ে রাখতেই তারা এ কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।