ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ডিসেম্বরে সব জেলায় ওয়ান স্টপ সার্ভিস

জসীম উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১০
ডিসেম্বরে সব জেলায় ওয়ান স্টপ সার্ভিস

ঢাকা: ডিসেম্বরে দেশের সব জেলায় ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ বা ‘দ্রুত-সেবা কেন্দ্র’ চালু হবে। তার আগে ১ সেপ্টেম্বর যশোরে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে দ্রুত-সেবা কেন্দ্র।



এর মাধ্যমে জনগণ এক জায়গা থেকে জেলা পর্যায়ে দেওয়া সব সরকারি সেবা পাবে। অনলাইনে আবেদন করে কিংবা সশরীরে গিয়ে সেবা নেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। যশোরের জেলা প্রশাসক নুরুল আমিন সোমবার বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে এ তথ্য জানান।

জেলা পর্যায়ে জনগণকে দ্রুত সরকারি সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে নেওয়া এ পদক্ষেপকে বলা হচ্ছে ডিজিটাল জেলা গড়ার পথে একটি বড় ধাপ। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘একসেস টু ইনফরমেশন’ (এটুআই) কর্মসূচির আওতায় এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

নুরুল আমিন বলেন, ‘জেলা সেবাকেন্দ্র চালু হলে জনগণ ঘরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরকারি সেবা নিতে পারবে। জেলা অফিস থেকে ভূমি রেকর্ডের সত্যায়িত (সার্টিফায়েড) কপি পাওয়ার জন্যও অনলাইনে আবেদন করা যাবে। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্থাপিত এই দ্রুত-সেবা কেন্দ্রেও আবেদন জমা দেওয়া যাবে। সরকারি সেবা পাওয়ার জন্য ঘুষ প্রদানসহ জনগণকে যেসব দুর্নীতি ও হয়রানির শিকার হতে হয়, এই  নতুন ব্যবস্থা চালু হলে সেগুলো বন্ধ হবে। ’

মানুষের দুর্ভোগ ও হয়রানি এড়াতে কাগজকেন্দ্রিক প্রশাসনিক সেবা প্রদান ব্যবস্থাকে ই-মেইল অর্থাৎ ইন্টারনেট কেন্দ্রিক ব্যবস্থাতে রূপান্তরই এ প্রকল্পের লক্ষ্য।

এর আওতায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ‘জেলা সেবাকেন্দ্র’ নামে একটি ডেস্ক স্থাপন করা হবে। এ ডেস্কের কাজ হবে ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠানো জনগণের বিভিন্ন আবেদন এবং যারা সশরীরে এসে আবেদন করবে সেগুলো গ্রহণ করা। ডেস্ক প্রত্যেক আবেদনকারীকে একটি আইডি বা কোড নম্বার দেবে এবং সেবা পাওয়ার জন্য একটি দিন নির্ধারণ করে দেবে। আবেদনকারী ওই নম্বার ব্যবহার করে তার আবেদন কোন অবস্থায় আছে তা ইন্টারনেটেও দেখতে পারবেন কিংবা ফোন করেও তথ্য জানতে পারবেন।

নির্ধারিত দিনে জেলা সেবা কেন্দ্রে (দ্রুত-সেবা কেন্দ্র) এসে তার সেবা গ্রহণ করবেন।

নুরুল আমিন বলেন, ‘আগামী সেপ্টেম্বরের এক তারিখ থেকে এ সেবা চালু করার জন্য আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। ’

তিনি জানান, সাধারণত ডিসি অফিসে জনগণ কোন সেবা নিতে গেলে তাদের অযথা হয়রানির শিকার  হতে হয়। কোনো সেবা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন কক্ষে ঘুরতে হয়। অনেক কর্মকর্তা কর্মচারি এ সুযোগে সেবাপ্রার্থীকে হয়রানি করেন। অনেক ক্ষেত্রে ঘুষও দিতে হয়।

প্রকল্প সমন্বয়ক এটুআইয়ের মাঠ প্রশাসন বিশেষজ্ঞ মো. মোস্তাফিজুর রহমান সোমবার বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, সেপ্টেম্বরে যশোরে পরীক্ষামূলকভাবে প্রকল্প শুরুর পর কিছু দিন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণসহ ট্রায়ালের ব্যবস্থা থাকবে। এখান থেকে পাওয়া ভুলত্রুটি সংশোধন শেষে ডিসেম্বরে দেশের জেলায় জেলায় দ্রুত-সেবা কেন্দ্র চালু হবে।

তিনি বলেন, ‘অনলাইনে আবেদন করার সুযোগ যাদের নেই তাদেরও জেলা সদরে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। প্রকল্পের অধীনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) অফিসে একটি সাব-ডেস্ক স্থাপন করা হবে। ইউএনও’র অফিস আবেদনগুলো ই-মেইল করে জেলা ডেস্কে পাঠিয়ে দেবে। ’

যশোরের এডিসি হিসাবে দায়িত্ব পালনকারী মোস্তাফিজুর রহমান (এটুআই কর্মসূচিতে লিয়েনে দায়িত্বরত) বলেন, ‘জেলা পর্যায়ের মানুষকে ভূমির রেকর্ডের সত্যায়িত কপি পেতে সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হতে হয়। একটি সার্টিফাইড কপি’র জন্য তাদের কয়েকবার জেলা সদরে যেতে হয়। অনেক সময় তা পেতে তাদের ঘুষও দিতে হয়। জেলা সেবাকেন্দ্র তাদের এসব হয়রানি থেকে মুক্তি দেবে। ’

অনলাইনে সত্যায়িত কপি পাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন,  সেবাপ্রাথীর্র অনলাইনে আবেদন করার পর নির্ধারিত কোর্ট ফি ডাকযোগে পাঠিয়ে দেবেন। দ্রুত-সেবা কেন্দ্র তা পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিকতা শেষে ডাকযোগে প্রার্থীর ঠিকানায় সত্যায়িত কপি পাঠিয়ে দেবে।

তিনি বলেন, কয়েক মাস পরে মোবাইলের মাধ্যমে কোর্ট ফি গ্রহণের ব্যবস্থাও চালু হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।