ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

অনলাইনে জিডি: শুরুর পাঁচ মাসেই উৎসাহে ভাটা

মুরসালিন হক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১০
অনলাইনে জিডি: শুরুর পাঁচ মাসেই উৎসাহে ভাটা

ঢাকা : ঢাকা মহানগরের থানাগুলোতে পুলিশের চালু করা অনলাইনে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) প্রথম দিকে বেশ সাড়া ফেললেও পাঁচ মাসেই সেই উৎসাহে ভাটা পড়েছে। এজন্য প্রয়োজনীয় প্রচারের অভাবকে দায়ী করছেন খোদ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।



সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতির পথে প্রথমবারের মত অনলাইন জিডি চালু করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এ বছরের মার্চ মাসের শুরুতে প্রাথমিকভাবে রাজধানীর উত্তরা থানায় অনলাইন জিডি চালু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় চালুর পাঁচ মাসে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় অনলাইনের জিডির সংখ্যা দাঁড়ায় দুই হাজারের বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জিডি হয় রাজধানীর গুলশান থানায়।

অনলাইনে জিডি করার ক্ষেত্রে পুলিশের দেখানো সময়ের অজুহাত সংক্রান্ত কোন সমস্যা নেই। ঘরে বা কর্মক্ষেত্রে বসেই করা যায় জিডি।

এ ব্যাপারে পুলিশের সিস্টেম এনালিস্ট শারমিন আফরোজ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, প্রত্যেক থানায় একটি কম্পিউটারের সঙ্গে ইন্টারনেট সুবিধা রয়েছে। পুলিশের ওয়েব সাইটে (www.police.gov.bd অথবা www.dmp.bd.gov) ঢুকে ‘সিটিজেন হেল্প রিকোয়েস্ট অপশন’-এ কিক করলে জিডি করার পেইজটি আসবে। সেখানে পর্যায়ক্রমে কয়েকটি ফরম রয়েছে। সমস্যা বিচার করে সে অনুযায়ী এসব ফরম পূরণ করতে হবে। পাশাপাশি অভিযোগকারীকে সমস্যার কথাও উল্লেখ্য করতে হয়। মামলার জন্য বা কারো হুমকির সম্মুখীন হলে এ সংক্রান্ত বিবাদীর ফোন নম্বর ও মোবাইল নাম্বার উল্লেখ করতে হয়।

তিনি আরও বলেন, পরীক্ষার কাগজ পত্র, পরিচয় পত্র, মোবাইল ফোন, ব্যাংকের জরুরি কাগজ ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রের নাম উল্লেখ করতে হয় গ্যালারি ফরমে। অনলাইনে জিডি করা অনেকটাই থানায় গিয়ে জিডি করার মতই। থানায় জিডি করতে হলে জিডির কপিতে যে ব্যক্তি জিডি করবে তাকে নিজ হাতে স্বাক্ষর দিতে হয়। আর অনলাইনে জিডি’র ক্ষেত্রে নিজের কোন স্বাক্ষর দিতে হয়না।

শারমিন আফরোজ জানান, ব্যক্তিগতভাবে কাউকে ফাঁসানোর জন্য বা ভূয়া কাগজপত্র দিলে থানায় জিডি হয় না, অনুরূপ অনলাইন জিডির ক্ষেত্রেও এ বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করা হয়। ভুক্তভোগী ব্যক্তি যে থানায় ইচ্ছা সে থানায় জিডি করতে পারবেন। অনলাইনে কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরবর্তিতে জিডি সংক্রান্ত খোঁজ নেওয়ার জন্য একটি নম্বর দিয়ে দেওয়া হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিগত পাঁচ মাসে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় অনলাইনের মাধ্যমে জিডি হয়েছে সর্বমোট দুই হাজার একটি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জিডি হয়েছে রাজধানীর গুলশান থানায়। তবে শুরুর দিকে প্রবল উৎসাহে শুরু হওয়া অনলাইন জিডি ব্যবস্থায় হঠাৎ করেই ভাটা পড়েছে। একাধিক পুলিশের সূত্রে জানা যায় যথাযথ প্রচারের অভাবে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।

ডিএমপি কমিশনার একেএম শহীদুল হক এ প্রতিবেদককে মুঠোফোনের এক সংক্ষিপ্ত বার্তায় (এসএমএস) জানান, ‘অললাইনের জিডি ব্যবস্থা খুব একটা উৎসাহমূলক নয়। ’

ডিএমপি’র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিটি সার্ভিস) মো. ওয়ালিদ হোসাইন বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে জানান, প্রথম দিকে অনলাইন জিডি’র ব্যাপক সাড়া পাওয়া গিয়েছিল। প্রচারের অভাবেই অনলাইন জিডি’র ব্যাপারে জনগণের উৎসাহে ঘাটতি দেখা গেছে।

তিনি আরও জানান, মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে সবচেয়ে বেশি জিডি হয়েছে। এর পর থেকেই জিডির সংখ্যা কমতে শুরু করে। আগস্ট মাসে এ সংখ্যা প্রায় শূন্যের কোটায়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।