ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

আন্তর্জাতিক আদালতের মামলায় আইনজীবীর ফি নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের আপত্তি

মান্নান মারুফ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১০
আন্তর্জাতিক আদালতের মামলায় আইনজীবীর ফি নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের আপত্তি

ঢাকা: আন্তর্জাতিক সালিস (আরবিট্রেশন) আদালতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের আপিল পরিচালনার জন্য বাংলাদেশের দু’জন আইনজীবীর (আরবিট্রেটর) ফি বাবদ বড় অংকের অর্থ ছাড় করা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। এতো বড় অংকের অর্থের বিনিময়ে কেন দু’জন বাংলাদেশি আইনজীবীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এনিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ।



সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওই দুই আইনজীবীর একজনের ফি দেড় লাখ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে সাড়ে ২৭ হাজার মার্কিন ডলার পরিশোধও করা হয়েছে তাকে।

আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ এ প্রসঙ্গে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেছেন, কিসের ভিত্তিতে এত বড় অংকের টাকায় দুই আইনজীবীকে নিয়োগ দেওয়া হলো এবং ২৭ হাজার মার্কিন ডলার পরিশোধ করা হলো তা তার জানা নেই।

বিষয়টি তদন্ত করে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেওয়ার জন্য এরই মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নথিপত্র পাঠানো হয়েছে বলে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে জানান তিনি।

সূত্র মতে, গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য দুই আইনজীবী নিয়োগের নথি আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হলে বিষয়টি ধরা পড়ে। আইনজীবী নিয়োগের প্রস্তাব গ্রহণ না করে বেঁকে বসে আইন মন্ত্রণালয়।

প্রসঙ্গত, সড়ক ও জনপথ (রেলপথ) বিভাগের রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের আর.এম.সি কম্পোনেন্টের পাঁচটি চুক্তির আওতায় তেল ও বিটুমিনের দাম বাড়ায় অতিরিক্ত অর্থ দাবি করে একটি আন্তর্জাতিক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বাংলাদেশ চুক্তি অনুযায়ী অতিরিক্ত মূল্য পরিশোধে অস্বীকৃতি জানায়। এর ফলে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক আরবিট্রেশন আদালতে মামলা (১৫৬৪২/জে ইএম) দায়ের করে। ওই মামলায় লড়তেই বাংলাদেশ সরকার দুই আইনজীবী নিয়োগ দেয়।

এই নিয়োগের আগে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত (ভেটিং) চাওয়া হলে তৎকালীন সলিসিটর অফিস কোনো আইনজীবীর নাম নির্দিষ্ট না করে একজন সিনিয়র ও অপর একজন উপযুক্ত আইনজীবী নিয়োগের মতামত দেয়।

সলিসিটর অফিসের ওই মতামত উপেক্ষা করে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার ফিদা এম কামাল ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এএফ হাসান আরিফকে নিয়োগ দিতে বলা হয়। একই সঙ্গে প্রাথমিকভাবে একজনের ৪৫ হাজার ও অপরজনের ৭৫ হাজার মার্কিন ডলার ফি নির্ধারণ করা হয়। পরে একজন আইনজীবীর ফি বাড়িয়ে ৭৫ হাজার থেকে দেড় লাখ মার্কিন ডলার করা হয়।

নির্ধারিত এই অর্থ পরিশোধের জন্য সম্প্রতি আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়ে  নথি পাঠায় অর্থমন্ত্রণালয়।

এ পর্যায়ে বিষয়টি আইনমন্ত্রীর নজরে আসে। এত বড় অংকের অর্থে বাংলাদেশি আইনজীবী নিয়োগের বিষয়টি খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নেন তিনি।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে তিনি বলেন, ‘বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিসের ভিত্তিতে আরবিট্রেটর ফি নির্ধারণ করেছে তা আমার জানা নেই। তাছাড়া নিয়োগ দেওয়া আইনজীবীদের এরই মধ্যে সাড়ে ২৭ হাজার মার্কিন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। ’

তিনি আরও বলেন, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য আইন মন্ত্রণালয় থেকে নথিপত্র  গত মাসে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আমরা বেশ কিছু পয়েন্টের সুনির্দিষ্ট জবাব ও ব্যাখ্যা চেয়েছি। জবাব এলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।