ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

কাপ্তাইয়ে জেএসএস কর্মীসহ ৩জন নিহত

জেলা সংবাদদাতা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১১
কাপ্তাইয়ে জেএসএস কর্মীসহ ৩জন নিহত

রাঙামাটি: রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসীর গুলিতে ৩ পাহাড়ি নিহত হয়েছেন। এদের একজন পার্বত্য চট্রগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) কর্মী ও অপর দুজন সাধারণ গ্রামবাসী বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।



এদিকে, পাহাড়ে শান্তিচুক্তির পক্ষের জেএসএস ও চুক্তির বিরোধিতাকারী ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক পিপলস ফোরাম এ হক্যাকা- সম্পর্কে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দেওয়ায় ইতোমধ্যে এ ঘটনাকে ঘিরে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে।

এলাকাবাসী এবং জনসংহতি সমিতির নেতারা এ হামলার জন্য ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক পিপলস ফোরামকে (ইউপিডিএফ) দায়ী করেছেন। তবে ইউপিডিএফের নেতারা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরম ইউনিয়ন থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে আগারপাড়া গ্রামে একটি চায়ের দোকানের সামনে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন চার যুবক। এ সময় ২০/২৫ জনের একদল সন্ত্রাসী তাদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই এদের ৩ জন নিহত হন।

নিহতদের দুজনের পরিচয় জানা গেছে, এরা হলেন সাধারণ গ্রামবাসী চিং কিউ মারমা (২৮), হ্লা চিং খুই মারমা (৩০)। অপর নিহত জেএসএস কর্মীর পরিচয় জানা যায়নি।

তবে অসমর্থিত একটি সূত্র জানায়, নিহত অপর যুবকের নাম দেবী চাকমা ওরফে রকি (৩০)। তার গ্রামের বাড়ী বাঘাইছড়ি উপজেলায়। তিনি জেএসএসের সঙ্গে যুক্ত।

এদিকে, হত্যাকা- সম্পর্কে জেএসএসের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সজীব চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, ‘সকালে আগাপাড়ায় একটি চায়ের দোকানে বসে চা পান করার সময় ইউপিডিএফের ২০/২৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী কোনো কারণ ছাড়াই গুলি করে আমাদের ৩ জন সমর্থককে হত্যা করেছে। ’

সন্ত্রাসীরা পাশ্ববর্তী রাজস্থলী উপজেলা থেকে এসে এ হামলা চালায় বলে তার দাবি।

অন্যদিকে, ইউপিডিএফের প্রচার বিভাগের প্রধান নিরন চাকমা জনসংহতি সমিতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘এ  ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনই সম্পৃক্ততা নেই। কারণ কাপ্তাই উপজেলা এবং চিৎমরম এলাকায় আমাদের কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম নেই। ’

তবে চিৎমরম ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান থোয়াই চিং মারমা বলেন, ‘নিহতদেরর মধ্যে দু’জন আমার গ্রামের মানুষ। তারা কোনোদিন কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে দেখিনি। বাকি লাশটি আমরা চিনতে পারছি না, সেটি সম্ভবত বহিরাগত এবং আমরা জানতে পেরেছি সেটি জেএসএস কর্মীর। ’

তিনি বলেন, ‘সবমিলিয়ে মনে হচ্ছে, ইউপিডিএফ এ হামলা করেছে। ‘

তিনি আরও বলেন, ‘আমার এলাকাটি একটি শান্ত এবং নিরিবিলি এলাকা। ’ এ হামলার পর এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে, হামলার ঘটনার পর পুলিশ, বিজিবি এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।

চন্দ্রঘোণা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাশ বাংলানিউজকে জানান, ‘এটি একটি আকস্মিক হামলা। সন্ত্রাসীরা অপারেশন চালিয়েই পালিয়ে গেছে। তবে আমরা হামলাকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ, বিডিআর এবং সেনাবাহিনী এলাকায় টহল দিচ্ছে। ’

কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাজেরা খাতুন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘তিনজন নিহত হয়েছে এটা নিশ্চিত। ওসিসহ ফোর্স গেছে ঘটনাস্থলে। তবে ওই এলাকাটি দুর্গম এবং সেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। ‘

কাপ্তাই সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) প্রণব কুমার রায় বাংলানিউজকে বলেন, ‘তিন জন নিহত হওয়ার খবর আমি পেয়েছি। ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠানো হয়েছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১১১২ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।