ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

বঙ্গবন্ধুর দুর্লভ ছবি জাদুঘরে হস্তান্তর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১১
বঙ্গবন্ধুর দুর্লভ ছবি জাদুঘরে হস্তান্তর

ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি দুর্লভ আলোকচিত্র বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে হস্তান্তর করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের নতুন ভবনের হল রুমে ছবিটি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক।

জাদুঘরের পক্ষ থেকে কিউরেটর সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান এ ছবিটি নেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে তৎকালীণ ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ওয়ারলেস সেট ব্যবহার কাজের উদ্বোধন করেন। এ সময়ে তিনি উপকূলীয় এলাকায় কর্মরত ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে ওয়ারলেসে কথা বলেন। সেই সময়ে ধারণ করা বঙ্গবন্ধুর ছবিটি দীর্ঘদিন যাবত খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণকক্ষে ছিল।

জাদুঘরের নতুন ভবনের হল রুমে ছবি হস্তান্তর-উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভা আনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্বে করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট্রের সিনিয়র সদস্য শেখ কবির হোসেন। আনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ বিভাগের সচিব ড. এম আসলাম আলম। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন এস এম সারওয়ার মোর্শেদ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুর রাজ্জাক বলেন, এ দেশে স্বৈরাচাররা বহুবার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই সফল হয়নি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে জাতি বারবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে সব ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করেছে।

তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্র আমাদের বিরুদ্ধে এখনো চলছে। কিন্তু সব ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ ও জাতি এগিয়ে যাচ্ছে। ’

আবদুর রাজ্জাক আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সিপিপি পরিচালনার বিষয়ে তৎকালীন রেডক্রসের সঙ্গে চুক্তি করেন। এর ফলে সিপিপি একটি প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি পায় এবং পরিচালনায় সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠে। সেই সিপিপি আজ বিশ্বব্যাপী একটি সফল ও প্রংশসনীয় কর্মসূচি হিসেবে স্বীকৃত পায়। ’

বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতার কারণে সিপিসিকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণহাণি কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

খাদ্য মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে একজন দেশপ্রেমিক নেতা হিসেবে দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। সাধ্যমত সহযোগিতা ও সেবা দিয়েছিলেন দুর্গতদের। তাই পরে তিনি দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে উপকূলীয় এলাকার জানমালের রায় নানা কর্মসূচি নিয়েছিলেন। ’

তিনি বলেন, ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রায় পাঁচ লাখ লোক মারা যায়। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে মারা যায় প্রায় দেড় লাখ লোক। ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডরে মারা যায় প্রায় পাঁচ হাজার। ২০০৯ সালে আইলায় মারা গেছে দুইশর মতো লোক। বাংলাদেশের এ সাফল্যের পেছনে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকরা। সিপিপি একটি সফল মডেল হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যবহার করা হচ্ছে।

খাদ্য মন্ত্রী আরো বলেন, সিপিপির কর্মীরা নিজের জীবন বিপন্ন করে দুর্যোগের সময় জনগণের জানমাল রায় কাজ করে। এ পর্যন্ত ২৭ জন স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে। কতটুকু আন্তরিক ও উদ্বুদ্ধ হলে একজন স্বেচ্ছাসেবক নিজের জীবন বিপন্ন করে অন্যের জন্য কাজ করে। যে নেতা একদিন দেশকে স্বাধীন করার ডাক দিয়েছিলেন, সেই নেতাই গড়ে তুলেছেন সিপিপি। তাই দেশকে স্বাধীন করার জন্য তার ডাকে যেমন জনগণ জীবন দিয়েছিল, তেমনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে দুর্গতদের রায় সিপিপির কর্মীরা কাজ করছে।

এম আসলাম আলম বলেন, ‘এ দুর্লভ ছবিটি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে দিতে পেরে আমরা সত্যি গর্বিত। বিগত ডিজিটাল মেলায় ছবিটি দেখে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর কর্তৃপক্ষকে দেবার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। ’

সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এ দুর্লভ ছবি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় জাদুঘরে দিয়ে জাদুঘরকে আরও সমৃদ্ধ করেছে। এমন ছবি জাদুঘরে দেবার জন্য তিনি মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।