ঢাকা: সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। মারাত্মক হার্ট অ্যাটাক হয়েছে তার।
রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে তিনি এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। তার চিকিৎসক বলেছেন, তার অবস্থা এখন সংকটাপন্ন। এই অবস্থায় তার বাঁচার সম্ভাবনা মাত্র ২০ ভাগ।
অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ অ্যাপোলো হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেছেন, হৃদরোগে আক্রান্ত কোনো রোগীর এই অবস্থায় বাঁচার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। তবে তাকে আমরা সুস্থ করে তুলতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
অ্যাপোলো হাসপাতাল সূত্র জানায়, অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ বুধবার সকালের দিকে বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আসেন।
সকাল ১১টা ২০ মিনিটে তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। কর্তব্যরত ডাক্তাররা পরীক্ষা করে দেখতে পান তার সিভিয়ার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। রোগ সনাক্ত করার পর তাকে ভর্তি করা হয় হৃদরোগ বিভাগে।
কিন্তু, হাসপাতালে ভর্তির পর থেকেই তার শারীরিক অবস্থার ক্রম অবনতি হতে থাকে। ঘনঘন তার হার্ট অ্যাটাক হয়। তারপর তাকে স্থানান্তর করা হয় করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ)।
তার চিকিৎসক বলেছেন, তার ব্লাডপ্রেসার অনেক কমে গেছে। সেই সঙ্গে কমে গেছে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল। মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল কমে গেলে ব্রেইন স্ট্রোক হতে পারে।
তবে তার তেমন কিছু হয়েছে কিনা তা জানতে পারেনি তার চিকিৎসকরা। কারণ, ব্লাডপ্রেসার কমে যাওয়ায় তার সিটি স্ক্যান করা যাচ্ছে না। আগামী ৮ ঘন্টা তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলে জানান তার চিকিৎসক ডা. শাহাবুদ্দিন।
তিনি বলেন, অবস্থা ভালো হলে সিটি স্ক্যান করে দেখা হবে মস্তিষ্কে রক্ত ক্ষরণ হয়েছে কিনা। তারপর করা হবে এনজিওগ্রাম।
বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে নিউরোলজিস্টকে দেখানো হবে।
তার চিকিৎসক জানান, বুধবার তার ফুসফুসে অনেক পানি ছিলো। কিন্তু, এখন পানি কমে গেছে। ফুসফুসে পানি থাকায় তিনি শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে পারছেন না। তাই তাকে কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস দেওয়া হচ্ছে।
তার চিকিৎসক বলেছেন, এ পর্যন্ত তার ১০ বার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। ১৯৯৪ সালে প্রথম তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। রাষ্ট্রপতি থাকাকালে ২০০৬ সালে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে তাকে বাইপাস সার্জারি করা হয়। সার্জারি করার পরও বেশ কয়েকবার তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে।
হার্ট অ্যাটাকের কারণে আগেও তাকে কয়েকবার লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। কিন্তু, প্রত্যেক বারই তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু, এই বার তার সুস্থ হয়ে ওঠা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তার চিকিৎসক।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘন্টা, আগস্ট ১১, ২০১১