ঢাকা : ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশ্যে বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর বাকি খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে তাদের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে।
বাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান তাঁর বাণীতে বলেছেন, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ৩৫ বছর পরে হলেও জাতির জনক ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারী ঘাতকদের বিচার বাংলার মাটিতে সম্পন্ন হয়েছে। জাতি আজ অনেকটা কলঙ্কমুক্ত। যেসব মৃত্যুদ-প্রাপ্ত ঘাতক আজো বিদেশে পালিয়ে রয়েছে, তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করতে সর্বোচ্চ তৎপরতা চালাতে হবে। জাতি জানবে হত্যাকারীদের ঠাঁই পৃথিবীর কোথাও নেই।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। দেশের স্বাধীনতা বিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের প্রত্য ও পরো মদদে ঘাতকচক্রের হাতে নিজ বাসভবনে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান শহীদ হন। জাতীয় শোক দিবসে আমি পরম করুণাময় আল্লাহ্’র দরবারে সেদিনের সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতি অর্জন করে বহু কাক্সিত স্বাধীনতা। ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে এ দেশের গণমানুষের আশা-আকাক্সা পূরণে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে তিনি এই জাতিকে নেতৃত্বে দেন। এ দেশ ও জনগণ যতদিন থাকবে, ততদিন জাতির জনকের নাম চির অয় হয়ে থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেছেন, ১৯৭৫ সালের এই দিনে মানব ইতিহাসের বর্বরতম হত্যাকান্ডের শিকার হয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে শাহাদতবরণ করেন।
হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবসহ পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে। হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর সামরিক সচিব কর্নেল জামিলকে। ঘাতকদের নিপ্তি কামানের গোলার আঘাতে মোহাম্মাদপুরে একটি পরিবারের বেশ কয়েকজন নিহত হন। জাতীয় শোক দিবসে আমি মহান আল্লাহ্তায়ালার দরবারে সেদিনের সকল শহীদের রূহের মাগফেরাত কামনা করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শী, গতিশীল ও সাহসী নেতৃত্বে এই ভূ-খন্ডের মানুষ হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য। বাঙালি পেয়েছে নিজস্ব জাতিরাষ্ট্র।
যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু যখন সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে সোনার বাংলা গড়ার সংগ্রামে নিয়োজিত তখনই তাঁকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি বাঙালির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করার অপপ্রয়াস চালায়। অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামোকে ভেঙে ফেলাই ছিল তাদের মূল ল্য।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের রায় কার্যকর করে জাতিকে কিছুটা কলঙ্কমুক্ত করেছি। বাকি আসামীদেরও দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জাতীয় চার নেতার হত্যার বিচার ত্বরান্বিত করার পদপে নেওয়া হয়েছে। ’
জাতির জনককে হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করে তাঁর স্বপ্ন সোনার বাংলা বাস্তবায়নের সংগ্রামে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ুধা, দারিদ্র্য ও নিররতামুক্ত এবং অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ একটি গণতান্ত্রিক শান্তিকামী ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার এ সংগ্রামে আমাদের অবশ্যই জয়ী হতে হবে। ’
বাংলাদেশ সময় ১৯১৩, আগস্ট ১৪, ২০১০