ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে বন্দরনগরীর বিস্তীর্ণ এলাকা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১১
বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে বন্দরনগরীর বিস্তীর্ণ এলাকা

চট্টগ্রাম: মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম ও আশপাশের এলাকাজুড়ে একটানা বৃষ্টিপাত এখনও অব্যাহত রয়েছে। কখনও মাঝারি, আবার কখনও ভারী বৃষ্টিতে বুধবার সকালে আবারও তলিয়ে গেছে নগরীর বিস্তীর্ণ এলাকা।



এছাড়া টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় ফসলের ক্ষেত, মাছের খামার তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন গ্রামে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

চারদিন ধরে টানা বৃষ্টির পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা কমলেও মধ্যরাত থেকে আবারও শুরু হয়েছে বৃষ্টি।

বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫৬ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে নগরীর পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস।

বুধবার ভোর থেকে নগরীর বহদ্দারহাট, বাদুরতলা, মুরাদপুর, মোহাম্মদপুর, শুলকবহর, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, হালিশহর, চকবাজার, বাকলিয়া, বৌবাজার, দেওয়ানবাজারের বিভিন্ন এলাকা, ডিসি রোড, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, কাপাসগোলা সহ অধিকাংশ নিচু এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

সিটি কর্পোরেশনের জলাবদ্ধতা বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ও কাউন্সিলর বিজয় কুমার চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ‘অতি বর্ষণের কারণে পাহাড় থেকে বালু মাটি নেমে নালা-নর্দমা ভরাট হয়ে গেছে। এতে বৃষ্টির পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতা হচ্ছে। ’

টানা বৃষ্টিতে নগরীর অধিকাংশ মূল রাস্তা ও অলিগলির বিটুমিন উঠে গিয়ে সড়কগুলো ভেঙে গেছে। নগরীর বিভিন্ন নিচু এলাকার সড়কগুলোতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অধিকাংশ সড়ক দিয়েই যানবাহন চলছে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়।

এদিকে বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামের মিরসরাই, সন্দ্বীপ, সীতাকু-, চন্দনাইশ, বোয়ালখালী, আনোয়ারা, সাতকানিয়া ও বাঁশখালীর বেশকিছু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।

কর্ণফুলী, শঙ্খ নদী, শ্রীমতি খালসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানিপ্রবাহ বেড়ে গেছে।

জোয়ার এবং বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, আনোয়ারা ও বাঁশখালীর কয়েকশ‘ একর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। বাঁশখালীতে বেশকিছু মাছের ঘেরও তলিয়ে গেছে।

জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা আব্দুল মালেক বাংলানিউজকে বলেন, ‘মিরসরাইয়ের তিনটি গ্রাম এবং সন্দ্বীপের তিন-চারটি গ্রামে পানি ঢুকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে কিছু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পেয়েছি। ’

তিনি বলেন, ‘আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। দুর্যোগ মোকাবেলার পূর্ণ প্রস্তুতি আমাদের আছে। ’

এদিকে টানা বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে খাদ্যশস্যসহ সাধারণ পণ্যবোঝাই জাহাজে পণ্য ওঠানামা এখনও বন্ধ আছে।

সাগর উত্তাল থাকায় বহির্নোঙ্গরে যেতে পারছে না কর্ণফুলী নদীর বিভিন্ন ঘাটে থাকা শত শত লাইটারেজ জাহাজ।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব সৈয়দ মো. ফরহাদউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘চিনি, সার, সিমেন্ট ক্লিংকারসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে বহির্নোঙ্গরে এবং জেটিতে ৬৮টি জাহাজ খালাসের জন্য অপেক্ষা করছে। ’

এদিকে বৃষ্টির কারণে দেশের অন্যতম বৃহত্তম পাইকারি বাজার নগরীর চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসা-বাণিজ্যেও মন্দাবস্থা দেখা দিয়েছে।

গত দু’দিনে খাতুনগঞ্জের স্বাভাবিক লেনদেন প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। এছাড়া বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় খাতুনগঞ্জে মালামাল ওঠানামায়ও ব্যাঘাত ঘটছে বলে ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।