ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘গাঁজা অবৈধ হতে পারে, পুলিশের টোকেন তো আর জাল না’

সাঈদুর রহমান রিমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১০
‘গাঁজা অবৈধ হতে পারে, পুলিশের টোকেন তো আর জাল না’

ঢাকা: মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কর্মকর্তাদের মাদকবিরোধী অভিযানের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ১৭ কেজি গাঁজাসহ আটক হওয়া রাজধানীর দুই মাদক ব্যবসায়ী।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মহাখালী টার্মিনালে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে মো. শামসুল ইসলাম (২২) ও বাবুল চৌধুরী (৩৩) নামে ওই দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গুলশান সার্কেলের এক টিম।



কিন্তু ওই টিমের বৈধতাই চ্যালেঞ্জ করে বসেন আটক হওয়া মাদক ব্যবসায়ীরা। দাঁড়িপাল্লায় ওজন দিয়ে প্রতি কেজি গাঁজা বাবদ ৫০০ টাকা করে নিয়ে পুলিশ তাদের গাঁজা ব্যবসার বৈধ টোকেন দিয়েছে বলে দাবি করেন তারা।

শুধু তাই নয়, এক টুকরো কাগজের একপাশে গোলাপ ফুল মার্কা আর অপর পাশে কলমে লেখা সাংকেতিক চিহ্নযুক্ত টোকেন দেখিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়ারও অনুরোধ জানান তারা।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কর্মকর্তাদের ওপর চোটপাট দেখিয়ে তারা বলেন, ‘থানা পুলিশের কাছ থেকে বৈধ ‘টোকেন’ নেওয়া আছে-তারপরও আমাদের কেনো গ্রেপ্তার করা হলো ? কেন ধরা হলো গাঁজা ?

বাবুল চৌধুরী আর একটু আগ বাড়িয়ে বলেন, ‘গাঁজা অবৈধ হতে পারে-পুলিশের টোকেন তো আর জাল না’।

এমন কথাবার্তায় আক্কেল গুড়–ম হলেও গাঁজা ব্যবসায়ীদের ছাড়েননি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কর্মকর্তারা।

শুক্রবারের অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর গুলশান সার্কেলের পরিদর্শক হেলাল উদ্দিন ভূঁইয়া বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘গ্রেপ্তার করা মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। টোকেন স্লিপের বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। ’

তিনি জানান, গাঁজাসহ আটক শামসুল ইসলামের পিতার নাম রমিজ উদ্দিন। তার বাড়ি ব্রাহ্মবাড়িয়া জেলার নবগঠিত বিজয়নগর থানার নৌয়াবাদ গ্রামে। অপর মাদক ব্যবসায়ী বাবুল চৌধুরীর বাড়িও একই গ্রামে। তার পিতার নাম মৃত রফিজ উদ্দিন চৌধুরী।

তারা পৃথক দুই ব্যাগে ১৭ কেজি গাঁজা নিয়ে ভৈরব থেকে রাজধানীতে আসেন।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর গুলশান সার্কেলের উপ-পরিদর্শক সুমনুর রহমান বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে জানান, বিশেষ কায়দায় বানানো প্যাকেটে এসব গাঁজা ঢুকিয়ে ব্যাগের উপরিভাগে কাঁচা সব্জি, আলু, পিঁয়াজ, কাকরোল রাখা ছিল।

এদিকে গাঁজাসহ হাতেনাতে আটক হওয়া বাবুল চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, বিজয়নগর থানার পুলিশ দাঁড়িপাল্লায় ওজন দিয়ে, প্রতি কেজি গাঁজা বাবদ ৫০০ টাকা আদায় করে নেওয়ার পরই টোকেন দিয়েছেন।

প্রয়োজনে থানায় ফোন করে টোকেনের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়ারও অনুরোধ জানান তিনি।

অপর মাদক ব্যবসায়ী শামসুল ইসলাম বলেন, ‘থানার টোকেন নিয়ে ৮/১০ বার গাঁজার চালান নিয়ে রাজধানীতে আসা-যাওয়া করলাম। এর আগে তো এমন ঝামেলায় পড়ি নাই। ’


বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ