খাগড়াছড়ি: পার্বত্য খাগড়াছড়ির পাহাড়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজা পরিণত হয়েছে পাহাড়ে বসবাসরত সব সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের উৎসব হিসেবে।
খাগড়াছড়িতে এবার ৪৯টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব।
খাগড়াপুর দুর্গা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জয় প্রকাশ ত্রিপুরা বলেন, রিনাই-রিসা হচ্ছে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী একটি পোশাক। এই পোশাকে আমরা এ বছর দেবী দুর্গাসহ লক্ষ্মী, স্বরসতীকে সাজিয়েছি। পানছড়ির কুড়াদিয়া ছড়ায় একইভাবে দেবী দুর্গাকে সাজানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
খাগড়াছড়ির পূজা মণ্ডপগুলোতে হিন্দুদের চেয়ে অন্য ধর্মাবলম্বীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।
এদিকে, কেন্দ্রীয় লক্ষ্মী নারায়ণ মন্দিরের বিশাল প্রাঙ্গণজুড়ে নানা পসরা নিয়ে বসেছেন ভ্রাম্যমাণ দোকানিরা। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মেলায় অংশ নিতে এসেছেন ব্যবসায়ীরা।
বিগত কয়েক বছর ধরে রাজশাহী থেকে মাটির জিনিস বিক্রি করতে আসা ওবায়দুল মিয়া জানান, প্রায় ৫/৭ বছর ধরে তিনি এখানে আসেন। দুর্গা পূজাকে টার্গেট করে আসলেও হিন্দু ও চাকমাদের বেশ কয়েকটি উৎসব পাওয়া যায়।
ঢাকা থেকে আসা ব্যবসায়ী মো. মারুফ বলেন, দুর্গা পূজার বেচাকেনা শেষ হলেই কঠিন কঠিন চীবর দানোৎসব শুরু হয়। কঠিন চীবর দানোৎসব শেষ হতেই শুরু হয় রাস উৎসব। আর এই উৎসব ঘিরে সব ধর্মের মানুষ ঘর সাজাতে জিনিসপত্র কিনতে আসে। তাই আমাদের বেচাকেনাও অনেক ভালো হয়।
খাগড়াছড়ি লক্ষ্মী নারায়ণ মন্দিরের দুর্গা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল দেব বলেন, ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া দুর্গা উৎসবের বাকি সবক্ষেত্রে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের অংশগ্রহণ সংখ্যার দিক থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদেরও ছাড়িয়ে যায়।
খাগড়াছড়ি কেন্দ্রীয় সনাতন ছাত্র যুব পরিষদের সভাপতি স্বপন ভট্টাচার্য জানান, দীর্ঘ বছর ধরে পূজা উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন, কবিতা প্রতিযোগিতার আয়োজন হচ্ছে। এতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছাড়াও চাকমা, মারমা, মুসলমানসহ সবাই অংশ নেয়।
স্থানীয়দের প্রত্যাশা উৎসব-পার্বণের মধ্য দিয়ে পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন সবসময় অটুট থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১৬
এসআর