ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

জনবল ও যানবাহন সঙ্কটে আইএমইডি

উবায়দুল্লাহ বাদল | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১০

ঢাকা: জনবল ও যানবাহন সঙ্কটে শনির দশায় পড়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। জনবল ও যানবাহনের অভাবে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর প্রয়োজনীয় মনিটরিং ব্যাহত হচ্ছে।

উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের স্থবিরতায় একাধিকবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে আইএমইডি’কে আরও সক্রিয় ও শক্তিশালী করতে এবং প্রকল্পগুওলোর মনিটরিং বাড়াতে সাত বিভাগীয় শহরে নতুন অফিস স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

আইএমইডি’র সচিব আব্দুল মালেক মঙ্গলবার বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘আমাদের প্রধান সমস্যা হলো জনবল ও যানবাহন সঙ্কট। প্রতিষ্ঠানের গঠন কাঠামো (অর্গানোগ্রাম) অনুযায়ী ২৭২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকার কথা থাকলেও আছে ২০৪ জন। ৯১টি ক্যাডার কর্মকর্তা পদের ২৮টিই রয়েছে শূন্য। ’

তিনি জানান, যাত্রার শুরুতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) পরিমাণ ছিল গড়ে এক হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজার কোটি টাকায়। অথচ একই জনবল দিয়ে প্রায় ৩৮ গুণ এডিপির প্রকল্প মান নিশ্চিত করতে হচ্ছে আইএমইডিকে।
 
প্রকল্পের বাস্তবায়নে স্থবিরতার কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিকবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্বীকার করে আইএমইডি সচিব বলেন, ‘আমাদের প্রধান কাজ হলো প্রকল্পের মনিটরিং করা। অথচ মনিটরিং-এর জন্য কোনো যানবাহন নেই। গাড়ি না থাকায় প্রকল্প পরিদর্শনে যেতে চান না কর্মকর্তারা। ফলে প্রকল্প সরেজমিন পরিদর্শনসহ পরিবীক্ষণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। মনিটরিং কাজের জন্য সরকারের কাছে পাঁচটি জিপ চাওয়া হয়েছে।

শিগগিরই সাতটি বিভাগীয় শহরে আইএমইডির অফিস স্থাপনে সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে আব্দুল মালেক বলেন, ‘আমরা ২১টি পুরোনো জেলাতেও অফিস স্থাপনের প্রস্তাব করেছিলাম; কিন্তু প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির বৈঠকে তা নাকচ করা হয়েছে। এসব অফিস চালু হলে প্রকল্প মনিটরিং কিছুটা হলেও জোরদার হবে। ’

অনুসন্ধানে জানা গেছে, আইএমইডিতে বর্তমানে তিনটি পুরোনো ও তিনটি ভাড়ায় চালিত মাইক্রোবাস রয়েছে। এগুলো কর্মকর্তাদের যাতায়াতের কাজে ব্যবহৃত হয়। মনিটরিং-এর জন্য কোনো যানবাহন না থাকায় সরজমিন পরিদর্শন এখন হয় না বললেই চলে। এ বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণেরও কোনো ব্যবস্থা নেই। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে প্রযুক্তির ছোঁয়া লাগলেও আইএমইডিতে এর কোনো প্রতিফলন নেই। তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) বিষয়ক সিস্টেম এনালিস্ট ও প্রোগ্রামারের তিনটি পদসহ এ বিভাগের ৪টি পদই আশির দশক থেকে শূন্য রয়েছে ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নানা সঙ্কটে স্থবির হয়ে পড়েছে দেশের উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার একাধিক বৈঠকে এ বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। দাতা সংস্থাগুলোরও চাপ রয়েছে প্রকল্প বাস্তবায়নে।

বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ের নজরে আনা হলে গত বছরের ২৯ জুলাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। নির্দেশনা অনুযায়ী আইএমইডির একজন সদস্যকে প্রধান করে কমিটি গঠন করে।

ওই কমিটি গত ১১ ফেব্র“য়ারি আইএমইডিকে শক্তিশালী করতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশ প্রণয়ন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দেয়। সুপারিশটি গত ১৬ মার্চ সংস্থাপণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এরপর ২০ এপ্রিল আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে সাতটি বিভাগ ও ২১টি জেলায় নতুন কর্মী কাঠামো স্থাপনে ১৩২টি পদ সৃষ্টি করে সচিব কমিটির অনুমোদনের জন্য পাঠায় সংস্থাপন মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি ওই প্রস্তাব প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হলে শুধু সাতটি বিভাগীয় শহরে অফিস স্থাপনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।