দিনাজপুর: বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি ফের ঘেরাও করেছে খনি এলাকার ১০ গ্রামের ক্ষতিগ্রস্তরা। এতে অবরুদ্ধ হয়ে আছেন কয়লাখনির বেশ কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
জমির দাম পরিশোধ, পুনর্বাসন, ক্ষতিপূরণ ও চাকরির দাবিতে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সোমবার সকাল ১১টায় খনি অবরোধ করে ওই ১০ গ্রামের মানুষ।
এদিকে, দাবি না মানলে সড়ক ও রেলপথ অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে তারা।
সকালে স্থানীয় ‘ভূমি ও সম্পদ রক্ষা কমিটি’র ব্যানারে বিভিন্ন গ্রাম থেকে হাজারেরও বেশি গ্রামবাসী মিছিল নিয়ে কয়লাখনির প্রধান ও আবাসিক ফটকের সামনে জড়ো হয়। পরে এক সমাবেশে তারা ঘোষণা দেয়- দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য খনি ঘেরাও করে রাখা হবে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে দিনাজপুর সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমারের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত (রাত সাড়ে ৯টা) গ্রামবাসীদের বাধার মুখে পুলিশ অবরুদ্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্ধার করতে পারেনি।
‘ভূমি ও সম্পদ রা কমিটি’র সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মকলেছার রহমান বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘আমরা বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি এলাকার প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত। আমাদের জমির মূল্য, পুনর্বাসন, ক্ষতিপূরণ, চাকুরি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে খনি কর্তৃপক্ষ টালবাহানা করছেন। কর্তৃপক্ষ খনি এলাকায় কিছু দালাল তৈরি করেছেন। এদের বেশির ভাগই আংশিক তিগ্রস্তক্ষ এবং ক্ষতির সম্ভাবনাময় এলাকার। দালালরা ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের নিয়ে লোক দেখানো আন্দোলন করে। আর নিজেদের স্বার্থে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গোপনে আঁতাত করে। ওই দালালদের কারণে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের দাবি পূরণ হচ্ছে না। ’
সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা জামান বলেন, ‘সার্ভে করার আগে পুনর্বাসনের জায়গা নির্ধারণ, জমির মূল্য নির্ধারণ, ঘরবাড়ি ও ফসলি জমির ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের বেকার ছেলেমেয়েদের চাকরি দেওয়ার বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দাবি না মানলে সড়ক ও রেলপথ অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে হবে। ’
খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘সার্ভে না হওয়ার কারণে ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। গত দু’দিন ধরে অবরোধকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি। ’
এ ব্যাপারে ‘ভূমি ও সম্পদ রক্ষা কমিটি’র সাংগঠনিক সম্পাদক সোলায়মান সামি বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ আন্দোলনের কথা শুনলেই যোগাযোগ করেন আন্দোলন থামিয়ে দেওয়ার জন্য। আজ কর্তৃপক্ষ কোনো যোগাযোগ করেনি। ’
অপরদিকে স্থানীয় ‘জীবন ও সম্পদ রক্ষা কমিটি’ এ আন্দোলনের সঙ্গে না থাকার ঘোষণা দিয়েছে।
সংগঠনটির আহবায়ক ইব্রাহিম খলিল মোবাইল ফোনে জানান, তার সমর্থিত গ্রামবাসীরা এই আন্দোলনের সঙ্গে নেই।
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০১০