ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘প্রথমআলো’ নিষিদ্ধ: প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও

জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০১০

ময়মনসিংহ: শিক্ষক-ছাত্রীদের জড়িয়ে রুচিহীন সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে রোববার ‘প্রথমআলো’ পত্রিকা পোড়ানোর পর সোমবার ক্যাম্পাসে পত্রিকাটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
 
ময়মনসিংহের ত্রিশালে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ও সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো ক্লাস বর্জন অব্যাহত রাখেন।

মিডটার্ম পরীক্ষা বর্জন করেছেন ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এছাড়া শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করেন।
 
ক্যাম্পাস সূত্র জানায়, সোমবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করেন। দুপুর আড়াইটার দিকে তারা প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করেন। এ সময় উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে ছুটে এলেও ঘটনার সুষ্ঠু সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কয়েকজন বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্রীদের জড়িয়ে গত শনিবার প্রথমআলো পত্রিকায় ‘কুরুচিকর’ সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এ ঘটনার জের ধরে রোববার থেকে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন।

এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সঙ্গীত এবং ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় দিনের মতো ক্লাস বর্জন করেন। এছাড়া সোমবার ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ‘ওয়েস্টার্ন থট’ বিষয়ের মিডটার্ম পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও পরিক্ষার্থীরা তা বর্জন করেন।

এরপর চুরুলিয়া মঞ্চে ও প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে তারা ক্যাম্পাসে ‘প্রথমআলো’ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।

সমাবেশ শেষে উভয় বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন।

চুরুলিয়া মঞ্চের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়েরই একটি মহলের উস্কানিতে কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ও সুনাম নষ্ট করার অপচেষ্টায় শিক্ষক-ছাত্রীদের নামে তথ্যসন্ত্রাস চালানো হচ্ছে। ’

এদিকে প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকলে তাদের শান্ত করতে কোষাধ্যক্ষ ও রেজিস্ট্রারকে সঙ্গে নিয়ে ছুটে যান উপাচার্য প্রফেসর ড. সৈয়দ গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদ।

বিুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাদের কাছে ‘প্রথমআলো’ পত্রিকায় উদ্দেশ্যমূলক রিপোর্ট প্রকাশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্ধনদাতা মহলের বিরুদ্ধে কি ব্যাবস্থা নেওয়া হচ্ছে তা জানতে চান।

জবাবে উপাচার্য বলেন, ‘উস্কানি রয়েছে কি না তা জানতে এক মাসের মধ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি  গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতেই অ্যাকশন নেওয়া হবে। ’

‘প্রথমআলো’ পত্রিকা নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে মঙ্গলবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘যৌন নিপীড়ন সম্পর্কে সচেতন থাকতে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয় ভিসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়েও যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি সব যাচাই করে রিপোর্ট দিবে। তদন্ত শেষ হবার আগে আন্দোলন করলে কোনো লাভ হবে না। ’
 
উপাচার্যের এ বক্তব্যের পর শিক্ষার্থীরা সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত রাখার ঘোষণা দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।