মিরসরাই থেকে: চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের সড়ক দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত অন্তত ৪৪ শিশু কিশোরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত রয়েছে আরও অনেকে।
সোমবার সন্ধ্যায় মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইফতেখার হাসান মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন। তিনি উদ্ধার কাজ সমাপ্ত বলেও জানান।
আবু তোরাব-বড়বাতিয়া মহাসড়কে স্কুল শিক্ষার্থীদের বহনকারী একটি ট্রাক সোমবার দুপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয়রা জানান ঘটনার পরপরই স্থানীয় নারী-পুরুষ দ্রুত ছুটে এসে উদ্ধার অভিযান শুরু করে।
নিহতদের মধ্যে ২২ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হচ্ছে, ধ্রুব নাথ (১৭), রনি (১৫), ইমরান (১৭), ইফতেখার (১৬), আনন্দ দাস (১২), জাহিদুল (১৩), কামরুল (১৬), টিটু দাস (১৬), লিটন দাস (১৭), জাহিদুল ইসলাম (১৬), স্বপন দেবনাথ, রাজিব, রাজু, আনোয়ার (৩০), শুভ, সাজু, রাকিবুল, আরিফ, সাজ্জাদ, জুয়েল, মেজবাহ উদ্দিন ও জুয়েল।
উদ্ধারকারীদের একজন একরামুল বাংলানিউজকে বলেন, তারা অন্তত ৬৫ জনকে উদ্ধার করেছেন যাদের অনেকেই ছিল মৃত এবং কেউ কেউ গুরুতর আহত।
হতাহতরা সবাই আবু তোরাব উচ্চ বিদ্যালয় ও আঞ্জুমাননেসা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র। মিরসরাই স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে ফেরার পথে এ দুর্ঘটনায় পড়ে তারা।
এর আগে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহমেদ বাংলানিউজের কাছে ২৬ জনের ও পুলিশ সুপার জেড এম মোরশেদ ২৭ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পুলিশ সুপার জানান মিরসরাই ক্লিনিকে ১১টি থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৩টি ও চট্টগ্রাম মেডিকেলে ৩টি লাশ রয়েছে।
ক্লিনিকে ও হাসপাতালে রাখা ২৭টি মরদেহের পাশাপাশি আরও ১৫টি লাশ ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা নিয়ে গেছে বলে নিশ্চিত করে স্থানীয় একাধিক সূত্র।
এদিকে, উপজেলা চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন জানান, মৃতের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়ে যেতে পারে। তিনি জানান, ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা ছুটে এসে সন্তানদের দ্রুত নিজ নিজ বাড়িতে নিয়ে যান।
এদিকে, দুর্ঘটনার পর এরই মধ্যে নিহতদের স্বজনরা কেউ ঘটনাস্থলে, কেউ ক্লিনিকে আবার কেউ থানায় ভিড় করেছেন। এসব স্থানে সৃষ্টি হয়েছে হৃদয় বিদারক পরিস্থিতি। তাদের আহাজারিতে গোটা মিরসরাইয়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
দুর্ঘটনায় নিহত একটি শিশুর বাবা থানা প্রাঙ্গনেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
এদিকে দুর্ঘটনার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১১