ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

জনগণের সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীর দূরত্ব কমিয়ে আনতে প্রতিরক্ষা নীতি হচ্ছে

এমএকে জিলানী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০১০
জনগণের সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীর দূরত্ব কমিয়ে আনতে প্রতিরক্ষা নীতি হচ্ছে

ঢাকা: জাতীয় স্বার্থে রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ছাড়া প্রতিরক্ষা বাহিনীর সকল তথ্য জনগণের জন্য উন্মুক্ত রাখার বিধান রেখে জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়ন করতে যাচ্ছে সরকার।

জনগণের সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীর দূরত্ব কমিয়ে আনতে দেশে প্রথম বারের মতো এ নীতি প্রণয়ন করা হচ্ছে।



এরই মধ্যে নীতির খসড়া তৈরির কাজ শুরু করেছে একটি খসড়া প্রণয়ন কমিটি।

স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, আইন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটির কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে বলে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে নিশ্চিত করেছেন কমিটির একাধিক কর্মকর্তা।

নীতিটি চ’ড়ান্ত হলে জরুরি প্রয়োজনে দেশের প্রতিরক্ষায় সাধারণ মানুষের প্রস্তুতি ও অংশগ্রহণ পরিকল্পিতভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলেও মত দিয়েছেন এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।

কমিটির একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘স্বাধীনতার পর (বিশেষ করে ১৯৭৫ সালে) সেনাবাহিনীর ভ’মিকা নিয়ে একাধিকবার প্রশ্ন উঠেছে। রাষ্ট্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এই বাহিনীর বিরুদ্ধে একাধিকবার রাষ্ট্রীয় ক্যুর অভিযোগ রয়েছে। এ অবস্থায় জনগণ ও দেশের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে ভবিষ্যতে এরকম অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে  এই নীতি প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ’

কমিটির আরেক সদস্য বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে সাধারণ জনগণের ব্যাপক দূরত্ব রয়েছে। কেননা সশস্ত্র বাহিনীর তথ্যগুলো উন্মুক্ত নয়। এ দূরত্ব কমিয়ে আনতে প্রতিরক্ষা নীতি ভ’মিকা রাখবে। ’  

তিনি আরো বলেন, এছাড়া নীতিটি চ’ড়ান্ত হলে প্রতিরক্ষা সম্পর্কে সাধারণের মনে কোনো ভীতি থাকবে না।

এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার ও বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব) সাখাওয়াত হোসেন বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘নীতি না থাকায় সশস্ত্র বাহিনীতে এডহক ভিত্তিতে প্রতিরক্ষা নীতির শূণ্যতা পূরণ করা হচ্ছে। নীতিটি চ’ড়ান্ত হলে সশস্ত্র বাহিনী কী কাজ করবে এবং তাদের দিক-নির্দেশনা কী হবে এ বিষয়গুলো সুস্পষ্ট হবে। ’

তিনি আরো বলেন, ‘সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি দিক-নির্দেশনা, ভবিষ্যতে দেশে এবং বাইরের শত্রু থেকে কী ধরণের আক্রমণ হতে পারে, আক্রমণ হলে তা প্রতিরোধের পথ কী হবে, সশস্ত্র বাহিনীর ব্যবস্থাপনা ও জনবল কেমন হবে, সশস্ত্র বাহিনী থেকে জাতি কী চায় এবং সশস্ত্র বাহিনীর বাজেট এই বিষয়গুলো প্রতিরক্ষা নীতিতে থাকা উচিত। ’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক সেনা প্রধান মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘প্রতিরক্ষা নীতি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমাদের দেশে এটি না থাকায় অতীতে অনেক ক্ষেত্রেই সমন্বয়হীনতা দেখা গেছে। নীতির অভাবে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রকিউরমেন্ট, যুদ্ধ নীতিসহ অনেক ক্ষেত্রেই গ্যাপ রয়েছে। ’

তিনি আরো বলেন, ‘সেনা, নৌ ও বিমান এই তিন বাহিনীকে কে নিয়ন্ত্রণ করবে তা প্রতিরক্ষা নীতিতে থাকা উচিত। ’

প্রতিরক্ষা নীতি পররাষ্ট্র নীতির সঙ্গে সম্পূরক হতে হবে বলে মত দিয়ে সাবেক সেনা প্রধান বলেন, ‘নীতি চুড়ান্ত হলে প্যারা-মিলিটারি, আনসারসহ সশস্ত্র বাহিনীর অন্য উইংগুলো কীভাবে পরিচালিত হবে তা সুস্পষ্ট হবে বলে আশা করছি।

প্রতিরক্ষা নীতি থাকলে দেশের জরুরি প্রয়োজনে পেশাদার বাহিনীর সঙ্গে অপেশাদারদেরও সহায়তা নেওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১০-২০১১ অর্থ-বছরের বাজেটেই নতুন প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়নের কথা জানানো হয়। এ লক্ষ্যে বাজেট বরাদ্দও রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময় : ১৭৫০ ঘণ্টা, ৮ আগস্ট, ২০১০।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।