ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ভারতের সাত রাজ্যে পণ্য পরিবহনে ট্রানজিট দেবে বাংলাদেশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০১০
ভারতের সাত রাজ্যে পণ্য পরিবহনে ট্রানজিট দেবে বাংলাদেশ

ঢাকা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যে পণ্য ও মালামাল পরিবহনের জন্য ভারতকে ট্রানজিট দেবে বাংলাদেশ। রোববার বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মন্ত্রী।



তিনি বলেন, ‘আমরা সড়ক ও রেলপথের মাধ্যমে এ অঞ্চলের সব দেশের সঙ্গে সংযোগ (কানেক্টিভিটি) প্রতিষ্ঠা করতে চাই। তাই আমরা কাউকে বলতে পারি না তোমরা এ পর্যন্ত যেতে পারবে, এর বেশি আর যেতে পারবে না। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূখন্ড ব্যবহার করে ভারত ‘সাত বোন’ নামে পরিচিত তার পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে যেতে পারবে। বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। ’

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ নেপাল ও ভূটানকে তৃতীয় দেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য করার জন্য চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার করতে দেবে। সেক্ষেত্রে স্থলবেষ্টিত নেপাল ও ভুটানকে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে আসার জন্য ভারত তার ভূখন্ড ব্যবহার করতে দেবে।

দীপু মনি বলেন, এখন যত দ্রুত এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা যায় আমরা সে পদক্ষেপই নিচ্ছি। এজন্য প্রটোকল সংশোধন বা নতুন কোন প্রটোকল করার দরকার নেই। আমরা এক্সচেঞ্জ অব লেটার-এর মাধ্যমেই তা করতে পারবো।

ট্রানজিটের ক্ষেত্রে ভারত ফি কমানোর যে প্রস্তাব দিয়েছে সে বিষয়ে তিনি বলেন, ফি কমানো আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না। কেননা এটা আমাদের আয়ের একটি বড় উৎস হবে। তবে এসব বিষয় আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হবে।

ভারতের ভূখন্ড ব্যবহার করে শুধু যে নেপালের পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে আসতে পারবে তা নয়, আমাদের পণ্যবাহী ট্রাকও নেপাল ও ভূটানে যেতে পারবে বলেও তিনি জানান।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে ট্রাক চলাচলে দুই দিকেই যাতায়াতের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের ট্রাকও নেপাল এবং ভূটানে যেতে পারবে’।  

নেপাল ও ভূটানের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপন বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ‘এ দুই দেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপনের জন্য সব স্থানে আমাদের রেল লাইন নেই। তাই কোথাও রেল লাইন স্থাপন করতে হবে আবার কোথাও তা সংস্কার করতে হবে। আমরা এসব বিষয় বাস্তবায়নের কাজে হাত দিয়েছি। কেননা আমরা সব দেশের সঙ্গে যোগাযোগ ও সংযোগ স্থাপন করতে চাই।

ভারতের একটি ব্যাংকের সঙ্গে এক বিলিয়ন ডলার ঋণ গ্রহণের চুক্তি করায় প্রধান বিরোধী দল বিএনপি যে সমালোচনা করছে, এর জবাবে তিনি বলেন, ‘ভারত সরকার ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা দিয়েছে। তাই এ চুক্তি অস্বাভাবিক কিছু নয়। অন্যান্য দেশের সঙ্গেও এ ধরনের চুক্তি হয়। ’

এ চুক্তির আওতায় যেসব প্রকল্প নেওয়া হয়েছে সেগুলো যথাসময়ে এবং দ্রুত বাস্তবায়ন শুরু হবে বলেও তিনি জানান।

ভারতের স্বার্থেই বাংলাদেশ ঋণ নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বলে যে সমালোচনা সে সর্ম্পকিত এক প্রশ্নের জবাবে দীপু মনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বার্থেই ঋণ নেয়া হয়েছে। এ ঋণে যে প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে তাতে হয়ত ভারতের সুবিধা হতে পারে। তাই বলে এটা কোনভাবেই বলা যাবে না যে, তাদের স্বার্থেই এ ঋণ নেয়া হয়েছে। দ্ইু পক্ষই লাভবান না হলে কেউ ঋণ দেয় না বা নেয় না। ’

তিনি বলেন, ‘এ ঋণে আমাদের সড়ক, বন্দর ও রেল ব্যবস্থার উন্নতি হবে। তারপরেও এতে আমাদের লাভ হবে না এমন নেতিবাচক চিন্তা থেকে বের হয়ে নাএলে আমাদের কোনদিনও কোনো কিছুতে লাভ হবে না। ’

ঋণের অর্থে এপর্যন্ত ১৪টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। বাকি অর্থ ব্যয়ে অন্যান্য প্রকল্পও দ্রুত চূড়ান্ত করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে দীপু মনি বলেন, ভারতের কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগামী সেপ্টেম্বরে ‘সোনারতরী এক্সপ্রেসে’ বাংলাদেশে আসবেন।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৯০০ঘন্টা, ৮ জুলাই, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।