ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দিনাজপুর টেক্সটাইল মিলে নষ্ট হচ্ছে ৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ

সানি সরকার, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৬ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১১
দিনাজপুর টেক্সটাইল মিলে নষ্ট হচ্ছে ৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ

দিনাজপুর: দিনাজপুর জেলায় একমাত্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান দিনাজপুর টেক্সটাইল মিলস লি. বন্ধ হওয়ার ৩ বছর ৩ মাসেও চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অযতেœ ও অবহেলায় নষ্ঠ হচ্ছে ৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ।

অথচ মিলটি চালু হলে কর্মসংস্থান হবে প্রায় দেড় হাজার শ্রমিকের। পাশাপাশি সরকার পাবে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব।

২০০৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই মিলটিকে চালুর ঘোষণা দিয়েছিলেন।

দিনাজপুর টেক্সটাইলস্ মিলস্ লি.-এর সূত্রে জানা যায়, স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তৎকালীন সরকার দিনাজপুর সদর উপজেলার সদরপুরে ১৯৭৫ সালে ১লা মার্চ ৩৬ একর ৫৪ শতক জমি অধিগ্রহণ করে দিনাজপুর টেক্সটাইল মিলস্ লি. এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে। মিলটি পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয় ১৯৭৮ সালের ১ নভেম্বর। সে মিলটিতে নিয়োগ পায় ২১ জন কর্মকর্তা, ১৪০ কর্মচারী ও ১৩৫০ জন শ্রমিক।

১৯৮০ সালের ১৬ই অক্টোবর মিলটি বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদনে যায়। সে সময় মিলটি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করেও প্রতি বছর ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা মুনাফা অর্জন করতো।

১৯৯৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মিলটিকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করা হয়। ২০০৩ সালে ৪ দলীয় জোট সরকারের আমলে মিলটির উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে শ্রমিকদের দাবির মুখে ২০০৬ সালে মিলটিকে পুনরায় উৎপাদনে নিয়ে যাওয়া হয়। ২০০৮ সালের ২৯ মার্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মিলটিকে বন্ধ করে দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়। মিলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকার হয়ে পড়ে ১৩৫০ জন শ্রমিক।
 
টেক্সটাইলস্ মিলের অভ্যন্তরে চারটি বিশাল গুদাম রয়েছে। এর মধ্যে ২টি গুদামকে প্রতিটি বার্ষিক ১০ হাজার টাকায় ভাড়া দেওয়া হয়েছে। মিলের অভ্যন্তরে একটি সুতা উৎপাদন কারখানা, তিনটি স্টাফ কোয়ার্টার, একটি সিনিয়র স্টাফ অফিসার্স কোয়ার্টার, দু’টি স্টাফ কোর্য়াটার, একটি জুনিয়র স্টাফ কোয়ার্টার, একটি মেডিকেল সেন্টার (হাসপাতাল), একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একটি মসজিদ রয়েছে। বর্তমানে এগুলো সবই বন্ধ হয়ে গেছে। ছাদ দিয়ে মেশিনঘরে পানি পড়ে মেশিনগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।
 
এ ব্যাপারে মিলের উপ-মহাব্যবস্থাপক সাইদুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, মিলটি পুনরায় চালুর ব্যাপারে বিটিএমসিতে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। মিলটি চালু করতে হলে নতুন মেশিন সংযোগসহ আরও ২৪ কোটি টাকার প্রয়োজন।

মিলটির হিসাব রক্ষক আব্দুল মান্নান বাংলানিউজকে জানান, বর্তমানে মিলে একজন কর্মকর্তা, ৭ জন কর্মচারী ও ১৩ জন সিকিউরিটি রয়েছেন।

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে দিনাজপুর বড় ময়দানে ২০০৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর এক বিশাল জনসভায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেক্সটাইল মিলটি চালু করার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।