ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সংশোধিত বাজেট পাস

তিন বছরেই বাজেটের আকার জিডিপির ২০ শতাংশে উন্নীত করার প্রত্যয় অর্থমন্ত্রীর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৮ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১০

ঢাকা: অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আগামী তিন বছরের মধ্যে বার্ষিক বাজেটের আকার (অর্থমন্ত্রীর ভাষায় জাতীয় ব্যয়) মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২০ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

আজ সোমবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ২০০৯-১০ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের ওপর দেওয়া বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।



অধিবেশনে ১১ হাজার ৯৮৭ কোটি ৮০ লাখ ৮৭ হাজার টাকার মঞ্জুরি দাবিসহ ১ লাখ ১০ হাজার ৫২৩ কোটি টাকার ২০০৯-১০ সালের সংশোধিত বাজেট প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে পাশ হয়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গত ১০ জুন এই বাজেট উত্থাপন করেন।

চলতি অর্থবছরের জন্য মূল বাজেটে ৫৩টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অনুকূলে মোট ১ লাখ ১৩ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। সংশোধিত বাজেটে ৩৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বরাদ্দ ১১ হাজার ৯৮৭ কোটি টাকা বৃদ্ধি এবং ১৭টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বরাদ্দ ১৫ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা কমে। সার্বিকভাবে মূল বাজেটে ৩ হাজার ৯৯৬ কোটি টাকা কমে সংশোধিত বরাদ্দ ১ লাখ ১০ হাজার ৫২৩ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৪ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে এ লক্ষ্যমাত্রা ৮৩ হাজার ২২৬ কোটি টাকা করা হয়। এছাড়া মূল বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি খাতে বরাদ্দ ছিল সাড়ে ৩০ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে এখাতে তিন হাজার কোটি টাকা কমানো হয়েছে।

স্পিকার অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ অনুপস্থিত থাকায় বেলা ১১টায় ডেপুটি স্পিকার শওকত আলীর সভাপতিত্বে শুরু হয় অধিবেশন। সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকারি ব্যয় অত্যন্ত নিম্নমানের (অর্থাৎ আমাদের জাতীয় বাজেটের আকার খুবই কম)। তাই গতবার এর পরিমাণ বাড়িয়েছি। এবারও বেশ কিছুটা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। এ বছর আশা করছি এ ব্যয় জিডিপির ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছাবে। আগামী তিন বছরের আরো অন্তত ৩ শতাংশ এগিয়ে যেতে হবে। ’

তিনি বলেন, ‘আগামী বাজেটে চিনির ওপর আমদানি শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাবে এরই মধ্যে চিনির দাম বাড়তে শুরু করেছে। এছাড়া চালসহ আরো কয়েকটি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামও বাজেটের পর বেড়েছে। এ নেতিবাচক মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বাজেট ঘোষণার সঙ্গে দাম বাড়ানোর কোনো সম্পর্ক নেই। ’

‘বাজেট বাস্তবায়ন কঠিন হবে’ বিরোধীদল ও অর্থনীতিবিদদের এমন মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘গত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের যে প্রাক্কলন (লক্ষ্যমাত্রা) আমরা ধরেছিলাম তাকেও অনেকে উচ্চাভিলাষী বলেছিলেন। কিন্তু সেটা আমরা অর্জন করতে পেরেছি। এ অর্জনের জন্য করদাতা ও কর প্রশাসন প্রশংসার দাবি রাখে। প্রত্যক্ষ করের হার অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেড়েছে। পণ্য ও সেবা সরবরাহকারীরাও মূসকের হার ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছেন। ’

বাজেটের বাস্তবায়নে সরকারের দুর্বলতা রয়ে গেছে স্বীকার করে নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নতুন নতুন উৎসের  সন্ধান করতে হবে এবং উদ্ভাবনী চিন্তা দিয়ে সেগুলো থেকে রাজস্ব বাড়ানোর উপায় বের করতে হবে। ’

সংশোধিত বাজেটের ওপর আলোচনায় আজ আরও অংশ নেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান, সাংসদ মো. ফজলে রাব্বি মিয়া ও অধ্যাপক আলী আশরাফ। তারা প্রত্যেকেই বাজেটের বিভিন্ন ইতিবাচক দিক তুলে ধরে অর্থমন্ত্রীর প্রশংসা করেন।

আগামীকাল বিকাল চারটায় আবারো বসবে সংসদ।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৮০৬, জুন ১৪, ২০১০
এসএফ/এমএমকে/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।