ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সোম ও মঙ্গলবার জামায়াতের বিক্ষোভ কর্মসূচি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪২ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০১১

ঢাকা: হরতাল সফল হয়েছে দাবি করে জামায়াত বলেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের ব্যাপারে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিতে চাচ্ছে আজকের হরতাল প্রমাণ করে সাধারণ জনগণ তা মানে না।

পুরানা পল্টনে জামায়াতে ইসলামীর মহানগর কার্যালয়ে রোববার বিকেলে পুলিশের বাধা, গ্রেপ্তার, হামলা ও মামলার প্রতিবাদে আয়োজিত হরতাল-পরবর্তী সমাবেশে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম  কথা বলেন।



সমাবেশ থেকে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে জামায়াত ও চারদলীয় জোটের সকল নেতাকর্মীর মুক্তির দাবিতে এবং হরতালে পুলিশের বাধা ও হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল সোমবার রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ। আগামী মঙ্গলবার একই কর্মসূচি দেশব্যাপী পালিত হবে।

এটিএম আজহার  বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তি সংবাদ মাধ্যমে বলছেন আজকের এই হরতাল সরকারের বিরুদ্ধে নয়, আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে। আমরা বলে দিতে চাই এই হরতাল সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। ’

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে ব্যারিস্টার রফিক-উল-হকের সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যে প্রধানমন্ত্রী একটি সত্যকে প্রকাশ করছেন, অন্য সত্যটি ঢেকে দিচ্ছেন, সে প্রধানমন্ত্রীর ব্যাপারে জনগণ শঙ্কিত। ’

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রসঙ্গে সরকারের পদক্ষেপের ব্যাপারে প্রধান বিচারপতির নিশ্চুপ থাকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘দেশে সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক একমাত্র ব্যক্তি, যিনি রায়ের দু’টি অংশ জনগণের সামনে প্রকাশ করেছেন। অথচ এ রায় যার হাত দিয়ে ্এল সেই প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক আজও সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ  করেননি। এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক। ’

আজহারুল ইসলাম প্রধান বিচারপতির প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আপনার এ নিশ্চুপ থাকাকে জামায়াতে ইসলামী ও দেশের জনগণ ‘আপনি অর্থ কেলেঙ্কারিতে জড়িত’ এমন ধারণা পোষণ করবে কি? জনগণ কি ধরে নেবে আপনি দায়িত্বপালনকালে যতোগুলি রায় দিয়েছেন সবই সরকারের কাছ থেকে ঘুষ খেয়ে দিয়েছেন?’

সংবিধান সংশোধন সম্পর্কে তিনি বলেন, বাংলাদেশের পবিত্র সংবিধান দেশের জনগণের স্বার্থে নতুন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত আদালতের রায়ে কখনো বাতিল হতে পারে না। নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জনগণের দাবির মুখে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে ভবিষ্যতেও জনগণ আন্দোলন করে যাবে।

তিনি সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আওয়ামী লীগ দলীয় সংখ্যা গরিষ্ঠতার সুযোগে সংসদে বসে যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্ত না নেয়, তাহলে বাংলাদেশের জনগণ আগামী কোনো নির্বাচন এ সরকারের অধীনে করবে না।

সমাবেশে তিনি জানান, রোববারের হরতালে রাজধানীতে জামায়াত-শিবিরের ১৪ নেতাকর্মীসহ সারাদেশে প্রায় ৬০ জনকে আটক করা হয়েছে। অন্যায়ভাবে আটক করা এসব নেতাকর্মীর অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন তিনি।

হরতালপূর্ব এবং হরতালের সময় দেশব্যাপী সহিংসতার সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জড়িত দাবি করে তিনি বলেন, হরতালের সময় গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, বোমা বিস্ফোরণ এসব সহিংস কাজে জামায়াত ও চারজোট বিশ্বাস করে না। এটা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি। তারা নিজেরাই এসব কাজ করেছে। পুলিশ বক্সের সামনে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি তা প্রমাণ করে।

ঢাকা মহানগর আমির মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে আয়োজিত সমাবেশে মহানগর সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ এমপি, সহাকারী সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানসহ মহানগরের অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad