ঢাকা: তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষকে পুঁজি করে ‘পরিকল্পিত নাশকতা’য় ইন্ধন ও মদদদাতাদের গ্রেপ্তারে তৎপর হয়েছে পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এজন্য দু’ শতাধিক ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ, ডিবি, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থাসহ (এনএসআই) চারটি গোয়েন্দা সংস্থার পৃথক পৃথক প্রতিবেদনে এ খাতে চলমান অস্থিতিশীলতার জন্য এদের দায়ী করা হয়।
এরই মধ্যে মদদদাতা ও ইন্ধনদাতাদের তালিকাসহ গোয়েন্দা প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র সচিব আব্দুস সোবহান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সোমবার স্বরাষ্ট্র সচিব আব্দুস সোবহান বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডি কে বলেন, কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন নিয়ে রোববার রাতেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ডেকে জরুরি বৈঠক করেন।
বৈঠকে গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ওপর বিস্তারিত পর্যালোচনার পর অবিলম্বে ইন্ধনদাতাদের গ্রেপ্তার করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেকটি সূত্র জানায়, মদদদাতাদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি নেপথ্যের ইন্ধনদাতাদের তৎপরতা নজরদারিরও বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রোববার রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার সকাল থেকেই মদদদাতাদের তালিকা নিয়ে তৎপর হয়ে পড়েছে পুলিশের বিভিন্ন শাখা ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, পোশাক শিল্পের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি জরুরিভাবে মোকাবেলা করতে গোয়েন্দা, পুলিশ ও র্যাবের সমন্বিত কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এক্ষেত্রে সারা দেশের গার্মেন্টস খাতকে ৬টি অঞ্চলে ভাগ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দেওয়া হয়েছে বিশেষ নির্দেশা।
অঞ্চলগুলো হচ্ছে-সাভার-আশুলিয়া (১), টঙ্গী-গাজীপুর (২), মিরপুর-পল্লবী-কাফরুল (৩), তেজগাঁও-গুলশান-বাড্ডা-রামপুরা (৪), ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ(৫) এবং চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ-নাছিরাবাদ (৬)।
এর পাশাপাশি দেশে গড়ে ওঠা প্রতিটি রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) স্থাপিত গার্মেন্টস কারখানাগুলোর দিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সার্বক্ষণিক নজরদারিরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার একেএম শহিদুল হক বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডি কে বলেন, ‘গার্মেন্টস সেক্টরের অরাজকতা যে কোনো মূল্যে মোকাবেলার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশ সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নিয়েছে। ’
তিনি জানান, ঢাকা মহানগরে চিহ্নিত তিনটি গার্মেন্টস জোনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ও তাদের মদদদাতাদের জরুরি ভিত্তিতে গ্রেপ্তারে ৬টি গোয়েন্দা দলকে মাঠে নামানো হয়েছে।
শহিদুল হক আরো বলেন, ‘তালিকাভুক্ত ১০ মদদদাতাকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ’
তবে এ দশ জনের নাম জানাতে রাজি হননি তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০১০