ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রাজধানীতে ছিনতাই আতঙ্কেও ব্যক্তি পরিবহণে যাত্রী

মহিবুব জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৫ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১১
রাজধানীতে ছিনতাই আতঙ্কেও ব্যক্তি পরিবহণে যাত্রী

ঢাকা: নিয়ন্ত্রণ ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থার অভাবে রাজধানীতে অবাধে চলছে ব্যাক্তিগত কার, মাইক্রোবাস, অটোরিক্সাতে যাত্রী পরিবহন। আর ছদ্দবেশী ছিনতাইকারীরা এভাবে গাড়িতে উঠিয়ে যাত্রীদের সব কিছু ছিনিয়ে নিয়ে ফেলে দেয় রাস্তায়।

আবার ছিনতাইকারীরা ছদ্দবেশে যাত্রী বেশে গাড়িতে উঠে চালককে জিম্মি করে ছিনতাই করছে গাড়িও ।


অফিস সময়ে রাজধানীর বিভিন্ন বাস থামার স্থানে যখন যাত্রীরা পাবলিক পরিবহনের আশায় চাতক পাখির মত তাকিয়ে থাকে ঠিক সেই সময়ে কোন প্রাইভেট কার অথবা মাইক্রোবাসের চালক এসে দাড়ায় সেখানে। গাড়িতে মালিক না থাকায় তিনি বাড়তি কিছু টাকা রোজগারের আসায় রাস্তার পাশে দাড়ানো ২-৩ জন যাত্রীকে তুলে নেয় গাড়িতে।

পাবলিক পরিবহনে ভিড় এড়াতে অনেক সময় অফিস সময়ে বাসে উঠতে না পেরে কর্মক্ষেত্রে সঠিক সময়ে আরাম করে যাতায়াতের আশায় যাত্রীরা এসকল যানবাহনে উঠছে।

রাজধানীর ফার্মগেটে, মতিঝিল, যাত্রাবাড়ি, শাহবাগ, মিরপুর ১০, ১১, ২, শেওড়াপাড়া, কল্যাণপুর, গাবতলি, মহাখালীসহ অন্যান্য অনেক বাসস্টান্ডগুলোতে সকাল ও সন্ধায় এসময় যাত্রীর খোজে দাড়ায় প্রাইভেট গাড়ি । ট্রাফিক পুলিশের নাকের ডগায় এভাবে যাত্রী উঠাতে দেখলেও এসকল যানবাহনের বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা নিতে দেখা যায় না তাদের। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়িতে একটু আরাম করে যাওয়ার আসায় অনেক বেশী ভাড়া দিয়েও যাত্রীরা উঠে এসকল গাড়িতে।

এবিষয়ে ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) পশ্চিম মো. মফিজউদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘ রুট পারমিট ছাড়া অন্য যানবাহনের যাত্রী পরিবহনের অনুমোদন নেই। যদি কোন ব্যাক্তিগত গাড়িতে যাত্রী পরিবহন করে তাহলে ট্রাফিক আইনে তার শাস্তির বিধান রয়েছে’।

তিনি আরও বলেন, যাত্রীর তুলনায় বাসের সল্পতার কারণে সাধারণত অফিস সময়ে এই ধরনের প্রাইভেট গাড়িগুলোকে যাত্রী তুলতে দেখা যায়। তবে সেটা দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের চোখে পড়লে অবশ্যই শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেন তিনি।

সাধারণত ওই সময়ে রাস্তায় প্রচুর যানজট থাকায় ট্রাফিক পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে এধরনের যাত্রী পরিবহন করা হয়ে থাকে বলে তিনি জানান।

গত ৫ মে দুপুরে মিরপুর থানা পুলিশ মাইক্রোবাসে যাত্রী হিসেবে তুলে পথে চোখে মলম লাগিয়ে এক যাত্রীর সবকিছু ছিনিয়ে নেওয়া ৪  ছিনতাইকারীকে গাড়িসহ আটক করে । এছাড়া গত বছর এক পুলিশ সদস্য ও একটি প্রাইভেট টিভি চ্যানেল কর্মী এই ধরনের এক ছিনতাইকারী চক্রের হাতে নিহত হয়।

গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯ টায় কল্যানপুরের বাসস্টান্ডে যখন যাত্রীরা বাসের আশায় দাড়িয়ে ছিল। ঠিক সেই সময়ে একটি টয়োটা হাইচ মডেলের মাইক্রোবাস আসে। চালক ডাক ছাড়ছে, মতিঝিল ৬০টাকা --মতিঝিল ৬০ টাকা। আর কিছু যাত্রী হুড়মুড় করে সেই মাইক্রোবাসটিকে ঢুঁকে পড়ল। কয়েকজন অবশ্য জায়গা না পাওয়ায় এর যেতে পারল না।

প্রাইভেট গাড়িতে রাস্তা থেকে লোক তুললেন কেন জানতে চাইলে চালক বলেন, খালি গাড়ি নিয়ে অফিসের কাজে যাচ্ছি এসময় একটু লোক তুললে বাড়তি রোজগার হয়। তাতে সারাদিনের খরচ চলে যাবে। ’

তিনি অবশ্য সাংবাদিক বুঝতে পেরে দ্রুত গাড়ি চালিয়ে চলে গেলেন । প্রাইভেট গাড়িতে ঝুঁকি নিয়ে কেন উঠেন জানতে চাইলে ওই মাইক্রোতে জায়গা না পাওয়া যাত্রী আবির হোসেন বলেন,‘ এমনিতেই রাজধানীতে পাবলিক পরিবহনের সঙ্কট তার উপর সঠিক ভাড়া বাস্তবায়ন করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত নামায় বাসের সংখ্যা কমে গেছে। সে কারণে বাধ্য হয়েই এসকল যানবাহনে উঠি।

বাংলাদেশ সময়: ২২৪৫ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad