চট্টগ্রাম: অনিয়মের অভিযোগে ১৬ বছর আগে বরখাস্ত হওয়া এক শিক্ষা কর্মকর্তাকে চাকরিতে ফিরিয়ে নিতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের(চসিক) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার উপর কয়েকজন কাউন্সিলরের অব্যাহত চাপ সৃষ্টির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এমনকি রোববার দুপুরে সিটি কর্পোরেশনের শিক্ষা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট রেহেনা কবির রানু’র নেতৃত্বে কমপক্ষে ৬ জন কাউন্সিলর ওই শিক্ষা কর্মকর্তাসহ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার(সিইও) দপ্তরে গিয়ে এ ব্যাপারে জোরালোভাবে চাপ দেন।
বরখাস্ত হওয়া ওই শিক্ষা কর্মকর্তা হচ্ছেন মো.শহীদুল্লাহ।
চসিকের সিইও সৈয়দ মনজুর এলাহী বাংলানিউজকে বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘কয়েকজন কাউন্সিলর আমার কাছে এসে শহীদুল্লাহকে চাকরিতে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য একটি উপায় বের করতে বলেন। আমি সরাসরি বলেছি বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। আমি তাকে চাকরিতে ফিরিয়ে নিয়ে প্রতিষ্ঠানের জন্য আত্মঘাতী কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারবনা। ’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অভিজ্ঞতার মিথ্যা সনদ জমা দেওয়ায় শহীদুল্লাহকে ১৯৯৫ সালে বরখাস্ত করেন তৎকালীন মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। এ আদেশের বিরুদ্ধে শহীদুল্লাহ নিম্ন আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত তা অবৈধ ঘোষণা করেন।
পরবর্তীতে সিটি কর্পোরেশন ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। ওই পিটিশন এখনো শুনানির পর্যায়ে আছে।
এর মধ্যে এম মনজুর আলম নির্বাচিত হওয়ার পর শহীদুল্লাহ’র বহিস্কারাদেশের বিষয়টি সিটি কর্পোরেশনের সাধারণ সভায় তোলা হয়।
চসিকের শিক্ষা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ও কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট রেহেনা কবির রানু বাংলানিউজকে বলেন, ‘সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে শহীদুল্লাহকে চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে। কিন্তু কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি মহল চায়না সৎ, ভালো শহীদুল্লাহ পুর্নবহাল হোক। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাও সাধারণ সভার সিদ্ধান্তকে অগ্রাহ্য করতে চাচ্ছেন। ’
এ প্রসঙ্গে সিইও সৈয়দ মনজুর এলাহী বাংলানিউজকে বলেন, ‘সাধারণ সভায় শহীদুল্লাহ’র চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ’
সূত্র জানায়, শিক্ষা কর্মকর্তা পুর্নবহাল নিয়ে সিইও’র সঙ্গে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে কাউন্সিলররা জন্ম নিবন্ধন সনদ নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় তার দেওয়া বক্তব্য নিয়ে তাকে নাজেহাল করারও চেষ্টা করেন।
জানতে পেরে মেয়র এম মনজুর আলম অপর এক কাউন্সিলরের মাধ্যমে তাদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কক্ষ থেকে ডেকে পাঠান। কাউন্সিলররা বের হয়ে গেলে তিনি কার্যালয় ত্যাগ করে চলে যান।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে(চসিক) বর্তমানে নিয়মিত কোন প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা নেই। আইন কর্মকর্তা সরওয়ার-ই-আলম ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বাংলাদে সময়: ২১২০ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১১