ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সিলেটের সুনামপুর-চন্দরপুর সেতুর উদ্বোধন

নাসির উদ্দিন স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৫
সিলেটের সুনামপুর-চন্দরপুর সেতুর উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সিলেট: দেশের অন্য ৭টি সেতুর সঙ্গে সিলেটের সুনামপুর-চন্দরপুর সেতু উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১২টায় গণভবন থেকে সিলেট জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেত‍ু দুটির উদ্বোধন করেন তিনি।



এরই মধ্যে খুললো যোগাযোগের নতুন দোয়ার। সেতু বন্ধন তৈরী হলো কুশিয়ারার এপার-ওপারের মানুষের মধ্যে। স্বপ্ন পূরণ হলো গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারসহ কয়েক উপজেলার মানুষের।

উদ্বোধন ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা প্রথমবার সরকারে আসার পর সারা বাংলাদেশে অনেকগুলো সেতু নির্মাণের কাজ করি। অথচ দুর্ভাগ্যের বিষয় ২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেতুগুলোর কাজ বন্ধ করে দেয়। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রায় ৪৮টি সেতু অবহেলিত হয়ে পড়েছিলো, ২০০৯ সালে আমরা সরকার গঠনের পর সেতুগুলোর সমাপ্ত করার লক্ষ্যে নির্মাণ কাজ শুরু করে শেষ করি। সিলেটের সুনামপুর-চন্দরপুর সেতু এরই একটি। সিলেটের সুনামপুর-চন্দরপুর সেতুটি ‘৯৯ সালের নেওয়া প্রকল্পের একটি।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে দেশের উন্নয়ন হয়। কারণ আমরা জাতির পিতার কথা চিন্তা করি-তিনি দেশটা স্বাধীন করে রেখে গেছেন। সে  লক্ষ্যেই আমরা কাজ করি যাতে মানুষের যাতায়াত সুবিধাজনক হয়।

সিলেট একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিলেট হযরত শাহজালাল ও হযরত শাহপরান (র.) সহ ৩৬০ আউলিয়ার পূণ্যভূমি। এখানে খনিজ সম্পদে ভরপুর। তাই সিলেটকে বিভাগ করে দিয়েছি। এখানে সারকারখানা করে দিয়েছি। যোগাযোগের ক্ষেত্রে  উন্নয়ন করেছি। সিটি করপোরেশন করে দিয়েছি। শিক্ষার দিক থেকেও এগিয়েছে সিলেট।

বিশেষ করে সিলেট-বিয়ানীবাজারবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আশা করি এই সেতুর মাধ্যমে অত্র এলাকার মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটবে।

কনফারেন্সে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, এই অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন। অথচ এই অঞ্চলটি সিলেটের মধ্যে ছিল সবচেয়ে পশ্চাতপদ। গোলাপগঞ্জের সুনামপুর-চন্দরপুর সেতুর মাধ্যমে পূর্ব সিলেটের মানুষ উপকৃত হবেন। সিলেটের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়েছে বিয়ানীবাজার ও মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা ও জুড়ি উপজেলার মানুষের।

তিনি বলেন, শিক্ষার বেলায়ও সিলেট বিভাগ পিছিয়ে ছিল। এখন শিক্ষার দিক দিয়েও সিলেট দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। আর দেশ ডিজিটাল হয়েছে, এর দৃষ্টান্ত আজকের এই ভিডিও কনফারেন্স।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে সেতুর নির্মাণ প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন সড়ক ও জনপথের  (সওজ) অতিরিক্ত সচিব আব্দুল জলিল।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের ৩০৬.৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক নেটওয়ার্কে অন্তর্ভুক্ত সেতুগুলোর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তকরণ প্রকল্পের আওতায় সিলেটের গোলাপগঞ্জে কুশিয়ারা উপর নির্মিত ঢাকাদক্ষিণ-সুনামপুর-চন্দরপুর-বিয়ানীবাজার সড়কে কুশিয়ারা নদীর উপর ২শ’ ৪৯ দশমিক ৩৭ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এই সেতু হওয়ার কারণে বিয়ানীবাজার উপজেলাসহ মৌলভীবাজার জেলার জুড়ি-বড়লেখা অঞ্চলের মানুষ উপকৃত হবেন।

ভিডিও কনফারেন্সে এসময় উপস্থিত ছিলেন- সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার এম. জামাল উদ্দিন আহমেদ, পুলিশ কমিশনার কামরুল আহসান, জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য জেবুন্নেছা হক প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ২০০০ সালের ১৯ জুন চন্দরপুর-সুনামপুর সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন সংসদ সদস্য (বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী) নুরুল ইসলাম নাহিদ। ২০০৪ সালে  তৎকালীন সংসদ সদস্য সৈয়দ মকবুল হোসেন লেচু মিয়া আবারও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে কাজে হাত দেন, চলে বেশ ক’দিন। সেতুর খুঁটি, গার্ডারসহ সিকিভাগ কাজের পর আবার বন্ধ হয়ে যায়। আবারো সরকারের পরিবর্তন ঘটে।
 
২০১৩ সালে ২৭ সেপ্টেম্বরে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এ দুই অঞ্চলের মানুষের কথা চিন্তা করে সেতুর অসমাপ্ত কাজে হাত দেন। দ্রুতগতিতে কাজ চলায় প্রায় দু’বছরে ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। অবশেষে দীর্ঘ প্রতিক্ষিত সিলেটের কুশিয়ারা ওপর নবনির্মিত সেতুর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৫
এনইউ/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।